কেমন হবে জীবনবৃত্তান্ত

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ
সালাহ উদ্দিন মাহমুদ সালাহ উদ্দিন মাহমুদ , লেখক ও সাংবাদিক
প্রকাশিত: ০২:৩৫ এএম, ২৭ নভেম্বর ২০১৫

কর্মজীবনের জন্য প্রথমই দরকার সুন্দর ও সাজানো-গোছানো একটি জীবনবৃত্তান্ত। মনে রাখবেন সঠিকভাবে জীবনবৃত্তান্ত তৈরি না করলে আপনার আবেদনপত্র বাতিল হতে পারে। তবে যারা মাত্র পাস করে বেরিয়েছেন বা ১-২ বছরের বেশি কাজের অভিজ্ঞতা নেই, তাদের জীবনবৃত্তান্তের ধরন আর প্রফেশনালদের ধরন কিছুটা ভিন্ন। আসুন জেনে নেই চাকরিদাতার কাছে নিজেকে তুলে ধরার উপযুক্ত কৌশল।

ক্রোনোলজিক্যাল জীবনবৃত্তান্ত
কেউ যদি একই সেক্টরে থেকে এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি পাল্টাতে চান, আপনার জন্য ক্রোনোলজিক্যাল জীবনবৃত্তান্ত সবচেয়ে ভালো ফরম্যাট। এ ফরম্যাটে ক্যারিয়ার হিস্টোরি সাজাতে হয় কালানুসারে। সাম্প্রতিক চাকরির অবস্থানকে প্রথমে দিয়ে পর পর অন্য চাকরির অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন।

ফাংশনাল জীবনবৃত্তান্ত
ক্যারিয়ার ট্র্যাক পরিবর্তন করতে চাইলে ফাংশনাল জীবনবৃত্তান্ত ভালো। এ সিভিতে অর্জন ও কাজকে হাইলাইট করা হয়। এমনকি দক্ষতা, প্রতিদ্বন্দ্বিতার উপাদান, বিশেষজ্ঞতা বিস্তারিতভাবে দিতে হয়। এ ধরনের সিভিতে কাজের ধরন ও প্রতিষ্ঠানের নাম খুব একটা গুরুত্ব পায় না। এ ক্ষেত্রে কাজের দক্ষতাকে সবচেয়ে বেশি লাইনআপ করা হয়।

টার্গেটেড জীবনবৃত্তান্ত
টার্গেটেড জীবনবৃত্তান্ত নির্দিষ্ট কাজের জন্য বিশেষভাবে তুলে ধরতে প্রার্থী আবেদন করেন। কোনো ব্যক্তির ক্যারিয়ার জীবনের অর্জন ও সক্ষমতাকে লক্ষ্য করে তৈরি করা হয় এ জীবনবৃত্তান্ত। যদি নির্দিষ্ট কোনো চাকরি বা কাজের জন্য সিভি প্রয়োজন হয়, তার জন্য খুব ভালো ফরম্যাট এটা।

অল্টারনেটিভ জীবনবৃত্তান্ত
অল্টারনেটিভ জীবনবৃত্তান্ত ক্রিয়েটিভ ফিল্ডে কাজ করতে আগ্রহীদের জন্য। অ্যাড ডিজাইন, মিডিয়া অথবা পাবলিক রিলেশনের মতো ব্যক্তিনির্ভর কাজে এ সিভি উপযুক্ত।

কীভাবে সাজাবেন
জীবনবৃত্তান্ত হতে হবে পেশাদার। এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন-
১. ইংরেজিতে তৈরি করুন। তবে প্রতিষ্ঠানের নীতি অনুসারে তা বাংলায়ও হতে পারে।
২. ইংরেজিতে তৈরি করলে লেখার ফ্রন্ট ‘টাইমস্ নিউ রোমান’, বাংলায় হলে ‘সুতন্বি এমজে’ রাখুন।
৩. ফ্রন্ট সাইজ ১২ আর লাইন স্পেস হোক ১.৫। সিভির প্রধান শাখাগুলো বোল্ড করে দিন।
৪. পয়েন্টগুলো এমনভাবে সাজান, যেন নিয়োগকর্তা পরের অংশটি পড়তে আকৃষ্ট হন।
৫. শুধু শুধু অতিরঞ্জিত করবেন না। নিজের শক্তি ও দুর্বলতার জায়গাগুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করুন।
৬. শুরুতেই সদ্য তোলা ছবি এবং পত্র যোগাযোগের ঠিকানা জুড়ে দিন।
৭. ভাষা রাখুন সহজবোধ্য ও সংক্ষিপ্ত।
৮. তথ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটাবেন না।
৯. দুই পৃষ্ঠার বেশি না করাই ভালো। তবে অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতাভেদে ব্যতিক্রম ঘটলে ক্ষতি নেই।
১০. তিনটি জিনিস বজায় রাখবেন। যেমন- ক. বাক্য হবে সহজ-সরল, খ. ছোট বাক্য লিখবেন, গ. হেডিং আর তারিখ যেন মূল টেক্সটের ফ্রন্ট সাইজের থেকে আলাদা হয়।
১১. কোনো ভাষা শিক্ষা, কম্পিউটার কোর্স ও প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করলে তাও উল্লেখ করা প্রয়োজন।
১২. শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে বাড়িয়ে বলবেন না।
১৩. নির্দিষ্ট কাজের সঙ্গে সম্পর্ক আছে এমন ওয়ার্কশপ, সেমিনারে অংশ নিলে তা উল্লেখ করুন।
১৪. কোনো পুরস্কার বা স্বীকৃতি পেলে তা হাইলাইট করুন।
১৫. শখের জন্য একটি সাবহেড আলাদা করে তৈরি করতেই পারেন।
১৬. শিক্ষাজীবনে এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটি থাকলে তা লিখতে পারেন।
১৭. রেফারেন্স দিতে হয়। এমন দু’জন ব্যক্তির রেফারেন্স দেবেন যারা নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ও আপনার পরিচিত।
১৮. লেখা শেষে প্রত্যায়িত করতে ভুলবেন না। এটি হবে স্ব-প্রত্যায়িত।

এসইউ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।