যেটাই দোকান সেটাই ঘর তবুও অর্জন গোল্ডেন প্লাস
অদম্য ইচ্ছা শক্তির কাছে পরাজয় বরণ করে নিয়েছে দারিদ্রতা। এক টুকরো টিনের ছাউনির ঘর। যেটাই বাড়ি, সেটাই ঘর। তার সঙ্গে পলিথিন পেচিয়ে চায়ের দোকান। সেই দোকানে মায়ের সঙ্গে চা বিক্রি করে মৌসুমী।
সকল বাধাকে পরাজিত করে এবার এসএসসি পরীক্ষায় তানোর পৌর এলাকার আকচা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে (বিজ্ঞান বিভাগ) গোল্ডেন প্লাস পেয়েছে সে।
তানোর উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের সিধাইড় গ্রামে আব্দুল মান্নানের মেয়ে মৌসুমী।
সরকারি খাস জায়গাতে এক টুকরো বাড়ি তাদের। আর যেটাই বাড়ি, সেটাই চায়ের দোকান তাদের। বাড়িতে নেই বিদ্যুৎ। তাতে কি? রাতে হারিকেন জ্বালিয়ে চলছে তার পড়াশুনা। আর এভাবেই রাতের পর রাত পড়াশুনা করে এবার এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে মৌসুমী।
মৌসুমী জানান, শত বাধা বিপত্তির মাঝেও মা আমাকে পড়াশুনার জন্য তাগাদা দিয়েছেন। অভাব, কষ্ট যতটা ছিল, তার থেকে বেশি মনের শক্তি ছিল তার।
তিনি মনে করেন, মনের জোরই বড় শক্তি, দারিদ্রতা কোনো বিষয় নয়। আমি পড়াশুনা করে ডাক্তার হতে চাই। ডাক্তার হয়ে দরিদ্র মানুষের সেবা করতে চাই।
এদিকে, সন্তানের এমন সাফল্যে বেজায় খুশি দিনমুজর বাবা আব্দুল মান্নান ও মা নাজিরা বিবি। ক্লাসে ভালো হওয়ায় স্কুল শিক্ষকরাও তাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন বলে জানান মৌসুমী।
তবে চরম দারিদ্রতার সংসারে মৌসুমীর ডাক্তার হওয়া স্বপ্ন পূরণের পথে অনেক বড় প্রতিবন্ধকতা। আর প্রতিবন্ধকতাকে ডিঙিয়ে তার স্বপ্ন পূরণ হবে কি? সেই চিন্তায় এখনই তাকে বড্ড ভাবায়।
তানোর আকচা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসলাম উদ্দিন জানান, গরীবের ঘরে জন্ম নিয়ে খেয়ে না খেয়ে কষ্ট করে লেখাপড়া করে সে আজ সার্থক হয়েছে। আমরা দোয়া করি মৌসুমী মানুষের মতো মানুষ হয়ে সমাজের সেবা করুক। এ জন্য তিনি সমাজের বিত্তবানদের প্রতি সহযোগিতা কামনা করেছেন।
শাহরিয়ার অনতু/এমএএস/পিআর