খাল ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ


প্রকাশিত: ১০:৫৭ এএম, ৩০ নভেম্বর ২০১৬

রাজধানীর আগারগাঁও থেকে লিংক রোড হয়ে মিরপুরগামী ৬০ ফুট সড়কের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খাল ভরাট করে মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।

এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলী এবং মিরপুর থানার ওসিকে ওই রুলের জবাব দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এছাড়া খাল রক্ষায় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আরএস রেকর্ড অনুসারে ওই খাল সংরক্ষণের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং খাল ভরাট করে যে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে তা মমতা হাউজিংকে নিজ খরচে অপসারণের নির্দেশ দেয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

গত ২ নভেম্বর ‘ঢাকার আরেকটি খাল মৃত্যুমুখে, ভরাট করে হচ্ছে শপিং কমপ্লেক্স’ শিরোনামে দৈনিক সমকালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেই প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে হাইকোর্টে রিট আবেদনটি করা হয়।

প্রতিবেদনে পূর্ত বিভাগ সূত্রে উল্লেখ করা হয়, সরকারি সিদ্ধান্তে মমতা বহুমুখী সমবায় সমিতিকে ৭৭ দশমিক ৩ শতাংশ জমি বরাদ্দ দেয়া হয় মার্কেট নির্মাণের জন্য। যেখানে নির্মাণ হচ্ছে মমতা কো-অপারেটিভ সোসাইটির ১৭ তলা মার্কেট।

এরই মধ্যে সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে দোকান বরাদ্দ নিতে বিপুল অঙ্কের টাকা নেয়া হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দফতর আগারগাঁও এলাকায় স্থানান্তরের কারণে ওখানে মার্কেট তৈরির বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এ ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী আতাউর রহমান বলেন, মার্কেট করা না করার ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। বিএনপি বস্তি উচ্ছেদ ও স্থানীয় দোকানিদের পুনর্বাসনের জন্য সরকার জায়গাটি বরাদ্দ দিয়েছিল।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পূর্ত বিভাগের ওই এলাকার দায়িত্ব পালনকারী শেরেবাংলা নগর গণপূর্ত বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আতাউর রহমানও ৩০ ফুট খালের কথা স্বীকার করেন।

তিনি জানান, খালের কিছু জমি মমতা বহুমুখী সমবায় সমিতি শপিং কমপ্লেক্সের ভেতরে পড়েছে। সেটা ১০ ফুট হতে পারে। এটা ছেড়ে দেয়া কোনো ব্যাপার নয়। ওই স্থানের বস্তিগুলো উচ্ছেদ করার জন্যই এটা করা হয়েছে। ওয়াসা খাল খনন করতে চাইলে খালের জমি ছেড়ে দেয়া হবে।

প্রতিবেদনে রাজধানীর খাল দেখভালের দায়িত্ব পালনকারী ঢাকা ওয়াসার ড্রেনেজ সার্কেলের প্রকল্প পরিচালক ক্যা সা সিংকে উদ্বৃত করে উল্লেখ করা হয়, ৭০০ মিটার দৈর্ঘ্যের ওই খালটির ৩০০ মিটার পর্যন্ত পাড় বাঁধাই করা হয়েছে। বাকি অংশও বাঁধাই করে খালটি রক্ষা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এর মধ্যে মমতা বহুমুখী সমবায় সমিতির শপিং কমপ্লেক্সের পাশে খালের ওই জায়গা নিয়ে ওয়াসার সঙ্গে তাদের মামলা চলছে। আদালত ওই পয়েন্টের কিছু জায়গার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছেন।

এতে খালটির অবস্থা স্বাভাবিক থাকার কথা; কিন্তু মমতা হাউজিং হয়তো ভরাট করে সেখানে প্রাচীর দিয়েছে। মামলার কারণে আপাতত কোনো পদক্ষেপ ওয়াসা নিতে পারছে না।

এফএইচ/জেএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।