সন্দেশ বিক্রি করে সফল উদ্যোক্তা অপু

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৫৯ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০

ইট-কাঠের শহরে গ্রামীণ খাবারের স্বাদ পাওয়ার উপায় তেমন নেই। তাছাড়া বিদেশি খাবারের ভিড়ে দেশি অনেক খাবার হারিয়ে যাওয়ার পথে। বাঙালির সেসব হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী খাবার শহরের মানুষের কাছে ভিন্নভাবে পরিবেশন করতে চান তরুণ উদ্যোক্তা আপন অপু। বিস্তারিত জানাচ্ছেন শেখ নাসির উদ্দিন—

সাংবাদিক ও লেখক আপন অপু দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করছেন ঢাকায় ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবারের ব্যবসা করার। কিন্তু ব্যবসা শুরু করতে অনেক পুঁজি দরকার। তাছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনভাবে দোকান নিয়ে ব্যবসা করার সাহস পাচ্ছিলেন না। তাই অনেকেই যখন অনলাইনে ব্যবসা শুরু করেছেন; তখন পুঁজির অপেক্ষা না করে ফেসবুকে পেজ খুলে শুরু করলেন ব্যবসা।

jagonews24

নিজের বোনের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থেকে ঢাকায় নিয়ে এলেন বোনের বানানো নারিকেলের সন্দেশ। ফেসবুক পেজ ‘সন্দেশ’র মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলেন ঢাকা শহরে। প্রথমে গ্রাম থেকে ১০ কেজি সন্দেশ আসে কুরিয়ারের মাধ্যমে। তারপর অর্ডার অনুযায়ী নিজেই ক্রেতাদের বাসায় সন্দেশ পৌঁছে দেন।

আপন অপু বলেন, ‘কোনো কাজকে ছোট করে দেখা উচিত নয়। ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ কিছুর সৃষ্টি হয়। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেলে দেশও বদলে যাবে। আমি সব সময় ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে কিছু একটা করব ভেবেছি। তাই আগস্টের শুরুতে গ্রামের বাড়িতে ঘরোয়াভাবে তৈরি সন্দেশ অনলাইনে বিক্রি শুরু করি। নিজে ক্রেতার বাসায় পৌঁছে দিয়েছি।’

jagonews24

তিনি বলেন, ‘এ সন্দেশ আমাদের এলাকায় সবাই নিজেদের জন্য বানায়। কেউ ভাবেনি, এটা ঢাকায় বিক্রি হবে। আমি যখন বাড়িতে এ সন্দেশ বিক্রি করার কথা বলি; তখন ভাই-বোনরা বলেন, কে কিনবে সন্দেশ! তারপর যখন শুরু করলাম; তখন আমিও অবাক হয়েছি।’

অপু আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আনা সন্দেশ এত দ্রুত শেষ হয়ে যাবে, সেটা ভাবিনি। আমাকে এখন সহযোগিতা করছেন আমার সেজ ভাই ও বড় বোন। ভাই গ্রাম থেকে নারিকেল সংগ্রহ করেন আর বোন নিজের হাতে তৈরি করেন। কৌটাজাত এক কেজি চিনির সন্দেশ বিক্রি করছি সাতশ টাকা আর গুড়ের সন্দেশ কেজি ছয়শ টাকা।’

jagonews24

কিভাবে তৈরি হয় সুস্বাদু গ্রামীণ নারিকেল সন্দেশ? জানতে চাইলে অপু বলেন, ‘প্রথমে নাড়িকেল কুরিয়ে নিতে হয়। তারপর সেগুলো পাটায় বাটার পর চিনি কিংবা গুড় মিশিয়ে পাত্রে নিয়ে জাল দিতে হয়। কিছু সময় রাখার পর সেগুলো চুলা থেকে নামিয়ে হালকা ঠান্ডা করে ছাঁচে ঢেলে নির্দিষ্ট আকারে আনা হয়।’

ভবিষ্যতে ফেসবুক পেজ সন্দেশে আরও ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার যুক্ত হবে এমনটি জানালেন তরুণ এ উদ্যোক্তা। যা শুধু ঢাকা শহরে নয়, ধীরে ধীরে ছড়িয়ে দেওয়া হবে দেশ ও দেশের বাইরে—এমন পরিকল্পনা রয়েছে তার।

এসইউ/এএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।