পরিশ্রম কখনো বিফলে যায় না : সাব্বির সরকার


প্রকাশিত: ০৮:৪০ এএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মো. সাব্বির সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘সাব্বির দ্য প্রেজেন্টার’ নামে পরিচিত। তাঁর টিমের অনন্য আবিষ্কার ‘বিডিইয়ংস্টারজ’। যা আধুনিক ও যুগোপযোগী শিক্ষা উপকরণ তৈরির একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। তিনি এর স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে দীর্ঘ ৯ বছর ধরে শিক্ষকতা পেশায় আছেন।

সাব্বির সরকার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্র্যাব), বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগ এবং একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়িয়েছেন। এছাড়াও ইংরেজি ফনেটিক্স নিয়ে ৩টি বই লিখেছেন।

বর্তমানে সাব্বির সরকার একটি টেলি সেলস ও এসএমএস মার্কেটিং ভিত্তিক কোম্পানি টক টক লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। ইতোমধ্যে তিনি ইংরেজি শিক্ষার উপর দশ হাজারেও বেশি সেশন নিয়েছেন।

sabbir

জাগো জবসের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে কথা বলেছেন গোলাম রাব্বী।

জাগো জবস : বিডিইয়ংস্টারজ নিয়ে যদি একটু বিস্তারিত বলতেন-
সাব্বির সরকার : বিডিইয়ংস্টারজ বাংলাদেশের জন্য এক ব্যতিক্রমী আয়োজনই বলতে পারেন। এটি আমার ধারাবাহিক কাজেরই অংশ। আমি বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষে, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষদের ইংরেজি শেখাই। এখন সেটাকেই অনলাইনে প্রচার করছি। এতে কেবল আমার ক্লাসের নয় বরং বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ এমনকি প্রবাসী বাংলাদেশিরাও উপকৃত হতে পারেন। পাশাপাশি খুব সহজেই আমার পাঠগুলো ডাউনলোড করতে পারেন। এজন্য BDYoungStarz নামে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেছি। এটি বাংলা ভাষাভাষিদের জন্য ইংরেজি শেখার অনলাইন ফোরাম। যে সব তরুণ ইতোমধ্যে নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন তাদের গল্পগুলোও তুলে আনছি এখানে।

আমি বিশ্বাস করি, জঙ্গিবাদ নয় বরং আধুনিক শিক্ষা ও তথ্য-প্রযুক্তিতে বাংলাদেশের তরুণরা বিশ্বের কাছে একটি রোল মডেল হবে। তারা জানতে পারবে ইংরেজিতে কমিউনিকেশন্স বা নেটওয়ার্কিং শেখা, পেশা হিসেবে কোন বিষয়টি পছন্দ ইত্যাদি। আমাদের আশা, ২০২০ সালের মধ্যে ক্যারিয়ারভিত্তিক ২০২০টি ভিডিও লেসন তৈরি করা। এছাড়াও আমার ফেসবুক পেজে (sabbirthepresenter) লাইভ ক্লাস ও কিছু ভিন্নধর্মী কর্মশালা থাকবে।

sabbir

জাগো জবস : বিডিইয়ংস্টারজ নিয়ে আপনার ভাবনা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা শুনতে চাই-
সাব্বির সরকার : বিডিইয়ংস্টারজ মায়েদের জন্য Amazing Teaching Lessons বানাবে। যাতে যেকোনো মা তার বাচ্চাকে পড়াশোনায় সাহায্য করতে পারেন। বাচ্চাদের জন্য Kidz Ambitious Lessons থাকবে। এতে একটি বাচ্চা ছোট থেকেই তার ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবতে শুরু করবে। বিভিন্ন অধ্যায়ভিত্তিক ভিডিওর মাধ্যমে প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শুদ্ধভাবে বাংলা, ইংরেজি ও অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষকদের সহযোগিতা পাবে। এখানে মা-বাবা তাদের বাচ্চাকে পড়ানো কিংবা তাদের ক্যারিয়ার নিয়ে যেকোনো প্রশ্ন করতে পারবেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুচিন্তিত দিকনির্দেশনা থাকবে। প্রতি সপ্তাহে ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং গাইডলাইন নিয়ে ১টি লাইভ সেশনও থাকবে।

