‘মাননীয় আদালত নামটা কিন্তু লিখতে হবে’

জাহাঙ্গীর আলম
জাহাঙ্গীর আলম জাহাঙ্গীর আলম , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:২৫ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে দ্বিতীয়দিনের বক্তব্য দিচ্ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। প্রায় এক ঘণ্টার (১২টা ১৫ মিনিট থেকে ১টা ১০ মিনিট) বক্তব্যের এক পর্যায়ে বিচারককে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘মাননীয় আদালত আপনি জানেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ নানা রকম মামলা বিভিন্ন সময়ে হয়েছে। আমি এখন যে নামটা বলেছি (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সেই নামটা কিন্তু আপনাকে লিখতে হবে।’

তখন বিচারক বলেন, আমি আপনার সব কথাই লিখছি।

এরপর খালেদা জিয়া বলেন, কিন্তু তার (শেখ হাসিনা) পরম সৌভাগ্য কখনো তাকে আমার মতো এমন করে হাজিরা দিতে হয়নি। আমি আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু আমি কখনো আদালতে হাজির না হলে আমার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে খালেদা জিয়া তার অসমাপ্ত বক্তব্য দেন। আদালত সূত্রে খালেদার এই বক্তব্য জানা গেছে।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘মাননীয় আদালত আমার পরিচয় দেশবাসী জানেন। আমি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। দেশের সেনাপ্রধান ছিলেন তিনি।

খালেদা জিয়া বিচারককে উদ্দেশ করে বলেন, ‘মাননীয় আদালত আমি আপনাকে অনুরোধ করব আমার কথাগুলো শুনবেন। আমাকে সময় দেবেন আমার সব কথা বলার জন্য। আমাকে বলতে হবে। না হলে আমার বক্তব্য ও জবাব অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। সে কথাগুলো না লিখলে সবকিছু পরিষ্কার হবে না।’

এরপর খালেদা জিয়া বলেন, ‘মাননীয় আদালত এখন সত্যিকার অর্থে নির্বাচিত কোনো সংসদ ও সরকার নেই। সবকিছু একতরফা ও একদলীয়ভাবে চলছে। বর্তমান সংসদে বেশির ভাগ সদস্য নির্বাচিত হয়নি। প্রশাসনের মাধ্যমে তাদের নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। শতকরা পাঁচজন ভোটারও ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যায়নি।’

শেষে খালেদা জিয়া আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত আমার বেশি বললে সমস্যা হয়। তাই আজকের মতো সময় মঞ্জুর করেন।’

অপরদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি পুরোটাই রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন, এটি আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো বক্তব্য নয়।

এরপর বিচারক খালেদা জিয়ার সময় মঞ্জুর করে পরবর্তী ২ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। এসময় বিচারক বলেন, পরবর্তী তারিখে আপনার (খালেদা) অসমাপ্ত বক্তব্য শেষ করতে হবে।

এছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার সাক্ষীতে পুনরায় জেরা করার জন্যও ২ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত। এদিন বেগম খালেদা জিয়া বেলা ১২টার দিকে আদালতে উপস্থিত হন। ১টা ২০ মিনিটের দিকে তিনি আদালত ত্যাগ করেন।

বেগম খালেদা জিয়ার হাজিরা উপলক্ষে এদিন আদালতে উপস্থিত হন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আওয়াল মিন্টু, জমির উদ্দিন সরকার, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক খান, সানা উল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার, জিয়া উদ্দিন জিয়া, এম হেলাল উদ্দিন হেলালসহ প্রমুখ।

জেএ/জেডএ/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।