‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পাকিস্তান ও জিয়ার কনসেপ্ট’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:০৩ পিএম, ০১ আগস্ট ২০১৭
ফাইল ছবি

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল কনসেপ্টটি (ধারণা) হলো সেনাশাসক, পাকিস্তানের ও জিয়াউর রহমানের। কাজেই এটি পুনঃস্থাপনে আমি ব্যথিত।’

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।

তিনি বলেন, সার্বিক কমেন্টস করতে হলে পুরো রায়টা পড়ে কমেন্টস করতে হবে। তবে আমার একটি দুঃখ রয়ে গেছে। সেই দুঃখ হলো সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদটি সংযুক্ত হয়েছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে। টোটাল (পুরো) বিষয়টি দাঁড়ালো যে, মার্শাল আমলে সংবিধানের ৯৬ ধারা সংশোধন করে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের যে বিধান অন্তর্ভুক্ত করে সংশোধন করা হয়েছিল সেটিকে পুনঃস্থাপন করা হলো।

মাহবুবে আলম বলেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। হাইকোর্ট শুনানি করে অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে আমরা আপিল করেছিলাম। আপিলের শুনানি হয়েছে। পরে রায় ঘোষণা করা হয়েছিল। আজকে আমরা ওয়েবসাইটে পুরো রায়ের কপি পেয়েছি।

তিনি বলেন, এ রায়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সবাই ঐকমত্য হয়েছেন। আলাদা কেউ রায় দেননি। রায়ের শেষ অংশে যেটা বলা হয়েছে, সেটা হলো সর্বসম্মতিক্রমে আপিলটিকে ডিসমিস। সংবিধানের ৯৬-এর (২) থেকে (৭) অনুচ্ছেদ পর্যন্ত পুনঃস্থাপন করেছেন। রায়ে বিচারপতিদের কোড অব কনডাক্ট সম্পর্কে যে বিস্তারিত বর্ণনা আছে তার সঙ্গেও তারা একমত হয়েছেন। অর্থাৎ প্রধান বিচারপতি রায়ের এক জায়গায় সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ সম্পর্কে বলেছেন, এটি সংবিধান পরিপন্থী। কিন্তু রায়ের শেষাংশে যেখানে সবাই একমত হয়েছেন সেখানে এটি পেলাম না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রায়ের ভেতরে যাই বলা থাকুক না কেন রায়ের সমাপনীতে কী বলা আছে সেটি দেখতে হবে। অর্ডার অব দ্য কোর্ট কোনটা সেখানে কিন্তু ১১৬ সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আমি বলব এটি একজন জাজের অভিমত হতে পারে কিন্তু যেহেতু রায়ের শেষাংশে যেটাকে অর্ডার অব দ্য কোর্ট আমরা বলি সেখানে ১১৬ সম্পর্কে বলা হয়নি। তাহলে ১১৬ বাতিল হয়েছে বলে ধরা যায় না। ১১৬ ধারাকে যদি বাতিল করতে হতো তাহলে সকলকেই সেখানে সই করতে হতো। অর্ডার অব দ্য কোর্ড তাই হতো।

তিনি বলেন, এখন ওনারা রেস্টর করেছেন। কিন্তু আমার বক্তব্য হলো সংবিধানের যেকোনো ধারা, যেটা সংশোধন করা, বাদ দেয়া সবটাই সংসদের ব্যাপার। কোর্ট যদি নিজেই রেস্টর (পুনঃস্থাপন) করে দেন তাহলে সংসদের থাকার কোনো দরকার হয় না। তাই না? আমার কথা হলো যেকোনো সংশোধনকে আদালত অবৈধ ঘোষণা করতে পারেন। কিন্তু সংবিধানের কোনো ধারা পুনঃস্থাপন বা রেস্টর করা আমার বিবেচনায় এটি সংসদের কাজ।

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল কার্যকর করতে এখন আইন করতে হবে কি না বা আইন না করলে এটি কার্যকর হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে বলা কঠিন ব্যাপার। এটি নিয়ে এ মুহূর্তে কোনো কমেন্টস (মন্তব্য) আমি করব না।

এ রায়ের রিভিউ করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এটি সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।

বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা অবসরের আগে নাকি পরে রায়ে স্বাক্ষর করেছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি আমি বলতে পারব না। এটি প্রধান বিচারপতি বলতে পারবেন। অবসরের পর স্বাক্ষরের বিষয়টি আমাদের বহুদিনের ট্র্যাডিশন। অবসরের পর সই করতে পারবেন না এ মর্মে বর্তমান প্রধান বিচারপতিই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

এফএইচ/জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।