সবার সহযোগিতা চেয়েছেন ট্রাইব্যুনালের নতুন চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:১১ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০১৭

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পরিচালনায় রাষ্ট্র ও আসামি উভয়পক্ষের আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন ট্রাইব্যুনালের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম।

রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু ও আসামিপক্ষের আইনজীবী গাজী এইচ এম তামিমসহ উভয়পক্ষের আইনজীবীরা এ সময় ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহণের পর বৃহস্পতিবার সকালে এজলাস কক্ষে বসে মামলা পরিচালনার আগে উপস্থিত আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান। এ সময় ট্রাইব্যুনালের অপর দুই বিচারপতিও উপস্থিত ছিলেন।

প্রসিকিউশন টিমের (চিফ প্রসিকিউটর) প্রধান অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু আদালতকে বলেন, আমরা আপনাদের অভিনন্দন জানাই। ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমরা যে ধরনের সহযোগিতা করেছি, তা অব্যাহত থাকবে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী গাজী এইচ এম তামিম বলেন, আমরা আগে যেমন মামরা পরিচালনায় সহযোগিতা করেছি। এখনও তা অব্যাহত থাকবে এবং আমরা আদালতে ন্যায়-বিচারের প্রত্যাশা করছি।

ট্রাইব্যুনালের এজলাসে আসন গ্রহণ করার পর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন। তার প্রতি সমবেদনা জানান এবং তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন। এরপর তিনি আইনজীবীদের সহযোগিতা চান।

এর আগে বুধবার বিকেলে আইন মন্ত্রণালয় থেকে গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে মো. শাহিনুর ইসলামকে চেয়ারম্যান করে পুনর্গঠন করা হয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

গেজেটে হাইকোর্টের বিচারপতি আমির হোসেন ও অবসর যাওয়ার আগে (ছুটিতে থাকা) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর সাবেক বিশেষ জজ মো. আবু আহমেদ জমাদারকে ট্রাইব্যুনালের সদস্য করা হয়েছে।

চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের মৃত্যুর প্রায় তিন মাস পর নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ পেল মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরসঙ্গে সঙ্গে পুনর্গঠন করা হয়েছে পুরো ট্রাইব্যুনাল। এরপর বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা পরিচালনা করা হয়েছে।

গত ১৩ জুলাই চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হক চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। এরপর ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে অবশিষ্ট ছিলেন বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি সোহরাওয়ারদী । বিচারপতি সোহরাওয়ারদীকে হাইকোর্টে ফেরত পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে হাইকোর্টের বিচারপতি আমির হোসেনকে ট্রাইব্যুনালে নিয়োগে দিয়েছে সরকার। তিন সদস্যের অন্যজনকে নিম্ন আদালত থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

গত ১৫ জুন থেকে অবসরোত্তর ছুটিতে থাকা ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর সাবেক বিশেষ জজ মো. আবু আহমেদ জমাদার নিয়োগ পেলেন।

এখন অন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নিয়োগ পাওয়া তিন বিচারপতিই ছিলেন সাবেক জেলা জজ। বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম জেলা জজ থাকা অবস্থায় ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ পান। বিচারপতি আমির হোসেন গাজীপুরের জেলা জজ থাকা অবস্থায় ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। গত ফেব্রুয়ারিতে স্থায়ী বিচারপতি হন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালের ২৫ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি নিজামুল হককে চেয়ারম্যান, বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ এ কে এম জহির আহমেদকে সদস্য করে গঠন করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

দুইবছর পর ২০১২ সালের ২৩ মার্চ বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ গঠিত হয়। অন্য দুই সদস্য হলেন— হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মো. শাহীনুর ইসলাম।

এফএইচ/একে/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।