পরিবার আমাকে সাহস জুগিয়েছে: মীম জাহান তন্বী

মমিন উদ্দিন
মমিন উদ্দিন মমিন উদ্দিন , লেখক
প্রকাশিত: ০৬:২০ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০২৩

মীম জাহান তন্বী ৪১তম বিসিএসে পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। তিনি কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মো. নূরুল ইসলাম, মা দিলুয়ারা আক্তার। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন।

সম্প্রতি জাগো নিউজের সঙ্গে তার বিসিএস জয়, ক্যারিয়ার পরামর্শ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মমিন উদ্দিন—

জাগো নিউজ: ক্যাডার পাওয়ার অনুভূতি কেমন?
মীম জাহান তন্বী: সৃষ্টিকর্তার কাছে সব সময় কল্যাণ চেয়েছি। তিনিই উত্তম পরিকল্পনাকারী। তাই সব প্রশংসা আল্লাহর। পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ায় আমার বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন সবাই বেশ আবেগ আপ্লুত। কারণ আমার নানু দীর্ঘদিন এ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। নানা ভাই, নানু বেঁচে থাকলে নিশ্চয়ই খুব খুশি হতেন!

আরও পড়ুন: বিসিএস ভাইভা নিয়ে ভয়েই ছিলাম: হারুনুর রশিদ 

জাগো নিউজ: পড়াশেনায় কোনো প্রতিবন্ধকতা ছিল?
মীম জাহান তন্বী: ছোটবেলা থেকেই আমি পড়াশোনার পাশাপাশি সংস্কৃতিচর্চায় সম্পৃক্ত ছিলাম নিয়মিত। যা আমার জীবনে বরাবরই ভিন্ন মাত্রা যুক্ত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতেও এসব সৃজনশীল কাজের ধারা অব্যাহত ছিল সমানতালে। একটা সময় বিসিএস পরীক্ষার জন্য নিজেকে সবকিছু থেকে গুটিয়ে নেওয়াটা জরুরি মনে হয়েছে। শখের আঙিনাকে দীর্ঘদিনের জন্য শিকেয় তুলে একটানা পড়ার টেবিলে পুরোপুরি মনোযোগী হওয়াটা শুরুর দিকে কিছুটা চ্যালেঞ্জিং। তবে প্রস্তুতি পর্বের প্রতিটি ধাপে নতুনত্ব খুঁজে পেয়েছি, অনেক কিছু শিখেছি। প্রতিনিয়ত নিজেকে ভেঙে গড়ে তোলার এক অবিরাম স্রোতের মধ্য দিয়ে যাত্রা শেষে আজকের এই বিশেষ প্রাপ্তি। এক্ষেত্রে আমি একজন সিনিয়র আপুর সার্বিক দিকনির্দেশনা পেয়েছি। তাছাড়া কাছের বন্ধুদের সহযোগিতা, বিভিন্ন পরামর্শ নানা জটিল বিষয়ের খুঁটিনাটি অনেক কিছুকেই সহজ করে তুলেছে।

জাগো নিউজ: বিসিএসের স্বপ্ন দেখেছিলেন কখন থেকে?
মীম জাহান তন্বী: আমার পড়াশোনার গতিবিধি পাল্টেছে ২০১৩ সালে। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে মেডিকেল কলেজে পড়াটাই মূল লক্ষ্য ছিল। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলতে একটু সময় লেগেছে। বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা মাথায় আসে তখনই। স্নাতকোত্তর শেষে সেই অনুযায়ী যাত্রা শুরু করেছি স্বপ্নের পথে। বিজ্ঞানের গাঁথুনি আর রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বৈচিত্র্য আমাকে এই যাত্রায় অনেকখানি এগিয়ে দিয়েছে।

জাগো নিউজ: বিসিএস যাত্রার গল্প শুনতে চাই—
মীম জাহান তন্বী: আমার জন্য সবচেয়ে কঠিন ছিল, লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি পর্ব। কোভিড পরবর্তী নানা জটিলতায় ভুগতে হয়েছে দীর্ঘদিন। তাই হাতে সময় কম ছিল। অন্যদিকে বিশাল সিলেবাস। অসুস্থতার জন্য ঢাকায়ও আসতে পারছিলাম না। তাই বাসায় থেকে বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমের সহযোগিতায় প্রস্তুতি নেওয়ার চেষ্টা করেছি। যখনই হতাশ হয়েছি, আমার পরিবার আমাকে সাহস জুগিয়েছে, আগলে রেখেছে পুরোটা সময়। শুরু থেকে শেষ অবধি বিভিন্ন প্রয়োজনে সবার আন্তরিক সহযোগিতা পেয়েছি প্রতিটি ধাপে।

আরও পড়ুন: যেভাবে পুলিশ ক্যাডারে ৫১তম হলেন মিজান 

জাগো নিউজ: কারো কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন কি?
মীম জাহান তন্বী: রবের কোন দান আমি অস্বীকার করবো? নিজেকে বরাবরই সৃষ্টিকর্তার বিশেষ আশির্বাদপ্রাপ্ত মনে হয়। জীবনের নানা বাঁকে পরিবার আর বন্ধুত্বের বাইরেও আমি বেশ কয়েকজন শিক্ষক এবং শুভাকাঙ্ক্ষী পেয়েছি; যাঁরা সব সময় আমাকে নানাভাবে অনুপ্রাণিত করেছেন ভালো কিছু করার জন্য। অনেক গুণীজনের সান্নিধ্য পাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। সিভিল সার্ভিসে তাঁদের বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের নানা অভিজ্ঞতার গল্প শুনে স্বপ্ন বুনেছি বারবার। আমি তাঁদের প্রত্যেকের কাছে বিশেষভাবে ঋণী।

জাগো নিউজ: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
মীম জাহান তন্বী: বিগত বছরগুলোয় জীবনকে নতুন করে দেখতে শিখেছি। ব্যক্তিগত প্রত্যাশা প্রাপ্তির ঊর্ধ্বে মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকাটাই এখন জরুরি মনে হয়। যেহেতু স্বাস্থ্যসেবা দেশের খুব গুরুত্বপূর্ণ খাত, তাই আমি সব সময় আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে যেতে চেষ্টা করবো। এক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানার্জন এবং উচ্চতর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজেকে সমৃদ্ধ করার প্রয়াস থাকবে সব সময়। দেশ ও মানুষের কল্যাণে যেন ব্রতী হতে পারি, সেজন্য সবার দোয়াপ্রার্থী।

এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।