শিক্ষকদের প্রতি কেন এ বৈষম্য
সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে এটিই সর্বোচ্চ পদক্ষেপ। এ ছাড়া ২০১৬ সালে জাতীয় বেতন স্কেল দ্বিগুণ হারে ঘোষণা শিক্ষকদের জীবন মানোন্নয়নে একটি বৃহৎ পদক্ষেপ।
শ্রেণিকক্ষে একজন শিক্ষককে সঠিক শিক্ষা দান করতে হলে অবশ্যই তার জীবনে মানোন্নয়ন ঘটাতে হবে। তা না হলে শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে তার সঠিক শিক্ষাটি শিক্ষার্থীদের দিতে পারবে না। শ্রেণিকক্ষে গিয়ে যদি শিক্ষককে তার সংসারের চিন্তা করতে হয়, তাহলে কখনোই শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে মনোযোগী হবেন না।
তবে বৈষম্য রয়ে গেছে মাধ্যমিক পর্যায়ে। মাধ্যমিক শিক্ষায় উন্নতি না হলে শিক্ষা কাঠামোর ভিত্তি দাঁড় করানো সম্ভব নয়। প্রাথমিক শিক্ষার পরেই গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো মাধ্যমিক শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি মাধ্যমিক শিক্ষার সঠিক উন্নয়ন জরুরি। এ ক্ষেত্রে কোনোরকম বৈষম্য দেখা দিলে শিক্ষার উন্নয়ন ব্যাহত হবে। মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ না করে কলেজগুলোকে জাতীয়করণ করা হচ্ছে।
গত জুলাই থেকে ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার ছলে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের টাইম স্কেল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অথচ ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হচ্ছে না। মাধ্যমিক শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতায় চরম বৈষম্য বিরাজ করছে। বাংলা নববর্ষ উৎসব ভাতাটিও পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
কেন এ বৈষম্য? কেন শিক্ষকদের এত হতাশায় দিন কাটাতে হয়? কেন শিক্ষকরা রাস্তায় আন্দোলন করবেন? শিক্ষকদের যদি রাস্তায় নামতে হয় তাহলে এ জাতির সম্মান কোথায়? তাই সরকারের শিক্ষা খাতে ব্যাপক প্রশংসা, ব্যাপক উদ্যোগ যেন ম্লান না হয়, সে জন্য এমপিওভুক্তি শিক্ষকদের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
যেসব প্রতিষ্ঠান এখনও এমপিভুক্তি হয়নি, তাদেরকে ক্যাটাগরিতে ভাগ করে প্রতি বছর অটোমেটিক পদ্ধতিতে এমপিওভুক্তি করতে হবে। শিক্ষকদের ইনক্রিমেন্টসহ বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা, নববর্ষ ভাতাসহ সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই শিক্ষার সব ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর হবে।
লেখক: শিক্ষক, ঝিনাইদহ।
এসইউ/আরআইপি