ট্যানারি বর্জ্য দিয়ে মাছ-মুরগির খাদ্য তৈরি নয়


প্রকাশিত: ০৫:৩৩ এএম, ০৯ এপ্রিল ২০১৭

মাছ ও পোল্ট্রিসহ পশুর খাবার তৈরিতে ট্যানারি বর্জ্য ব্যবহার বন্ধে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টর আপিল বিভাগ।

শিল্প মালিকদের করা আপিল পুনর্বহালের (আপিল ফর রেস্টোরেশন) আবেদন খারিজ করে দেন আদালত। ফলে এখন  থেকে মাছ ও পোল্ট্রিসহ পশুর খাবার তৈরিতে ট্যানারি বর্জ্য ব্যবহার করা যাবে না।

রোববার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। অপরদিকে ট্যানারি মালিকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপস।

এর আগে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টের এ সংক্রান্ত রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল খারিজ হয়ে যায়। পরে  তার বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আরেকটি আবেদন করা হয়। রোববার ওই আবেদনও খারিজ হয়ে যায়।

২০১০ সালের ২৪ জুলাই ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে ‘বিষাক্ত মুরগির খাদ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকি/মাছ উৎপাদনেও ব্যবহার হচ্ছে ট্যানারি বর্জ্য’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরদিন দৈনিক যুগান্তরে ‘আলোচনা সভায় বিল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন নেতারা, ট্যানারি বর্জ্য মিশিয়ে পোল্ট্রি ফিড প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এখনই বন্ধ করতে হবে’ শিরোনামে আরেকটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

পরে পত্রিকায় প্রকাশিত এসব প্রতিবেদন যুক্ত করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে একটি রিট করা হয়। আবেদনে বলা হয়, ট্যানারি বর্জ্য ব্যবহার করে তৈরি করা খাদ্য মুরগি ও মাছ উভয়ের জন্যই অস্বাস্থ্যকর। এসব অস্বাস্থ্যকর খাদ্য দিয়ে চাষ করা মুরগি ও মাছ খেলে মানুষের জন্যও মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ২৬ জুলাই ট্যানারি বর্জ্য দিয়ে মাছ ও পোল্ট্রি খাবার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। এরপর ২০১১ সালের ২১ জুলাই বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে তৎকালীন একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ এক মাসের মধ্যে বর্জ্যকে মাছ-মুরগির খাবার তৈরির কারখানা বন্ধের নির্দেশ দেন।

২০১১ সালের ২১ জুলাই রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রায়ে ট্যানারি বর্জ্য ব্যবহার করে মৎস্য ও পোল্ট্রি খাবার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বন্ধে শিল্প সচিব, বাণিজ্য সচিব, খাদ্য সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব ও পুলিশ মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে মৎস্য ও পশু খাদ্য আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশও দিয়েছিলেন আদালত।

হাইকোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ফিশ মিট ও অ্যানিমেল গ্লু প্রস্তুতকারক বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারওয়ার লিভ টু আপিল করেন।

সেই লিভ টু আপিল গত ৭ ডিসেম্বর খারিজ করে দেয় আদালত। ওই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আনা একটি আবেদনও রোববার নাকচ করে দেন আপিল বিভাগ।

এফএইচ/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।