কর্মস্থলে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার বিকল্প নেই: শাহীন

বেনজির আবরার
বেনজির আবরার বেনজির আবরার , ফিচার লেখক
প্রকাশিত: ০১:৫৮ পিএম, ০২ এপ্রিল ২০২২

শাহীন মোহাম্মদ মানবসম্পদ পেশাজীবীদের সংগঠন বিশার্পের প্রেসিডেন্ট। বর্তমানে শীর্ষস্থানীয় শিল্পপরিবার মাসকো গ্রুপের এইচআর, অ্যাডমিন অ্যান্ড কমপ্লায়ান্স বিভাগের সিনিয়র মহাব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত। সম্প্রতি নিজের ক্যারিয়ার, সফলতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফিচার লেখক বেনজির আবরার—

জাগো নিউজ: শুরুতেই আপনার সম্পর্কে কিছু বলুন—
শাহীন মোহাম্মদ: নিজেকে ‘শাহীন মোহাম্মদ’ নামে পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয় দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পপরিবার মাসকো গ্রুপে ২০১৩ সাল থেকে কর্মরত আছি। স্ত্রী এবং একমাত্র কন্যাকে নিয়ে উত্তরায় টোনাটুনির সংসার। জন্ম ঢাকায়। বাবার সরকারি চাকরির সুবাদে শৈশব এবং স্কুলজীবনের অর্ধেকটা কেটেছে টাঙ্গাইলে। পরে পুরো সময় বেড়ে ওঠা গাজীপুরে। ছেলেবেলা ছিল খুবই বর্ণীল। প্রথম শ্রেণি থেকেই প্রথম সারির ছাত্র হওয়ার পাশাপাশি স্কুল পালানো, ফড়িং ধরতে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া, বইখাতা ফেলে নদীর পাড় দিয়ে ঘুরে বেড়ানো—এসবের ভেতর দিয়েই বেড়ে ওঠা। সমাজবিজ্ঞান অনুষদ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে চাকরিজীবনে প্রবেশ।

জাগো নিউজ: ক্যারিয়ার শুরুর গল্পটা কেমন?
শাহীন মোহাম্মদ: ক্যারিয়ার শুরুর গল্পটা টানাপোড়েন আর বৈচিত্র্যে ভরপুর। ছাত্রজীবন থেকেই স্বপ্ন দেখেছি সরকারি কিংবা গৎবাঁধা জীবন হবে এমন পেশায় যাব না। মধ্যবিত্ত পরিবারে স্বপ্ন আঁকড়ে থেকে সময়ক্ষেপণ করার মতো পরিস্থিতিও ছিল না। বছর দুয়েকের খুব তিক্ততার সিঁড়ি বেয়ে অবেশেষে ২০০৩ সালের শেষদিকে দেশের স্বনামধন্য পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠান ইউটা গ্রুপের মানবসম্পদ বিভাগে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু।

জাগো নিউজ: বর্তমান প্রেক্ষাপটে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব কতটা বেড়েছে?
শাহীন মোহাম্মদ: সত্যি কথা বলতে, যে কোনো সময়ের প্রেক্ষাপটেই মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অপরিসীম। সভ্যতার ক্রমবিকাশের ধারাবাহিকতায় শিল্প বিপ্লবের হাত ধরে আজকের যে অবস্থান, তার পেছনে অন্যতম সহায়ক শক্তি হলো মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা। ব্যবস্থাপনার ক্রমবিকাশ ও বিবর্তনের ধারায় মানবসম্পদ বিষয়টিকে সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের উন্নয়নের ধারায় সংযোজন এক নতুন অধ্যায়। সে জন্যই বর্তমানে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অপরিহার্য ভাবে বেড়েছে। দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা, সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার, উপযুক্ত কর্মী নিয়োগ, যথাযথ প্রশিক্ষণ, মানবীয় সম্পর্কের উন্নয়ন, উত্তম কর্মপরিবেশ, উৎপাদন বৃদ্ধি—এসব বিবেচনায় বর্তমানে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার কোনো বিকল্প নেই।

jagonews24

জাগো নিউজ: চাকরিপ্রার্থী তরুণদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শাহীন মোহাম্মদ: তরুণরা ভবিষ্যতের কারিগর। তরুণদের মেধা, মনন আর উৎকর্ষতার হাত ধরেই এগিয়ে পৃথিবী। চাকরিপ্রার্থী তরুণদের সঠিক কর্মপরিকল্পনা, যুগোপযোগী ক্যারিয়ার প্ল্যান, সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ওপর নির্ভর করে এগিয়ে যাওয়ার গল্প। বাস্তবতা হলো, প্রতিবছর চাকরির বাজারে প্রায় তিন লাখ তরুণ যুক্ত হচ্ছেন। কিন্তু এই তরুণদের জন্য চাকরির বাজার বাড়ছে না। আবার চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষতাও বড় প্রশ্ন। সবদিক বিবেচনায় তরুণদের উচিত যে কোনো সুযোগকে কাজে লাগানো। কোনো একটি ছোট জায়গা থেকে হলেও শুরু করা। আবেগীয় চিন্তাধারার ভেতর বন্দি না থেকে বাস্তববাদী হওয়া। আগে নিজের জন্য একটি অবস্থান তৈরি করা।

জাগো নিউজ: আপনি বিশার্পের প্রেসিডেন্ট, সে হিসেবে আপনাদের কাজ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
শাহীন মোহাম্মদ: মানবসম্পদ পেশাজীবী হিসেবে বিশার্প আমাদের প্রাণের সংগঠন। বিশার্প অ্যাপারেল সেক্টরে কর্মরত মানবসম্পদ পেশাজীবীদের একমাত্র নিবন্ধিত স্বতন্ত্র সংগঠন। এ প্রতিষ্ঠানের প্রথমবারের মতো সদস্যদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আমি। তাই কার্যপরিচালনা পরিষদের দায়ববদ্ধতার জায়গাটা অনেক বেড়ে গেছে। চলমান বৈশ্বিক মহামারির কারণে আমাদের কার্যক্রম অনেকটাই সীমিত ছিল। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হিসেবে সংগঠনের কলেবর বৃদ্ধি, সদস্যদের জন্য কার্যকরী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, সদস্যদের ওয়েলফেয়ার সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমই এখন বড় অংশ।

জাগো নিউজ: জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য কিছু বলুন—
শাহীন মোহাম্মদ: আগামীর সময়টাতে নিজেকে প্রস্তুত করার উদ্যোগ নিজেকেই নিতে হবে। দরকারি সব স্কিল ডেভেলপমেন্ট চাকরির বাজারে প্রবেশের আগে হলে খুব ভালো। সবার জন্য অনেক শুভ কামনা।

এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।