মওদুদের বিরুদ্ধে নাইকো মামলা চলবে


প্রকাশিত: ০৮:৩৩ এএম, ১২ এপ্রিল ২০১৭

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। 

আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জাগো নিউজকে বলেন, রুল খারিজ হওয়ায় মওদুদের ক্ষেত্রে নাইকো দুর্নীতি মামলাটি চলতে কোনো বাধা নেই।

বুধবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছেন। আদালতে মওদুদ আহমদের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

এর আগে গত ৪ জানুয়ারি মওদুদ আহমদের নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম স্থগিত নিয়ে জারি করা রুল শুনতে এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিব্রতবোধ করেছিলেন।

নিয়মানুযায়ী, বিষয়টি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার কাছে গেলে তিনি রুলটি শুনানির জন্য এই বেঞ্চে পাঠান।

গত বছরের ১ ডিসেম্বর মওদুদের নাইকো মামলার কার্যক্রম ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। তার করা এক ফৌজদারি রিভিশন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি শেখ আব্দুল আউয়াল ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন।

পরে মওদুদের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, নাইকোর সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি নাইকো-বাপেক্স ও পেট্রোবাংলার মধ্যে ওয়াশিংটনের সালিশি আদালতে দুর্নীতির বিষয়টি বিচারাধীন রয়েছে। চলতি বছরের ১৯ জুলাই সেখানের সালিশি আদালতে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের আদালতে এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বলে।

দেশের বাইরের আদালতে মামলা চলমান থাকায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন মামলাটি স্থগিত চান মওদুদ। নিম্ন আদালত গত বছরের ১৬ আগস্ট মওদুদের সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন। সেই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ফৌজদারি রিভিশন আবেদন করেন তিনি। আবেদনে ওয়াশিংটনের সালিশি আদালতের আদেশের কপি হাইকোর্টে তলবের আবেদনও করা হয়।

সেই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট মওদুদের মামলার কার্যক্রম ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছিলেন। একইসঙ্গে নিম্ন আদালতে তার আবেদন খারিজ করে দেয়ার আদেশটি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।

পরে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে দুদক গত বছরের ৭ ডিসেম্বর লিভ টু আপিল করলে আপিল বিভাগ চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারির মধ্যে রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন।

মামলার বিবরণীতে জানা যায়, কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন। ২০০৮ সালের ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। যেখানে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।

এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্স্’র সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

এফএইচ/জেডএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।