জনগণের অধিকার সুরক্ষায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা দরকার


প্রকাশিত: ০২:৪৭ পিএম, ২৯ মে ২০১৭

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, বিচারকদের নিজস্ব প্রয়োজনে নয় জনগণের অধিকার সুরক্ষার জন্য প্রয়োজন।বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে করা আপিলের শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিজের মতামত তুলে ধরার সময় এই মতামত দিয়েছেন সিনিয়র আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এএফএম হাসান আরিফ।

আদালতে সংবিধানের ১৬তম সংশোধনীর বিপক্ষে মতামত পেশ করে তিনি বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্নে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোতে পরিবর্তন আনার কোনো সুযোগ নেই।ষোড়শ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল শুনানিতে আদালত-বন্ধু(অ্যামিকাস কিউরি) হিসেবে নিজের বক্তব্য উপস্থাপন করে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন এএফ হাসান আরিফ।

সোমবার ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে শুনানির নবম দিনে আদালত-বন্ধু হিসেবে বক্তব্য পেশ করেন এম আই ফারুকী, ওয়াদুদ ভূইয়া ও এএফ হাসান আরিফ ও ড. কামাল হোসেন। এরপর আজমালুল হোসেন কিউসির আংশিক বক্তব্যের উপস্থাপন করার পর মামলার কার্যক্রম মঙ্গলবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়।

আমার সিন অব সিন্স ছিল, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, ইন্ডিপেন্ডেন্ট অব জুডিশিয়ারি। এটা বিচারকদের নিজস্ব প্রয়োজনে নয়, এটা জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, এর আগে আনোয়ার হোসেনের মামলায় এই সুপ্রিম কোর্ট বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বাংলাদেশের সংবিধানের একটি অপরিহার্য অংশ অর্থাৎ বেসিক স্ট্রাকচার বলে রায় দিয়েছেন। পরেও আরও দু একটি রায়ে ইন্ডিপেন্ডেন্ট অব জুডিশিয়ারিকে সংবিধানের বেসিক স্ট্রাকচার বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের আশেপাশের দেশে বিশেষ করে ভারতে এ ধরনের আরও অনেক রায় হয়েছে, যেখানে ইন্ডিপেন্ডেন্ট অব জুডিশিয়ারিকে বেসিক স্ট্রাকচার, সংবিধানের বেসিক পিলার বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষায় বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকবে। সংসদ বা নির্বাহী বিভাগের চাপে পড়ে যেন জনগণের অধিকার ক্ষুণ্ন না হয়, সেভাবে যেন বিচার করতে পারে।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। কারণ এর মাধ্যমে বিচার বিভাগকে সংসদের কাছে জবাবদিহিতা দিতে হয়। মনে রাখতে হবে সংসদ এবং সরকার এক। যেহেতু একই সদস্য দিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়।

তিনি বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল যেটা সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদের ক্ষমতা নিয়ে নেয়া হয়েছিল, চতুর্থ সংশোধনীতে ইমপিচমেন্টের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির কাছে দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট জুডিশিয়াল কাউন্সিল আনা হয়েছিল। পরবর্তীকালে অষ্টম সংশোধনী মামলায় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বহাল রাখা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় পঞ্চদশ সংশোধনীতেও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বহাল রাখা হয়।

তিনি বলেন, দুই বার আদালতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এ ব্যবস্থা। তাই এটা সংশোধন করার এখতিয়ার সরকারের নেই। তিনি বলেন, সেপারেশন অব পাওয়ার অর্থাৎ তিনটি অর্গানের ভিন্ন ভিন্ন এরিয়া, এখতিয়ার, বিষয়বস্তু সুনিদিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। বিচার বিভাগের জন্য যে এরিয়া সুনিদিষ্ট করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, যেটা আগে বলেছিলাম বিচার বিভাগের স্বাধীনতা টা বিচারকদের প্রয়োজনে নয় জনগণের অধিকার সুরক্ষার জন্য প্রয়োজন।

এফএইচ/ওআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।