জাগো জবস : অতীতের অভিজ্ঞতা বর্তমানে পৌঁছতে কতটুকু সাহায্য করেছে বলে মনে করেন?
সাব্বির সরকার : আমি ইংরেজি স্পোকেন ও উচ্চারণ শেখাতে গিয়ে নানান পেশা, বয়স ও শ্রেণির মানুষ পেয়েছি। এতে একটি বড় অডিয়েন্স অ্যানালাইজিং পাওয়ার করতে পেরেছি। ইউনাইটেড মেরিটাইম একাডেমিতে ১ বছরের অতিথি শিক্ষক হিসেবে অনেক নিয়মানুবর্তিতা শিখেছি। সর্বোপরি কর্পোরেট ট্রেইনিং করাতে গিয়ে পুরো পৃথিবী সম্পর্কে অনেক জেনেছি। তাই বিডিইয়ংস্টারজ নিয়ে এত বড় স্বপ্ন দেখার সাহস পেয়েছি।

জাগো জবস : কার অনুপ্রেরণায় কীভাবে আপনার স্বপ্নের শুরু?
সাব্বির সরকার : তিনজনের সঙ্গে এটা প্রথম শেয়ার করি। তারা হলেন- মাহবুবুল হক ওসমানী, তৌফিকুল ইসলাম ও আমার স্ত্রী সামসুননাহার খুশবু। তাদের ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণায় বিডিইয়ংস্টারজ আজ এ পর্যায়ে। বর্তমানে সাতজনের অক্লান্ত পরিশ্রমও জড়িয়ে আছে এই গল্পের সঙ্গে। অন্যরা হলেন- মো. পলাশ আহমেদ, মো. সাব্বির আহমেদ ও নীরব হোসেন। কিন্তু আমি বলবো সব প্রেরণার উৎস এতো স্বল্পসময়ে এতো বেশি ভিউয়ার ও লাইকারদের ভালোবাসা।

sabbir-sarker

জাগো জবস : সফলতা বলতে আপনি কী বোঝেন?
সাব্বির সরকার : সফলতা বলতে আমি চলতে থাকা কোন পাওয়াকে বুঝি। ধরে নিলাম, সফলতা কোনো একটা নির্দিষ্ট বস্তু। তার দেখা কেউ পেয়ে গেলে তাকে সফল বলা হয়। দেখা গেল ওই বস্তুটি ৫ বছর পর নষ্ট হয়ে গেল বা হারিয়ে গেল। তখন ওই সফল লোককেই সমাজ ব্যর্থ বলবে। তাই সফলতার জন্য প্রতিদিনই কাজ করতে হবে। প্রতিদিন একদম নতুন নতুন কাজ ও চিন্তা। পরিশ্রম কখনো বিফলে যায় না। ব্যর্থ হলেও ভেঙে পড়া যাবে না।

জাগো জবস : ক্যারিয়ারে যারা সফল হতে চান, তাদের জন্য আপনার কোনো পরামর্শ-
সাব্বির সরকার : প্রথমত নেটওয়ার্ক বাড়াতে হবে। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষামূলক কাজে সম্পৃক্ত থাকতে হবে। আত্মবিশ্বাস, অন্যের কথায় কান না দেয়া, নিজের লক্ষ্য ঠিক করা, অন্যের গুণগুলো নিজের মধ্যে আনার চেষ্টা করা, স্রোতে গা না ভাসানো, প্রতিনিয়ত শেখাটা চালু রাখা, চাকুরি না পেলে উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করা- গুণগুলো প্রত্যেকের জন্যই আবশ্যক।

জাগো জবস : আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সাব্বির সরকার: জাগো নিউজকেও অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

এসইউ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।