রায়ে ত্রুটি দেখাতে পারেননি সাঈদী
মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রিভিউ খারিজ করে দেয়া রায়ের মধ্যে এমন কোনো ভুল-ত্রুটি দেখাতে পারেনি, যার ভিত্তিতে বিষয়টির পুনঃশুনানি করা যেতে পারে। এ কারণেই সাঈদীর রিভিউর রায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে আপিল বিভাগ সঠিক মনে করছেন। তাই সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্র এবং সাঈদীর করা রিভিউ আবেদন খারিজ করা হয়েছে।
রিভিউ খারিজের রায়ে বলা হয়, রিভিউ আবেদনের মধ্যে পুনঃশুনানির কোনো কারণ খুঁজে পায়নি আপিল বিভাগ। এমনকি আবেদনকারীর পক্ষ রায়ের মধ্যে এমন কোনো ভুল বা ত্রুটি দেখাতে পারেনি, যার ভিত্তিতে বিষয়টির পুনঃশুনানি করা যেতে পারে। এ কারণেই সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে আপিলের দেয়া রায় সঠিক মনে করছেন এবং রিভিউ আবেদনটি খারিজ করা হয়েছে।
সাঈদীর রিভিউ খারিজ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেয়া সাত পৃষ্ঠার রায় প্রকাশ করা হয়। এরপর সুপ্রিম কোর্ট থেকে বিচারিক আদালতে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে) রায়ের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।
গত ১৫ মে সাঈদীর ফাঁসি চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ এবং সাজা থেকে খালাস চেয়ে পুনঃবিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের ওপর শুনানি শেষে দুটি আবেদনই খারিজ করে এ রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
ফলে আপিল বিভাগের দেয়া দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ডই বহাল থাকে। এখন স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত কারাগারেই কাটাতে হবে সাঈদীকে।
রাষ্ট্র ও আসামি উভয় পক্ষের করা রিভিউ শুনানি শেষে ১৫ জুলাই প্রধান বিচারপতি সুরন্দ্রে কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ রায় দেন।
বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি আব্দুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।
সম্প্রতি আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট বিচারপতিদের স্বাক্ষরের পর কোর্টের শাখা থেকে সাত পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়। রায় প্রকাশের পর কপি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও পৌঁছানো হয়েছে। তবে যেহেতু আপিল বিভাগের রায় চূড়ান্তভাবে বহাল রয়েছে, সে কারণে এ রায়ের কপি কারাগারে পাঠানোর প্রয়োজন নেই বলে জাগো নিউজকে জানান ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার ও জেলা জজ মো. সেলিম মিয়া।
ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মো. সেলিম মিয়া সাঈদীর রিভিউর রায়ের কপি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রায়ের কপি মঙ্গলবার পেয়েছি। এর আগে গত ২৯ আগস্ট রিভিউ রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ হয়।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী ও জেয়াদ আল মালুম বলেন, রিভিউয়ের রায় আমরা পেয়েছি।
উল্লেখ্য, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। এরপর সাঈদী আপিল করলে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রায় দেন। তাতে সাজা কমে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়।
২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ হলে রিভিউ করে রাষ্ট্রপক্ষ। এর পাঁচদিনের মাথায় খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন করেন সাঈদী।
এফএইচ/এএইচ/জেআইএম