শিশু জিহাদের মৃত্যু : ক্ষতিপূরণের রায় চেম্বারেও বহাল
রাজধানীর শাহজাহানপুরে ওয়াসার পরিত্যক্ত পাইপে পড়ে শিশু জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেননি চেম্বারজজ আদালত। একই সঙ্গে, ফায়ার সার্ভিস ও রাষ্ট্রপক্ষের রায় স্থগিতের আবেদন আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন আদালত।
এর ফলে শিশু জিহাদের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের রায় বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী মো. আব্দুল হালিম।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে করা আবেদন শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার চেম্বার জজ বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এ আদেশ দেন।
আদালতে ফায়ারসার্ভিস ও রাষ্ট্র পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অন্যদিকে রিটের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জে আই খান পান্না ও ব্যারিস্টার মো. আব্দুল হালিম।
২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর রাজধানীর শাহজাহানপুর রেল কলোনিতে খোলা থাকা কয়েকশ ফুট গভীর একটি নলকূপের পাইপে পড়ে যায় চার বছরের জিহাদ। প্রায় ২৩ ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অভিযানে ক্যামেরা নামিয়েও ফায়ার সার্ভিস কোনো মানুষের ছবি না পাওয়ায় পাইপে জিহাদের অস্তিত্ব থাকা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। এরপর উদ্ধার অভিযান স্থগিতের ঘোষণা দেয় ফায়ার সার্ভিস। এর কয়েক মিনিট পর কয়েকজন তরুণের তৎপরতায় তৈরি করা যন্ত্রে পাইপের নিচ থেকে উঠে আসে অচেতন জিহাদ। হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার পর ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর জিহাদের পরিবারের জন্য ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চেয়ে চিল্ড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম হাইকোর্ট একটি রিট দায়ের করেন।
ওই রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এক রায়ে শিশু জিহাদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার আদেশ দেন হাইকোর্ট। গত ৯ অক্টোবর ওই আদেশের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে ৯০ দিনের মধ্যে জিহাদের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা দিতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে ১০ লাখ টাকা ও ফায়ার সার্ভিস কতৃপক্ষকে ১০ লাখ টাকা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে এ বিষয়ে করা রিটের শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি শিশু জিহাদের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন একই বেঞ্চ।
এছাড়া শিশু জিহাদের মৃত্যুতে ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা, রেলওয়ে ও সিটি কর্পোরেশনের অবহেলা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে সারাদেশে কতোগুলো অরক্ষিত পাইপ, ঢাকনাবিহীন পাইপের গর্ত, ম্যানহোল ও পয়ঃনিস্কাশন পাইপ রয়েছে তার একটি তালিকা তৈরি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তাও জানতে চান আদালত।
এফএইচ/এমএমজেড/আরআইপি