চেয়ারম্যানের এত ক্ষমতা : হাইকোর্ট


প্রকাশিত: ১০:২০ এএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

‘চেয়ারম্যানের এত ক্ষমতা’ -মারপিট করার এখতিয়ার এবং আইন হাতে তুলে নেয়ার ঘটনায় এমন প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব এত ক্ষমতা কোথায় পেলেন? মারপিট করার এখতিয়ার কোথায় পেলেন? চেয়ারম্যান কি এতই ক্ষমতাধর যে আইন হাতে তুলে নেবেন? বিষয়টি সহজে ছাড়া হবে না।

গ্রাম্য সালিশে ফতোয়ার নামে বিচার বর্হিভূত শাস্তি প্রদানের ঘটনায় লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও একই উপজেলার চর মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বুধবার আদালত এসব কথা বলেন। এ সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আদালত তাদেরকে আগামী ৯ মার্চ আবারও আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চেয়ারম্যান দাফতরিক দায়িত্ব পালন করেছেন কিনা, সে বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দিতে বলেন। পাশাপাশি লক্ষ্মীপুরের বিচারিক আদালত থেকে ওই চেয়ারম্যানের নেয়া জামিনের নথিও তলব করা হয়।

হাইকোর্টের বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি একেএম সাহিদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে এ বিষয়ে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী এসএম রেজাউল করিম। চেয়ারম্যানের পক্ষে শুনানি করেন আবদুর রব চৌধুরী ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পক্ষে শুনানি করেন মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল সোহেল। এছাড়া আদালতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এস এম নাজমুল হক উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার চর মার্টিন ইউনিয়নের গ্রাম্য সালিশে ফতোয়ার নামে বিচার বর্হিভূত শাস্তি প্রদান সংক্রান্ত ঘটনায় স্বঃপ্রণোদিত রুল দেন হাইকোর্টের এই বেঞ্চ। ওই দিনই এ সংক্রান্ত সংবাদ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন আইনি সেবা দানকারী বেসরকারি সংস্থা ব্লাস্ট-এর আইন উপদেষ্টা ও পরিচালক এস এম রেজাউল করিম আদালতের নজরে আনলে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ রুল জারি করেন।

ফতোয়ার নামে গ্রাম্য সালিশে নারী ও পুরুষকে বিচার বর্হিভূত শাস্তি প্রদান কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বর্হিভূত ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয় রুলে। পাশাপাশি শাস্তি প্রদানকারী ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এবং লক্ষ্মীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার কারণে কেন আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়।

আইনজীবী রেজাউল করিম বলেন, আজকে (বুধবার) চর মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কমলনগর থানার ওসি ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন। আদালত বলেছেন, এটিকে হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। এখানে ফৌজদারী অপরাধ হয়েছে। সুতরাং এ দু’জনের ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি চেয়ে করা আবেদন গ্রহণ করেননি।

আগামী ৯ মার্চ (বৃহস্পতিবার) হাইকোর্ট পরবর্তী শুনানির তারিখ দিয়েছেন এবং সেই দিনও এ দু’জনকে হাজির হতে হবে বলে জানান এ আইনজীবী।

এফএইচ/আরএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।