পিলখানা ট্র্যাজেডি : রাষ্ট্রপক্ষের আরও তিন আপিল


প্রকাশিত: ০২:২৭ পিএম, ০৬ এপ্রিল ২০১৭

পিলখানায় আলোচিত বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সেনা কর্মকর্তা হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আরও তিনটি আপিল আবেদন করেছে। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ তিনটি আপিল আবেদন করা হয়।

পিলখানা হত্যাযজ্ঞের মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ১৫৮ জনের সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে আপিল ছাড়াও বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড পাওয়া আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে একটি এবং খালাসপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে আরেকটি আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। চলতি সপ্তাহে এ তিনটি আপিল আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

রাষ্ট্রপক্ষের আপিল আবেদন দাখিল করার বিষয়ে সতত্য নিশ্চিত করেছেন প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কেএম জাহিদ সারওয়ার কাজল বলেন, ২৭৭ জন আসামি বিচারিক আদালতে খালাস পান। তাদের মধ্যে ৬৯ জনের খালাসের বিরুদ্ধে আগেই রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে, যার শুনানি অব্যাহত। খালাসপ্রাপ্ত অন্যদের মধ্যে যারা বিডিআর সদস্য ছিলেন, তাদের ক্ষেত্রে একটি আপিল করা হয়েছে।

এছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ২৫৬ জনের মধ্যে যারা বিডিআর সদস্য ছিলেন তাদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে একটি এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ১৫৮ জনের সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে আরেকটি আপিল করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সূত্র জানায়, পৃথক এ তিনটি আপিল শুনানির জন্য হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চে পাঠাতে প্রধান বিচারপতির কাছে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। একইসঙ্গে ১০৩৬ দিন বিলম্ব মার্জনার আবেদনও রয়েছে।

এ মামলায় কারাবন্দি আসামিদের করা ডেথ রেফারেন্স, ফৌজদারি আপিল ও রাষ্ট্রপক্ষে করা একটি আপিলের ওপর হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে শুনানি শুরু হয়। যা হাইকোর্টের বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিশেষ (বৃহত্তর) বেঞ্চে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে শুনানি চলছে। বিশেষ বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার। ইতোমধ্যে উভয়পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনও শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। এ অবস্থায় রাষ্ট্রপক্ষ নতুন করে তিনটি আপিল দাখিল করা হলো।

তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে ডেথ রেফারেন্স, আসামিপক্ষের আপিল এবং রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের ওপর শুনানি চলছে। এ মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন প্রায় শেষ পর্যায়ে। মামলার ঘটনা নিয়ে যুক্তি উপস্থাপনের পর আইনগত বিষয় নিয়েও যুক্তি উপস্থাপিত হয়েছে। এখন যুক্তি খন্ডনও শেষ পর্যায়ে।

তিনি বলেন, আদালত ওই ঘটনার ভিডিও চিত্র দেখছেন দু’দিন ধরে। এ অবস্থায় রাষ্ট্রপক্ষ নতুন আপিল দাখিল করেছে বলে শুনেছি। মামলার বিচার শেষ পর্যায়ে এসে রাষ্ট্রপক্ষে আপিল করা নজিরবিহীন। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিচার বিলম্বিত করা এবং এ মামলায় হাইকোর্টের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের দুর্বলতা (ত্রুটি-বিচ্যুতি) পূরণ জন্য নতুন করে এ আপিল।

তিনি আরও বলেন, নিন্ম আদালত খালাস দিয়েছে এমন ৬৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ একটি আপিল (আপিল নম্বর-০৩/২০১৪) করে প্রায় চারবছর আগে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষ। এখন এ পর্যায়ে নতুন আপিল করার উদ্দেশ্য কারও বুঝতে বাকি থাকার কথা নয়।

এফএইচ/আরএস/জেএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।