আমাদের দেশে পেশাদারিত্বের উন্মেষ ঘটেছে : শান্তনু চৌধুরী


প্রকাশিত: ০৬:৫২ এএম, ১৭ আগস্ট ২০১৬

সাংবাদিক শান্তনু চৌধুরী। সাহিত্য অঙ্গনেও রয়েছে তাঁর পদচারণা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখার প্রাতিষ্ঠানিক পাঠ চুকিয়ে ফেললেও স্বশিক্ষিত হওয়ার চেষ্টা চলছে প্রতিনিয়ত। সাংবাদিকতার হাতেখড়ি ১৯৯৯ সাল থেকে। এরপর গল্প, কবিতা। প্রকাশ হয়েছে পাঁচটি বই।

শান্তনু চৌধুরী বর্তমানে কাজ করছেন দৃশ্যমান সংবাদমাধ্যম সময় টেলিভিশনের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক হিসেবে। সম্প্রতি ক্যারিয়ারের বিভিন্ন দিক নিয়ে জাগো জবসের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন গোলাম রাব্বী


shantanu

জাগো জবস : লেখালিখির সঙ্গে গণমাধ্যম পেশার যোগসূত্র স্থাপন করলেন কীভাবে?

শান্তনু চৌধুরী : আমার প্রথম লেখা ছাপা হয় ১৯৯৭ সালের ২০ অক্টোবর দৈনিক মুক্তকণ্ঠে। তবে এর আগে পত্রিকায় বিভিন্ন কুইজের, রেডিওতে গানের নাম ও কার গাওয়া জানিয়ে চিঠি লিখতাম। ছেলেবেলায় হাতে লেখা পত্রিকা ছিল আমাদের। স্কুলে সেটা বিলি হতো। আমিই লেখক, আমিই সম্পাদক। তবে পাঠক আমার বন্ধুরা।

এই করতে করতে ভোরের কাগজ পাঠক ফোরাম বা পরে ১৯৯৮ সালে প্রথম আলো বন্ধুসভা’র দিকে ঝুঁকে পড়া। কিন্তু ১৯৯৯ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হয় দর্শন বিভাগে। ইচ্ছে ছিল একই অনুষদের সাংবাদিকতা বিভাগে পড়ার। কিন্তু চান্স পাইনি। পরে অবশ্য এই সম্পর্কিত প্রচুর বইপত্র পড়া আর কাজ করতে করতে কাজের জায়গা খুঁজে নেয়া।

shantanu

জাগো জবস : টেলিভিশনের আগে অন্য কোনো চাকরিতে যুক্ত ছিলেন?
শান্তনু চৌধুরী : আমি সাংবাদিকতার বাইরে কোথাও কাজ করিনি। তবে এইচএসসি’র সময় থেকে প্রথম আলোর প্রদায়ক, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদদাতা, স্টাফ রিপোর্টার পরে আবার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে ঢাকায় এসে ‘ভোরের কাগজ-দিনের শেষে’ যোগদান।

জাগো জবস : আপনার সে সময়ের অভিজ্ঞতা বর্তমানে পৌঁছতে কতটুকু কাজে লেগেছে?
শান্তনু চৌধুরী : আমি যখন পত্রিকায় কাজ করি তখন রিপোর্টার ছিলাম। মাঠে-ঘাটে দৌড়াদৌড়ি। ভালোই লাগতো। অনেক বড় বড় ঘটনার সাক্ষী ছিলাম। এই বড় বড় ঘটনার সাক্ষী হওয়ার যে অভিজ্ঞতা সেটা পরবর্তীতে কাজে লেগেছে। এছাড়া যখন শুরু করেছিলাম তখন একটা অন্যরকম আবহ ছিল। নিউজপ্রিন্টের কিছু কাগজে লেখা হতো রাফ সংবাদ (এখনো কোথাও কোথাও হয়)। টাইপ করতে দিতে হতো আরেকজনকে। আমি কাগুজে, অন্তর্জালিক, শ্রুতিনির্ভর ও দৃশ্যমান সব মাধ্যমেই কাজ করেছি। সেই অভিজ্ঞতা কাজে প্রতিফলন ঘটাতে চেষ্টা করি।

