বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি


প্রকাশিত: ০৬:৩৫ এএম, ২০ মার্চ ২০১৬

দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রথম শ্রেণির চাকরি সবার কাছেই বহু প্রত্যাশিত একটি ব্যাপার। আর তা যদি হয় বিসিএস, তাহলে তো কথাই নেই। সবার কাঙ্খিত সেই বিসিএস নামক সোনার হরিণের খোঁজ পেতে এ পরীক্ষার দ্বিতীয় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো লিখিত পরীক্ষা। তাই লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতিতে আপনাকে এগিয়ে রাখতে নিজেদের বিসিএস অভিজ্ঞতা ও বর্তমান পরীক্ষার ধরণ-ধারণ বিশ্লেষণ করে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন যুগ্মসচিব ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক- অর্থ ও হিসাব কর্মকর্তা দেওয়ান সাইদুল হাসান এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা সামিয়া আলম। লিখেছেন গোলাম রাব্বী।

প্রশ্নের মান অনুযায়ী সময় ব্যয়
দেওয়ান সাইদুল হাসান এবং  সামিয়া আলম- অভিজ্ঞ এ দু’জনের কথাতেই উঠে আসে প্রশ্নের মান বণ্টন অনুযায়ী সময় ব্যয়ের প্রসঙ্গটি। অনেকেই আছেন যারা সময়জ্ঞান চিন্তা না করেই নিজের যত তথ্য-উপাত্ত আছে সবই দেয়া শুরু করেন। পরে দেখা যায় ২ নম্বরের উত্তরের জন্য তিনি যে সময় ব্যয় করেছেন, ঠিক ১০ নম্বরের জন্যও একই সময় ব্যয় করেছেন। আর এতে কাঙ্ক্ষিত নম্বর  প্রাপ্তি ও শেষ সময়ে বিস্তারিত বা ব্রড কোয়েশ্চেনের উত্তর ভালোভাবে উপস্থাপনে বেগ পেতে হয়।

নম্বর অনুযায়ী লেখা ও বর্ণনা
কখনোই মানবণ্টন না দেখে লিখবেন না। কেননা তাতে একটি প্রশ্নের মধ্যে লেজ লাগানো, উদাহরণ স্বরূপ কোন প্রশ্নের মান ২+৫+৩ এভাবে থাকলে, পরীক্ষক যাতে সহজেই বুঝতে পারেন আপনি জগাখিচুড়ি লিখতে বসেননি। যে প্রশ্নের মান যেমন বা যেখানে গুরুত্ব দেয়া উচিত ততোটুকুই দিয়েছেন। আর এতে অল্প নম্বরের জন্য অল্প ও বেশি নম্বরের জন্য বেশি লেখার কাজটা করতে পারলে, বেশি নম্বর তোলা অনেকটাই সহজ হবে। কারণ তখন বেশি মানবণ্টনের প্রশ্নে আপনি কালার, গ্রাফ, চার্ট বা অন্যান্য উপাদান সহজেই যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারবেন।

ডিরেকশন অনুযায়ী লেখা
অনেকেই আছেন যারা প্রশ্ন ভালো না করে পড়েই, লেখা শুরু করেন। পরে দেখা যায়, যেখানে যে ক’টি প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছে, তারচেয়ে বেশি বা কম লিখে ফেলেছেন তাই আপনাদের উচিত হবে। এ বিষয়ে যুগ্মসচিব দেওয়ান সাইদুল হাসানের পরামর্শ হলো- আগে প্রশ্নের ডিরেকশনগুলো পড়া। এরপর শুরুতেই দাগিয়ে নেয়া। যে এখানে বা এ বিভাগে তিনটি। বা এখানে অথবা দেয়া আছে, তাই অথবাটি উত্তরপত্রে লেখা শুরুর আগেই লিখে ফেলাটা নিশ্চিত করে তারপর উত্তর লেখা শুরু করা।

শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়ে কিছু কথা
১. নতুন করে না পড়ে আগেরটাই ঝালাই করা
শুরুতেই বলে নেই- মানুষ যদি বলে এটা গুরুত্বপূর্ণ, ওটা গুরুত্বপূর্ণ এমন কথায় এক্কেবারেই কান দেয়া যাবে না। বরং আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ না হলে ঐ বিষয়টিতে মনোযোগ না দেয়াই ভালো। তাতে আপনার পড়া বিষয়টিও এলোমেলো হয়ে যেতে পারে। তাই চটজলদি কারো কথা বা শেষ সময়ে সাজেশান্স বা চূড়ান্ত প্রস্তুতি বা ১০০% কমন এমন লেখা কিছু বা বন্ধুমহলের কারো চটকদার বিজ্ঞাপনে একেবারেই হারানো যাবে না। মনে রাখবেন, আপনাকে তো আর শতভাগ প্রশ্নোত্তর করতে হবে না। রয়েছে অপশনের সুযোগ। ওটা না হয় বাদ দেয়ার কাতারেই রাখার পরামর্শ দেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা সামিয়া আলম।

২. নিজের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে
হ্যাঁ, তবে কেবল নিজের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে, তবেই কেবল নতুন করে কিছু পড়তে বা দেখতে পারেন। তবে তাও মুখস্থ অবশ্যই নয়। একটু চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন কেবল। কেননা অনেক সময় ধারণা থাকলেও আপনি আপনার কলমের জোর বা বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে শতভাগ প্রশ্ন বা মার্কে উত্তর করাটা, ভালোই হবে বৈকি!

চলবে-

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।