সাদমান ও নাঈমের জামিন নামঞ্জুর


প্রকাশিত: ০৬:৩৯ এএম, ০৫ জুন ২০১৭

রাজধানীর বনানীতে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার সাদমান সাকিফ ও নাঈম আশরাফের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার তাদের আইনজীবীরা ঢাকা মহানগর হাকিম মাজহারুল হকের আদালতে জামিন আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে তা নামঞ্জুর করেন।

গত ৬ মে বনানী থানায় পাঁচজনকে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা করেন ধর্ষণের শিকার হওয়া একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, এক পরিচিত ব্যক্তির জন্মদিনের পার্টিতে অংশ নিতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন তারা। বনানীর দ্য রেইন ট্রি হোটেলের দুটি কক্ষে আটকে রেখে তাদের ধর্ষণ করা হয়।

মামলার পাঁচ আসামি হলেন- শাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, শাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও তার দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ।

এর আগে, গ্রেফতার শাফাত আহমেদকে ৬ দিনের এবং সাদমান সাকিফকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

অন্যদিকে, মামলার অন্যতম আসামি নাঈম আশরাফের বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে তিনিও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এরও আগে, আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে দুই ছাত্রী জানান, গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে তাদের নেয়া হয়। শাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডের দ্য রেইন ট্রি হোটেলে নিয়ে যান। জবানবন্দিতে তারা বলেন, হোটেলে যাওয়ার আগে দু’জনই জানতেন না সেখানে পার্টি হবে। এ সময় তাদের সঙ্গে শাহরিয়ার নামের এক বন্ধু ছিলেন। তাদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। হোটেলে যাওয়ার পর সাফাত ও নাঈমের সঙ্গে তারা আরও দুই তরুণীকে দেখেন। সেখানে তারা ভদ্র কোনো লোককে দেখেননি। পরিবেশ ভালো না লাগায় শাহরিয়ারসহ দুই তরুণী চলে আসতে চেয়েছিলেন। তখন আসামিরা শাহরিয়ারের কাছ থেকে গাড়ির চাবি নিয়ে নেন এবং শাহরিয়ারকে মারধর করেন। এরপর দুই তরুণীকে অস্ত্রের মুখে একটি কক্ষে নিয়ে যান। ধর্ষণ করার সময় শাফাত গাড়িচালককে ভিডিও চিত্র ধারণ করতে বলেন। আর নাঈম আশরাফ মারধর করেন। তারা এ ঘটনা জানিয়ে দেবেন বলে জানান। এরপর আসামি শাফাত তার দেহরক্ষীকে ওই দুই তরুণীর বাসায় পাঠান তথ্য সংগ্রহের জন্য। তারা এতে ভয় পেয়ে যান। লোকলজ্জার ভয় এবং মানসিকভাবে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন।

আসামিরা ভিডিও চিত্র বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেন। তাদের কথামতো না চললে কিংবা ২৮ মার্চের ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেন। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রথমে থানা-পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকার করে। আসামি ও আসামির পরিবার ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার ৪০ দিন পর ভুক্তভোগী ওই দুই ছাত্রী গত ৬ মে সন্ধ্যায় বনানী থানায় ধর্ষণের অভিযোগে পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।

মামলার এক আসামি শাফাত আহমেদ, যার বাবা আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ।

জেএ/এমএআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।