২০ ওষুধ কোম্পানিকে উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ


প্রকাশিত: ০৭:৫৭ এএম, ০৭ জুন ২০১৬

মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হওয়ার কারণে ২০টি ওষুধ কোম্পানিকে ওষুধ উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ১৪টি অ্যান্টিবায়োটিক বন্ধের নির্দেশও এসেছে আদালত থেকে।

কোম্পানিগুলোর ওষুধ উৎপাদন বন্ধে স্বাস্থ্যসচিব যে ব্যবস্থা নেবেন, তা বাস্তবায়নে পুলিশের আইজি ও র্যাবের মহাপরিচালককে আইনি সহায়তা দিতেও বলা হয়েছে আদালতের নির্দেশনায়।

একইসঙ্গে এসব কোম্পানির লাইসেন্স বাতিলে কেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।

আদালতের এই আদেশ আগামী সাতদিনের মধ্যে বাস্তবায়ন করার জন্য বলা হয়েছে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে।

নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও ওষুধ প্রশাসন পরিদফতরের পরিচালককে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এককে সাহিদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।  

গত ৫ জুন মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি দায়ের করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে যে ২০ কোম্পানিকে উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে সে কোম্পানিগুলো হলো: এক্সিম ফার্মাসিউটিক্যাল, এভার্ট ফার্মা, বিকল্প ফার্মাসিউটিক্যাল, ডলফিন ফার্মাসিউটিক্যাল, ড্রাগল্যান্ড, গ্লোব ল্যাবরেটরিজ, জলপা ল্যাবরেটরিজ, কাফমা ফার্মাসিউটিক্যাল, মেডিকো ফার্মাসিউটিক্যাল, ন্যাশনাল ড্রাগ, নর্থ বেঙ্গল ফার্মাসিউটিক্যাল, রিমো কেমিক্যাল, রিদ ফার্মাসিউটিক্যাল, স্কাইল্যাব ফার্মাসিউটিক্যাল, স্পার্ক ফার্মাসিউটিক্যাল, স্টার ফার্মাসিউটিক্যাল, সুনিপুণ ফার্মাসিউটিক্যাল, টুডে ফার্মাসিউটিক্যাল, ট্রপিক্যাল ফার্মাসিউটিক্যাল এবং ইউনিভার্সেল ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড।

যে ১৪টি কোম্পানির অ্যান্টিবায়োটিক বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে সে কোম্পানিগুলো হলো: আদ-দ্বীন ফার্মাসিউটিক্যাল, আলকাদ ল্যাবরেটরিজ, বেলসেন ফার্মাসিউটিক্যাল, বেঙ্গল ড্রাগস, ব্রিস্টল ফার্মা, ক্রিস্ট্যাল ফার্মাসিউটিক্যাল, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যাল, মিল্লাত ফার্মাসিউটিক্যাল, এমএসটি ফার্মা, অরবিট ফার্মাসিউটিক্যাল, ফার্মিক ল্যাবরেটরিজ, পনিক্স কেমিক্যাল, রাসা ফার্মাসিউটিক্যাল এবং সেভ ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড।

মনজিল মোরসেদ জানান, ২০১৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ভেজাল এবং নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি গঠন করে।

এ কমিটিতে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মো. সাহাবুদ্দিন কবীর চৌধুরী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি অ্যান্ড ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী।

এ বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি দেশের ৮৪টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সংসদীয় কমিটির কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়; যাতে মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ ২০টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা ছাড়াও ১৪টি কোম্পানির সব ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক (নন-পেনিসিলিন, পেনিসিলিন ও সেফালোস্পোরিন গ্রুপ) উৎপাদনের অনুমতি বাতিল চাওয়া হয়।

কিন্তু পরে তা বাস্তবায়িত না হওয়ায় রিট আবেদনটি করা হয়।

এফএইচ/এনএফ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।