shantanu

জাগো জবস : কার অনুপ্রেরণায় এ পেশাকে ভালোবেসে ফেললেন?
শান্তনু চৌধুরী : আসলে নির্দিষ্ট কারো অনুপ্রেরণা যে পেয়েছি তা না। একসময় পরিবারের সবাই মিলে লেখালেখিটা ভালো চোখে দেখতো না। পরে ‘ভালো’ হলে সবাইতো ভালো বলেই! তবে নারীর প্রেম, প্রকৃতি, মানুষ পাঠ এসবই অনুপ্রেরণা।

জাগো জবস : আপনার পেশায় সুযোগ-সুবিধা কেমন?
শান্তনু চৌধুরী : এই জায়গায় হয়তো অনেকের খেদোক্তি আছে। তবে একেকটি সংবাদমাধ্যম একেকরকম। সে কারণে একটির সাথে অন্যটির তুলনা করলে হবে না। অনেক সংবাদমাধ্যমে কাজ ও সুযোগ-সুবিধা প্রচুর। আমার সেই সাংবাদিকদের জন্য খারাপ লাগে যার হয়তো জানাশোনা বা যোগ্যতা রয়েছে কিন্তু নানা কারণে সুযোগ পাচ্ছেন না। আমাদের অনেকে নিজেদের পেশাটাকে দুর্বল করে তুলেছেন। তবে একথা ঠিক- কাজের মান বজায় রাখলে কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। আমাদের দেশে বেশ কিছু অনলাইন, সংবাদপত্র, রেডিও বা টিভিতে কিন্তু পেশাদারিত্বের উন্মেষ ঘটেছে।

জাগো জবস : নতুনদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শান্তনু চৌধুরী : পরামর্শ দেয়ার মতো যথেষ্ট যোগ্য আমি নই। আমি নিজেও এখন প্রতিনিয়ত শিখছি। কিন্তু এরপরও বলবো, প্রচুর পড়ালেখা করতে হবে। সাংবাদিকতায় অভিজ্ঞতা একটা বড় বিষয়। আর প্রতিদিনের ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে। পত্রিকা পড়তে হবে। এখন অনলাইনের যুগ। মুঠোফোনে সহজেই জানা যায় সব খবর।

shantanu

জাগো জবস : সাহিত্যচর্চা বা লেখালিখি নিয়ে ভবিষ্যৎ ভাবনা কী?
শান্তনু চৌধুরী : এমন ভাবনা নিয়ে কেউ লেখালেখি করে বলে আমার জানা নেই। আমার কাজ লিখে যাওয়া। লেখালেখি অনেকটা দৈবচয়নের মতো মনে হয়। হয়তো হঠাৎ করে মাথার মধ্যে অনেক কিছু কিলবিল করছে। চাইছে বেরিয়ে আসতে। আবার অনেক সময় কিছুই লিখতে ইচ্ছে করে না। আগামীতে জানি না কতোটুকু লেখা হবে। এর আগে পড়াটাও জরুরি।

জাগো জবস : লেখক হওয়ার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক কী কী?
শান্তনু চৌধুরী : এটা স্বনামখ্যাত লেখকরা ভালো বলতে পারবেন। তবে ইতিবাচক দিক অনেক। লেখকের আগে যেহেতু আমি সাংবাদিক তাই অনুসন্ধিৎসু মন তো রয়েছেই। লিখতে যাওয়া সেখানে বাড়তি কিছু যোগ করেছে। আর মন খুলে অনেকে গল্প বলে যেখান থেকে হয়তো লেখার উপাদান পাওয়া যায়। এছাড়া সবাই একটু আলাদা চোখে দেখেন সেটা ভালোই লাগে। নেতিবাচক দিক এখনো কিছু দেখিনি।

জাগো জবস : জাগো নিউজের পক্ষ থেকে আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
শান্তনু চৌধুরী : জাগো নিউজকে ধন্যবাদ।

এসইউ/এইচআর/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।