১৬ বছর বিনা বিচারে বন্দি শিপনের জামিন


প্রকাশিত: ০৬:৪৮ এএম, ০৮ নভেম্বর ২০১৬

একটি হত্যা মামলার আসামি হয়ে বিনা বিচারে ১৬ বছর ধরে কারাগারে বন্দি থাকার পর হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন মো. শিপন নামে এক ব্যক্তি। ওই হত্যা মামলায় বিচার শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট । একইসঙ্গে শিপনের মামলাটি আগামী দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে সংশ্লিষ্ট আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তার জামিন মঞ্জুর করে এই আদেশ দেন। এর আগে সকালে শিপনকে আদালতে হাজির করা হয়।

গত ৩০ অক্টোবর বিনা বিচারে ১৬ বছর ধরে কারাগারে আটক শিপনকে কেন জামিন দেয়া হবে না -এই মর্মে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আজ শিপনকে আদালতে হাজিরের জন্য জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২২ বছর আগের একটি ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলাটি ঢাকার আদালতে বিচারাধীন।

১৯৯৫ সালে মামলার চার্জশিট দিলেও বিচার নিষ্পত্তি করা যায়নি দীর্ঘ ২১ বছর ধরে। এই দীর্ঘ সময়ে মাত্র দুজন সাক্ষী দিয়েছেন এই মামলায়। বিষয়টি উচ্চ আদালতের নজরে এলে গত ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট মামলার নথি তলব করেন এবং রুল জারি করেন।

জানা যায়, ১৯৯৪ সালে পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে দুই মহল্লার মধ্যে মারামারিতে মাহতাব নামে এক ব্যক্তি খুন হন। এ ঘটনায় মো. জাবেদ বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় দুই নম্বর আসামি করা হয় মো. শিপনকে। এজাহারে তার বাবার নাম ছিল অজ্ঞাত।

পরে ১৯৯৫ সালে দেয়া অভিযোগপত্রে বাবার নাম উল্লেখ করা হয় মো. রফিক। ঠিকানা উল্লেখ করা হয় ৫৯, গোয়ালঘটা লেন, সূত্রাপুর।

পরবর্তী সময়ে ২০০০ সালের ৭ নভেম্বর  শিপনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর থেকে তিনি কাশিমপুর কারাগারে বন্দি রয়েছেন।

চার্জশিট দাখিলের ৫ বছর পর ২০০১ সালে মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়। বর্তমানে ঢাকার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে মামলাটি বিচারাধীন। অভিযোগপত্র দাখিলের পর এ পর্যন্ত সাক্ষী নেয়া হয়েছে দুজনের। যদিও মোট সাক্ষী রয়েছেন ১২ জন। আগামী ১১ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে।

এ মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে সম্প্রতি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কুমার দেবলু দে।

শুনানিকালে চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদনের ভিডিও ফুটেজ ও লিখিত স্ক্রিপ্ট জমা দেওয়া হয়। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. শহীদুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন। শুনানি শেষে হাইকোর্ট উপরোক্ত আদেশ দেন।

পরে কুমার দেবলু দে বলেন, এই আসামি ১৬ বছর ধরে কারাগারে বন্দি। বিচার শেষে যদি তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন -তাহলে এই সময়টা কে ফিরিয়ে দেবে।

এফএইচ/জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।