কেক তৈরি করে মাহমুদার আয় ২ লাখ টাকা
ইসরাত জাহান চৈতী
দুই বাচ্চা, সংসার সামলেও মোটামুটি সফল উদ্যোক্তার খাতায় নাম লিখিয়েছেন তিনি। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের পরিচিত মুখ। যার কাছে মিলবে আপনার পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো ডিজাইনের ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যকর কেক। বলছি নারায়ণগঞ্জের মেয়ে মাহমুদা রাণীর কথা। বিয়ের পর মেয়েরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে না, এমন ধারণাকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে আজ তিনি স্বাবলম্বী।
পড়াশোনা চলাকালীন বিয়ে হয়ে যায় মাহমুদার। এরপর দুই বাচ্চা ও সংসার সামলে কোনো চাকরিতে যোগদান করা হয়ে ওঠেনি। কিন্তু আগে থেকেই ইচ্ছা ছিল নিজে কিছু করবেন। সময়-সুযোগের অভাবে কিছু করা হয়ে ওঠে না। দুই মেয়ে একটু বড় হওয়ার পর ভাবলেন কিছু একটা করা উচিত। সে অনুযায়ী গতবছর ১১ জানুয়ারি জয়েন করেন একটি ফেসবুক গ্রুপে।
মাহমুদা ভরসা করেন উইতে। তাতে যুক্ত হওয়ার পর গতবছরের ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করেন। নিজের প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করতে শুরু করেন কেক। এরপর বিভিন্ন ধরনের কাস্টমাইজড কেক তৈরি করা শুরু করেন।
কেকের পাশাপাশি তৈরি করেন ব্রাউনি, গ্লিজবি, ম্যাকারন কুকিজ ইত্যাদি। বিভিন্ন হোম মেড পণ্য থাকলেও মাহমুদার সিগনেচার আইটেম কেক। ইতোমধ্যে তার কেক সাড়া ফেলেছে নারায়ণগঞ্জে। কেকের গুণগত মান নিয়ে সন্তুষ্ট তার ভোক্তারা। তাই অর্জন করেছেন ‘নারায়ণগঞ্জের কেক রাণী’ খেতাব। ক্রেতাদের কাছ থেকেই পেয়েছেন এ নাম।
মাহমুদার উদ্যোগে বর্তমানে একজন নিজস্ব ডেলিভারিম্যান আছেন। সেন্সেটিভ খাবার আইটেম হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ডেলিভারি দেওয়ায় আছে বিভিন্ন ঝামেলা। তবে নারায়ণগঞ্জসহ ঢাকা শহরের কিছু এলাকায় ডেলিভারি দিয়ে থাকেন তিনি। পরবর্তীতে এটাকে আরও প্রসারিত করার চিন্তা তার।
মাহমুদা বলেন, ‘এখন আমি অনেক সাড়া পাচ্ছি। আমার পুরো কাস্টমার বেজটাই উই থেকে। শুরুতে ভাবিনি এত সাড়া পাবো। এত কম সময়ে আমার তৈরি কেক মানুষ এমন পছন্দ করবে, সেটা কল্পনার বাইরে ছিল। গত একবছরে কেক তৈরি করে আয় করেছি প্রায় ২ লাখ টাকা। যা অনেক গৃহিণীকে স্বাবলম্বী হতে সাহস জোগায়।’
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে নিজেকে একজন বেকিং অ্যান্ড কুকিং ট্রেইনার হিসেবে দেখতে চাই। এ জন্য একটি অফলাইন ট্রেনিং সেন্টার তৈরির পরিকল্পনা আছে। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জে একটি কেক হাউস তৈরির স্বপ্ন দেখি। যেখানে কাজ করবে অনেক মানুষ। আমার তৈরি কেক পৌঁছে যাবে সারাদেশে।’
লেখক: শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
এসইউ/এমকেএইচ