ইন্টারভিউ দেওয়ার পরে যা করবেন


প্রকাশিত: ১২:২৫ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

প্রায় ক্ষেত্রেই ইন্টারভিউয়ের আগে কী করবেন, ইন্টারভিউয়ের সময় কী করবেন- ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়। কখনো ইন্টারভিউ দেয়ার পর কী করবেন- এমন বিষয়ে খুব বেশি একটি আলোচনা খুঁজে পাবেন না। তাই আসুন জেনে নেই ইন্টারভিউ দেওয়ার পরে করণীয় কী-

১. ইন্টারভিউ যখন শেষ; তখন আপনাকে প্রশ্ন করা হয়, আপনার কি আমাদের কাছে কিছু জানার আছে? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা উত্তর দেই, ‘না’। এটা আমাদের একটা কমন ভুল। ‘না’ উত্তরটি দেয়ার সাথে সাথে আপনি কিন্তু পরবর্তী যোগাযোগের সকল রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছেন। আপনি রিক্রুইটারের কাছে জানতে চাইতে পারেন- কোম্পানির বেতন, পলিসি, সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে।

২. এরপর হাসিমুখে বলতে পারেন, ‘তাহলে স্যার কবে থেকে জয়েন করতে হবে?’ ফলে ইন্টারভিউ বোর্ডে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে অন্যরকম মনোভাব তৈরি হবে আপনার ভিন্ন রকম অ্যাপ্রোচে। তবে, এরকম স্মার্ট অ্যাপ্রোচে যাওয়ার আগে ইন্টাভিউয়ারের মানসিকতা বুঝতে চেষ্টা করুন। এছাড়া আপনি কবে নাগাদ ফলাফল জানা যাবে সেটা জিজ্ঞেস করতে পারেন।

৩. ‘স্যার, আমি যেকোনো কাজ করতে পারবো, আমার ব্যাপারটা একটু দেখবেন।’ অথবা ‘স্যার, আমি ফ্যামিলি নিয়ে খুব সমস্যায় আছি, চাকরিটা আমার খুব দরকার’ এরকম কথা বলে শেষ করলে হবে না। নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করবেন না। অন্তত এভাবে বলুন, ‘আশাকরি খুব শিগগিরই আপনাদের সাথে আবার দেখা হবে’ অথবা ‘আশাকরি, আপনাদের সাথে অচিরেই মিলেমিশে কাজ করতে পারবো’।

৪. ইন্টারভিউ শেষে যিনি ইন্টারভিউ নিলেন, তার একটা কার্ড চেয়ে নিন।

৫. কোনো কারণে যদি বুঝতে পারেন যে এই চাকরিটি আপনার হচ্ছে না, তাহলে সুযোগ বুঝে ইন্টারভিউয়ারের ফিডব্যাক নিন। আপনার ভুলগুলো জেনে নিন।

৬. বাসায় পৌঁছে ইন্টারভিউয়ারকে ‘থ্যাংক ইউ’ মেইল দিন। এ ধরনের মেইলগুলোতে কী লিখবেন? আপনি এভাবে লিখতে পারেন, ‘আমি আপনাদের কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত (ইন্টারভিউ ডেট ও কোন পোস্টের জন্য ইন্টারভিউ দিয়েছেন- সেটা উল্লেখ করুন)। ইন্টারভিউ থেকে আপনি কি কি শিখেছেন এরকম দু’টি পয়েন্ট উল্লেখ করুন। এরপর নিজের সবল দিকগুলো দিয়ে কিভাবে আপনি কোম্পানির উন্নতি করতে পারবেন, তা নিয়ে ২-৩টি বাক্য লিখুন। পুনরায় কল পাওয়া বা সিলেক্টেড হওয়ার আশাবাদ জানিয়ে শেষ করুন।’ মোট ৪টি প্যারায় ৭-৮টি বাক্য লিখবেন।

৭. ইন্টারভিউ খারাপ হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো বাজে কমেন্ট করবেন না। এতে আপনার সাথে যারা পরিচিত, তারা আপনাকে আর রেফার করবে না। ধরুন, আপনি একটি কোম্পানিতে ভাইভা দিয়েছেন। ভালো হয়নি, যাচ্ছেতাই লিখে পোস্ট দিলেন। আপনার ফেসবুকেই রয়েছে অন্য কোম্পানির কেউ। সে কি আপনাকে আর জীবনেও রেফার করবে?

৮. ইন্টারভিউ দেওয়ার পর আমরা আর ফলোআপ করি না, এটা আমাদের মস্ত বড় ভুল। ফলোআপই যদি না করবেন, তাহলে গিয়েছিলেন কেন?

৯. বার বার ফোন দিয়ে রিক্রুইটারকে বিরক্ত করবেন না। এক সপ্তাহ পরে থ্যাংক ইউ মেইলের নিচে একটি ফলোআপ মেইল ড্রপ করতে পারেন। একটি মেসেজ দিতে পারেন।

১০. যারা ইন্টারভিউ দিতে এসেছেন, তাদের সাথে পরিচিত হোন। তাদের কার্ড নিন, নম্বর নিন। নিজের সম্পর্কে তাদের জানান। তাদের মাধ্যমে আপডেট জানতে পারবেন। তাদের মাধ্যমে নতুন সুযোগও তৈরি হতে পারে।

১১. রুমে ঢোকার সময়ে ইমপ্রেশন ও বের হওয়ার সময় ইমপ্রেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাসিমুখে বের হোন। আপনার হাসিমুখ ও স্কিলের এমন একটা ইমেজ ইন্টারভিউ রুমে দিয়ে আসুন, যাতে আপনাকে তারা নিতে বাধ্য হন।

লেখক: সিইও, কর্পোরেট আস্ক এবং ট্রেইনার ও প্রফেশনাল সিভি রাইটার। ই-মেইল: [email protected]

এসইউ/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।