মৌজ মাস্তি করে দিন কাটায় তারা


প্রকাশিত: ০৮:৪৪ এএম, ০৬ জুলাই ২০১৭

রাজধানীর বনানীতে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত বাহাউদ্দিন ইভান বড় লোক বাবার বেকার ছেলে। সবার বড় তিনি। পড়াশোনার পাট চুকিয়েছেন অনেক আগেই। বাবার ব্যবসায়েও মন নেই। টাকার অভাব না থাকায় ‘খায়-দায় ঘুরে বেড়ায়, মৌজ মাস্তি করে দিন কাটায়’ অবস্থা যেন তার।

এ কারণে বাবা-মাসহ পরিবারের সকলেই তার ওপর নাখোশ। ধর্ষণের মামলা দায়েরের পর যখন বনানী থানা পুলিশ তদন্তে সেই বাড়িতে যায় তখন পরিবারের সদস্যরা ওই ঘটনায় লজ্জিত ও দুঃখ প্রকাশ করেন।

তারা পুলিশকে বলেন, ওই তরুণী মামলা না করলেও তারাই ছেলেকে ডেকে পুলিশে ধরিয়ে দিতেন।

বনানীর অভিযুক্ত ধর্ষণের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে ঠিক এভাবে অভিমত ব্যক্ত করেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার রাতে বনানীর ২ নম্বর রোডের ৫/এ নম্বরের ন্যাম ভিলেজের বাড়িতে যখন ওই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয় তখন বাড়িতে ইভানের বাবা-মা উপস্থিত ছিলেন। তখন তারা ঘুমিয়ে ছিলেন। মামলার এজাহারে বর্ণিত তথ্য-উপাত্ত খতিয়ে দেখে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

বাদীর দেয়া তথ্য মতে, ঘটনার দিন ইভান তার মায়ের পরিচয় দিয়ে ওই তরুণীর সঙ্গে একজনকে কথা বলিয়ে দেন। ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ওই মহিলাই তরুণীকে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আসার দাওয়াত করেছিলেন।

ইভানের কললিস্ট দেখে সেদিন কে কথা বলেছিলেন তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে কেন ওই তরুণী একাধিক সেট পোশাক নিয়েছিলেন- সেটিও খতিয়ে দেখছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

bonani

তরুণীর বক্তব্য অনুযায়ী, সেই রাতে বাসায় গিয়ে তিনি কোনো ধরনের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের আলামত দেখতে পাননি। ভয়ে বাড়ি ফিরতে চাইলে ইভান তাকে বাড়ি ফিরতে দেননি। তারপর তারা রাতের খাবার খান এবং ইভান তাকে জোর করে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়ান। সেটি খেতে অস্বীকৃতি জানালে ইভান তাকে বলে, একদিন খেলে কিছু হবে না। এরপর রাত দেড়টার দিকে ইভান ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করেন।

‘ধর্ষণের সময় আমি চিৎকার-চেঁচামেচি করতে থাকলে রাত সাড়ে ৩টার দিকে তার সঙ্গে থাকা ব্যাগটি রেখে বাড়ি থেকে বের করে দেয় ইভান। পরে এক পথচারীর সাহায্যে নিজ বাসায় ফিরে আসি।’

তরুণীর দাবি, সেই রাতে ইভান যে ব্যাগটি রেখে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় সেটিতে তিনটি ড্রেস, দুটি জিন্সপ্যান্ট, একটি কুর্তা, তিনটি মোবাইল চার্জার, সিমকার্ড, মেমোরি কার্ড এবং নগদ ১৫ হাজার টাকা ছিল।

মামলাটির অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা বনানী থানার সাব ইন্সপেক্টর সুলতানা আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, ইতোমধ্যে মামলার তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আসামি এখনও পলাতক। তার বাড়িতে গিয়ে বাবা-মার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। আজ ভিকটিম তরুনীর মেডিকো লিগ্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হবে।

আসামিকে গ্রেফতারে জোর চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, এর আগেও জন্মদিনের দাওয়াতে যোগ দিতে গিয়ে বনানীতে দুই তরুণী ধর্ষণের শিকার হন। গত ২৮ মার্চ দ্য রেইন ট্রি হোটেলের ওই ঘটনায় ৬ মে বনানী থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ধর্ষণ মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে শাফাত আহমেদ, শাফাতের বন্ধু নাঈম আশরাফ ওরফে আবদুল হালিমসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়।

বর্তমানে মামলাটি নিম্ন আদালতে বিচারাধীন এবং সকল আসামি কারাগারে রয়েছেন।

এমইউ/এমএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।