৩৪তম বিসিএস : শূন্য পদে আরো প্রধান শিক্ষক নিয়োগ কেন নয়


প্রকাশিত: ০১:৪০ পিএম, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে ৩৪তম বিসিএস থেকে নিয়োগের সুপারিশে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

রুলে ‘নন ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা-২০১০’ মতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের চাহিদা অনুযায়ী রিটকারীদের নিয়োগ দিতে পিএসসির চেয়ারম্যান, এওয়াইএম নাসের উদ্দিন, পিএসসির সচিবকে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে জনপ্রশাসন সচিব, শিক্ষা সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব, পিএসসির চেয়ারম্যান, পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) এওয়াইএম নাসের উদ্দিন, পিএসসির সচিবকে উক্ত রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

৩৪তম বিসিএসে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়েও পদ না পাওয়া ৩০ চাকরিপ্রার্থীদের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি জেএন দেব চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই  আদেশ দেন।

আদালতে আজ রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মনিরুজ্জামান।

মো. রাশেদুর রহমানসহ ৩০ জনের এই রিটটি দায়ের করে। রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে  আদেশ দেন আদালত। পরে জ্যোতির্ময় বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, প্রায় ৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ খালি রয়েছে। যার মধ্যে বিধান অনুসারে মন্ত্রণালয় ৩০০৫টি পদের বিপরীতে পিএসসিতে চাহিদাপত্র পাঠায়। সেখানে পিএসসি নিজেদের ইচ্ছামত একটা সংখ্যার প্রার্থীদের নিয়োগ দেয়। এই সংখ্যা তারা কিভাবে ঠিক করলো? যেখানে যোগ্য প্রার্থী আছে, পদ খালি আছে, সেখানে কেন তাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হবে না।

‘পদ খালি থাকলেও বঞ্চিত হচ্ছেন ৭১৬ প্রার্থী’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদন বলা হয়, ৩৪তম বিসিএসে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন মোট ৮ হাজার ৭৬৩ জন প্রার্থী। দুই হাজার ১৫৯ জনকে বিভিন্ন ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। এরপর প্রথম শ্রেণির নন-ক্যাডার পদের জন্য আবেদন করেন পাঁচ হাজার ১৭০ জন প্রার্থী। তাদের মধ্য থেকে ৪০৭ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়।

‘এরপর দ্বিতীয় শ্রেণির নন-ক্যাডার পদের জন্য আবেদন করেন দুই হাজার ৫৬৩ জন। তাদের মধ্য থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য ৮৯৮ জনকে, কর কমিশনে ৩৪০ জনকে, সমাজকল্যাণ, শ্রম মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আরো ১৪৯ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়।’

‘মোট এক হাজার ৩৮৭ জন দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগের সুপারিশ পেয়েছেন। আরো ৪৬০ জনকে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করা হবে বলে পিএসসি সূত্র জানায়। এরপরও ৭১৬ জন প্রার্থীর সুপারিশ বঞ্চিত রয়ে গেছে।’

এই প্রতিবেদনে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিককে উদ্বৃতি করে বলা হয়, ‘৩৪তম বিসিএস থেকে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪৫০ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগই হবে শেষ নিয়োগ। আমাদের কাছে চাহিদা এলে সেগুলো যাচাই-বাছাই করতে হয়। বিধি পর্যালোচনা করতে হয়। তাই এই বিসিএস থেকে আর নিয়োগের সুপারিশ করা সম্ভব নয়।’

এই বক্তব্য আদালতের দৃষ্টিতে এক আইনজীবী বলেন, এখানে অনেকের চাকরির বয়স শেষ হয়ে গেছে। যা তাদের জীবনের প্রশ্ন। সেখানে পিএসসির চেয়ারম্যান বলছেন, পর্যালোচনা করতে হয় বলে ৩৪তম বিসিএস থেকে আর নিয়োগ সম্ভব নয়। এই যুক্তিতে কিভাবে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ বঞ্চিত করা যেতে পারে।

৩৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও যারা ক্যাডার পাননি তাদের মধ্য থেকে ৮৯৮ জনকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের সুপারিশ করেছে বলে গত ১০ অাগস্ট জানায় পিএসসি।

এতে বলা হয়, ‘সুপারিশকৃত প্রার্থীদের মেডিকেল বোর্ড স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যোগ্য ঘোষণা করলে এবং যথাযথ এজেন্সির মাধ্যমে প্রাক-নিয়োগ জীবন বৃত্তান্ত যাইয়ের পর তাদের চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হবে।’

৩৪তম বিসিএসের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় ৬ হাজার ৫৮৪ জন উত্তীর্ণ হলেও তাদের মধ্যে থেকে দুই হাজার ১৫৯ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করে কমিশন।

এফএইচ/জেএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।