রিভিউতে সাজা বাড়ার নজির নেই : সাঈদীর আইনজীবী


প্রকাশিত: ০৩:৩৭ পিএম, ০৩ এপ্রিল ২০১৭

রিভিউতে সাজা বাড়ে এমন নজির নেই বলে মন্তব্য করেছেন মানবতাবিরোধী অপরাধের সাজা নিয়ে রিভিউ পেন্ডিং আসামি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে নিজের চেম্বারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাঈদীর রিভিউ শুনানি ৬ এপ্রিলের মধ্যেই শেষ হবে এবং রিভিউতে সর্বোচ্চ সাজা হবে এমন আশা প্রকাশ করেন।

আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিষয়ে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। অন্যদিকে আসামির প্রধান আইনজীবী হিসেবে খন্দকার মাহবুবও পাল্টা কথা বলেন।

আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমরা মনে করি, রিভিউতে কখনো দণ্ডাদেশ বৃদ্ধি করা হয় না। এমন কোনো নজির উপমহাদেশে আছে বলে আমার জানা নেই। সেটা যাই হোক, বিচারক সেটা বিচার করবেন।’

তিনি বলেন, ‘সাঈদীর এ মামলায় দুটি রিভিউ পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। একটিতে রাষ্ট্রপক্ষ সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছে, অন্যদিকে আমরা খালাস চেয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলা। এক্ষেত্রে আমরা সময়ের আবেদন করবো। আশা করি সময় পাবো। আদালত সেটি পর্যালোচনা করে যেটা সিদ্ধান্ত দেবে সেটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’

খন্দকার মাহবুব আরও বলেন, এ মামলায় আদালতের যে ফাইন্ডিং দিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে সাঈদী সরাসরি কোনো অভিযোগে সংযুক্ত ছিলেন না। সে কারণে তাকে মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ তার বিরুদ্ধে যে সাক্ষ্য প্রমাণ দিয়েছে তাতে কোনোভাবেই তার এ সাজা হয় না। সরকারের পক্ষ থেকে যে রিভিউ করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে যেহেতু অন্য কেসে একই সাক্ষ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে, এখানেও তেমনটি হওয়া কাম্য।

এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘আশা করি এ মামলার রিভিউ আবেদনে শুনানি এক দিনেই শেষ হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমি আশা প্রকাশ করছি ওই দিনই (৬ এপ্রিল) রিভিউ আবেদনে শুনানি শেষ হবে এবং সাঈদীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের দেয়া সাজা বহাল থাকবে।’

দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার রিভিউ শুনানির জন্য সোমবার (০৩ এপ্রিল) আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ১৪৭ নম্বরে উঠে আসে। এরপর বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে আসলে এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ এ মন্তব্য করেন।

২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওই আবেদনে সাঈদীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া ফাঁসির রায় পুনর্বহাল চাওয়া হয়। একই বছরের সাঈদীর খালাস চেয়ে ১৭ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেছিলেন সাইদীর আইনজীবীরা।

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ট্রাইব্যুনালে সাঈদীর বিরুদ্ধে গঠিত ২০টি অভিযোগের মধ্যে আটটি প্রমাণিত হয়। রায়ের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালায় জামায়াত-শিবির। সহিংসতায় প্রথম তিন দিনেই ৭০ জন নিহত হয়।

২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেন।

এফএইচ/এসএইচএস/জেএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।