সাত খুন মামলার শুনানির জন্য বেঞ্চ নির্ধারণ


প্রকাশিত: ০৮:৫৯ এএম, ১৭ মে ২০১৭

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য বেঞ্চ নির্ধারণ করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা।

হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (বিচার ও প্রশাসন) মো. সাব্বির ফয়েজ এ তথ্য জানিয়েছেন।  বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়ে একটি আদেশ জারি করেছে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন।

সাব্বির ফয়েজ সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান বিচারপতি বুধবার এ বেঞ্চ নির্ধারণ করে দিয়েছেন।

এর আগে মঙ্গলবার (১৬ মে) এ দুই মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ৫ আসামির পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে আইনজীবী নিয়োগের নির্দেশ দেন হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ।

গত ২২ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে সাত খুন মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে।  পরে মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করে আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হয়।

গত ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুনের মামলায় সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র্যা বের সাবেক কর্মকর্তা লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদসহ ২৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।

বাকি ৯ আসামির সবাইকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন ।

সাজাপ্রাপ্ত ২৫ জন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনী থেকে প্রেষণে র্যা বে কর্মরত ছিলেন। অপরাধের সময় তারা সবাই র্যা ব-১১ তে কর্মরত ছিলেন। সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১১ জন সেনাবাহিনীর, ২ জন নৌবাহিনীর, ৩ জন বিজিবির, ৭ জন পুলিশ ও ২ জন আনসার সদস্য।

সাত খুনের মামলার পর তাদের নিজ নিজ বাহিনী থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেন, র্যা ব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সাবেক দুই কোম্পানি কমান্ডার মেজর (অব.) আরিফ হোসেন, লে. কমান্ডার এম মাসুদ রানা, হাবিলদার মো. এমদাদুল হক, এ বি মো. আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হিরা মিয়া, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহি আবু তৈয়ব আলী, কনস্টেবল মো. শিহাব উদ্দিন, এসআই পুর্ণেন্দু বালা, সৈনিক আসাদুজ্জামান নুর, সৈনিক আবদুল আলিম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুনশি, সৈনিক আল আমিন, সৈনিক তাজুল ইসলাম, সার্জেন্ট এনামুল কবির, নূর হোসেনের সহযোগী আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দিপু, রহম আলী, আবুল বাশার, মোর্তুজা জামান চার্চিল, সেলিম, সানাউল্লাহ সানা, শাহজাহান  ও জামাল সর্দার।

১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে-ল্যান্স কর্পোরাল রুহুল আমিন, এএসআই বজলুর রহমান, সৈনিক নুরুজ্জামান, কনস্টেবল বাবুল হাসান, এএসআই আবুল কালাম আজাদ, এএসআই কামাল হোসেন ও কর্পোরাল মোখলেছুর রহমানকে।

আর কনস্টেবল হাবিবুর রহমান, হাবিলদার নাসির উদ্দিনকে সাত বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন আদালত। মোখলেছুরকে অপহরণে যুক্ত থাকার দায়ে ১০ বছর ছাড়াও আলামত অপসারণে যুক্ত থাকার দায়ে আরও সাত বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।

আলোচিত সাত খুন মামলায় ২৬ আসামিকে ১৬ জানুয়ারি মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। মামলার ৩৫ আসামির মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন ২৩ জন।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ, পরদিন মেলে আরেকটি লাশ।

বাকি নিহতরা হলেন- নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম।

এফএইচ/এমএমএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।