নারী-শিশু নির্যাতন মামলা নিষ্পত্তিতে মনিটরিং সেল গঠনের নির্দেশ


প্রকাশিত: ১২:২৫ পিএম, ১১ মে ২০১৭

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি না হলে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মনিটরিং সেল গঠনের নির্দেশ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসান স্বাক্ষরিত ১০ পৃষ্ঠার রায় বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়। রায়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে এ সেল গঠন করতে বলা হয়েছে। গঠিত ওই সেলের প্রধান হিসেবে রেজিস্ট্রার জেনারেল নিজেও থাকতে পারেন। যদি তিনি না থাকেন তাহলে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে ওই সেলের প্রধান করতে বলা হয়েছে।

এছাড়া মনিটরিং সেলে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব অথবা তাদের দুজন প্রতিনিধি রাখতে বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের ওই দুজন প্রতিনিধি অতিরিক্ত সচিব পর্যাদার নিচে হবে না বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মিলাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানায় একটি মামলা হয়। ঘটনার দিনই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। ওই বছরের শেষের দিকে মামলাটি চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ বিচারের জন্য যায়। চলতি বছরের ২১ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। অভিযোগ গঠনের পর সাত মাসেও কোনো সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু আইনানুযায়ী মামলাটি ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি না হওয়ায় আসামির জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবী কুমার দেবলু দে।

গত ১ নভেম্বর ওই জামিন আবেদনের শুনানিকালে আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়। এরপর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি না হলে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান প্রতিপালন করতে মনিটরিং সেল গঠনের নির্দেশ দিয়ে এ রায় দেন আদালত। রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি বৃহস্পতিবার (১১ মে) প্রকাশ হয়।

হাইকোর্টে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার ওই মামলার আইনজীবী কুমার দেবুল দে জানান, রায় বাস্তবায়ন হলে নারী ও শিশু নির্যাতান দমন আইনে বিচারাধীন মামলা দ্রুত নিস্পত্তি হবে। এ রায় সময়োপযোগী।

তিনি আরও বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির বিধান রয়েছে। তবে এ সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না হলে কেন হয়নি তার কারণ উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারককে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টে প্রেরণের বিধান রয়েছে। একই সঙ্গে মামলার পাবলিক প্রসিকিউটর ও তদন্তকারী কর্মকর্তাকেও অনুরূপ প্রতিবেদন সরকারের নিকট দাখিলের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু বিচারক, পিপি ও তদন্তকারী কর্মকতা কেউই এই বিধান যথাযথভাবে পালন করছে না। বিধানটি যথাযথভাবে পালনের লক্ষ্যে মনিটরিং সেল গঠনের নির্দেশ দিলেন হাইকোর্ট।

প্রকাশিত রায়ে বলা হয়েছে, মনিটরিং সেল ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি না হওয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলার বিষয়ে বিচারক, পাবলিক প্রসিকিউটর ও তদন্তকারী কর্মকর্তার পাঠানো প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে অধস্তন আদালত সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের কমিটির কাছে একটি প্রতিবেদন দাখিল করবেন। ওই প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করে কমিটি এ ধরনের মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার জন্য দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৩১(ক)(৩) ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশ দেবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

এফএইচ/জেডএ/এএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।