২৮ শিশুর মৃত্যু : ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তা বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:২১ এএম, ২৪ আগস্ট ২০১৭

অযোগ্যতা ও অদক্ষতার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের দুই কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মো. আলতাফ হোসেন ও সহকারী পরিচালক মো. শফিকুল ইসলামকে বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অদক্ষতা ও অযোগ্যতার বিষয়টি উঠে আসায় অবশেষে ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে হাইকোর্টকে অবহিত করেন স্বাস্থ্য ও সেবা বিভাগের সচিব সিরাজুল হক খান।

পরে স্বাস্থ্য সচিবকে অব্যাহতি দিয়ে আদেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ।

বৃহস্পতিবার আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। সচিবের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী।

গত ২১ আগস্ট স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবকে তলব করেন হাইকোর্ট। সেই অনুসারে বুধবার হাজির হন সচিব। ওইদিন যথাযথ ব্যাখ্যা না দেয়ায় ফের সচিবকে তলব করা হয়। বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেন সচিব।

মনজিল মোরসেদ বলেন, রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় আদালতের রায়ে ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে অবহেলার বিষয়টি উঠে আসার পর তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানতে চান হাইকোর্ট।

স্বাস্থ্য সচিবের পক্ষে গত সোমবার একটি প্রতিবেদন দেয়া হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই দুই কর্মকর্তাকে সতর্ক করা হয়েছে। অথচ আদালত জানতে চেয়েছিল কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ব্যবস্থা না নেয়ায় ব্যাখ্যা দিতে স্বাস্থ্য সচিবকে ২৩ আগস্ট তলব করেন হাইকোর্ট। ওই দুই কর্মকর্তা হলেন ওষুধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম ও উপ-পরিচালক আলতাফ হোসেন।

বৃহস্পতিবার নির্ধারিত দিনে আবার সচিব হাজির হয়ে ওষুধ প্রশাসনের ওই দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার বিষয়টি অ্যাফিডেভিট আকারে আদালতে দাখিল করেন সচিবের আইনজীবী। পরে আদালত সচিবকে অব্যাহতির আদেশ দেন।

২০০৯ সালে রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে সারাদেশে অনেক শিশু মারা যায়। ওই ঘটনায় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পক্ষ থেকে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলার বিচার শেষে গত বছরের ২৮ নভেম্বর পাঁচজনকে খালাস দেন বিচারিক আদালত।

ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারিক আদালত বলেছিলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর মামলাটি করার ক্ষেত্রে ১৯৪০ সালের ড্রাগ আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করেনি। মামলায় যথাযথভাবে আলামত জব্দ করা, তা রাসায়নিক পরীক্ষাগারে প্রেরণ এবং রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন আসামিদের দেয়া হয়নি। এক্ষেত্রে ড্রাগ আইনের ২৩, ২৫ ধারা প্রতিপালন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে তৎকালীন ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন চরম অবহেলা, অযোগ্যতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

এফএইচ/এমএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।