কেমন হবে চাকরির আবেদনপত্র

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১৫ পিএম, ২৮ জুন ২০১৪

চাকরির জন্য আবেদন করছেন। কিন্তু ঠিকঠাক সিভি বানাতে পারছেন না। বায়োডেটা বানাতে কোন কোন বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার সবার আগে? আসুন জেনে নেই সে বিষয়ে।

চাকরির বাজারে পেশা পরিবর্তন একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পেশা প্রবেশের থেকেও হয়তো পেশার পরিবর্তন নিয়ে অনেকে খুব চিন্তায় থাকেন। আর চিন্তার কেন্দ্রে একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। সিভি। কারিক্যুলাম ভিতা। চালু কথায় বায়োডেটা। চাকরির আবেদনে কেমন সিভি নিয়োগকর্তাদের আকৃষ্ট করতে পারে, তা নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তায় ভোগেন। কিন্তু কয়েকটা জিনিস মাথায় রাখলেই সিভি বানানোটা অতটাও কঠিন হবে না।

লক্ষ্যে স্থির: কোন কাজ করতে চান, কেরিয়ারকে কোন পথে চালিত করতে চান, সে সম্পর্কে স্পষ্ট উল্লেখ থাকা দরকার আপনার সিভি-তে। এতে আপনি যে ‘ফোকাসড’ সে বিষয়ে নিয়োগকারীরা নিশ্চিত থাকবেন। আপনি যদি আপনার নিজের ভবিষ্যত্‍ কেমন হলে ভালো হবে, সেই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নিয়ে থাকেন, তাহলে তা যদি আপনার কোম্পানির লক্ষ্যও আপনার কেরিয়ারের লক্ষ্যের অনুকুলে হয়, তা চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার সহায়ক হবে বৈকি৷ সিভি-তে তাই নিজেকে কোন অবস্থানে দেখতে চান, সেটিও ভালোভাবে উল্লেখ করুন।

সত্য ভাষণ: সিভি-তে শুধু শুধু অতিরঞ্জন আনবেন না। বরং একেবারে সত্যি কথাটি পরিষ্কার করে লিখুন। নিজের শক্তির জায়গাগুলো, আর দুর্বলতার জায়গাগুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করুন। এতে নিয়োগকর্তাদের বিশ্বাস অর্জন করাটা আপনার পক্ষে সুবিধাজনক হবে। আপনিও যদি কাজটি করার সুযোগ পান, তাহলে এই সত্য ভাষণ আপনার কাজে লাগতে বাধ্য। অতিরঞ্জনে বা বাড়িয়ে বলায় জটিলতা বাড়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।

পেশাদার সিভি: পেশাদারিত্বের মধ্যে আপনি যখন প্রবেশ করবেন, তখনই সিভি-টিও হতে হবে যত দূর সম্ভব পেশাদার। এক্ষেত্রে কতগুলি সহজ রাস্তা মাথায় রাখুন।

১) সিভি-র প্রথম থেকে পয়েন্ট-গুলো এমনভাবে সাজানা, যাতে নিয়োগকর্তারা পরের অংশটি পড়তে আকৃষ্ট হন।
২) পেশার দুনিয়ায় আপনি কোন চাকরিতে কখন ছিলেন, তা একেবারে ক্রোনোলজিক্যালি, অর্থাত্‍ সাল অনুযায়ী সাজান। এক্ষেত্রে পদের ক্ষেত্রে আপনার কীভাবে উন্নতি হয়েছে, সেটিও ধাপে দাপে উল্লেখ করা দরকার। চাকরির ধরন নিয়ে খুব বেশি কথা বলবেন না। নিজের দায়িত্বের পয়েন্ট-গুলিকে হাইলাইট করুন। সবচেয়ে বড় কথা, নিজের কথার প্রমাণ হিসাবে পরিসংখ্যান দিন দরকার মতো।
৩) শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে ততটুকুই বলুন, যেটুকু দরকারি। বেশি বর্ণনায় যাওয়াটা মোটেই কাজের কথা হবে না। বরং নির্দিষ্ট কাজের সঙ্গে সম্পর্ক আছে এমন ওয়ার্কশপ, সেমিনারে অংশ নিয়ে থাকলে, তা উল্লেখ করুন স্পষ্টভাবে।
৪) যদি কাজের সুবাদে কোনও পুরস্কার কিংবা স্বীকৃতি পেয়ে থাকেন, তা ভালো করে হাইলাইট করুন। মনে রাখবেন, পেশার জগতে নিজের দক্ষতাকে বিক্রি করতে পারাটাই আসল লক্ষ্য।

পরিচ্ছন্নতায় নজর: এমনভাবে সিভি বানাতে হবে, যাতে প্রধান বিষয়গুলো সহজেই নজরে পড়ে যায়। এজন্য পরিচ্ছন্ন সিভি হওয়া খুব দরকারি। তিনটি জিনিস বজায় রাখা দরকারি।
১) বাক্য যেন একেবারে সোজাসাপ্টা হয়।
২) ছোট বাক্য লিখুন। দরকার মতো বুলেট ব্যবহার করুন।
৩) হেডিং আর তারিখ যেন মূল টেক্সট-এর ফন্ট সাইজের থেকে আলাদা হয়। যাতে সেগুলোকে মূল টেক্সটের অংশ বলে মনে না হয়।

ভাষায় নজর: সিভি লেখার সময় অবশ্যই সরল বাক্য বা সিম্পল সেনটেন্স-এ লেখা উচিত। কোনও ভাবেই জটিল বাক্য বা উপমা বা জারগন ব্যবহার করবেন না। ভাষা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা কিংবা কাব্য হয়তো নিয়োগকর্তাদের মনোযোগ মূল পয়েন্টে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করতে পারে৷ তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভাষা ভালো হওয়াও দরকার। কনটেন্ট লেখার পেশার জন্য ভাষার দক্ষতা সিভি-তে দেখালেও দেখাতে পারেন।

নিজেকে চেনান: মনে রাখবেন, নিয়োকর্তারা চাকরিতে একজন মানুষকে নিতে চান, যন্ত্রমানবকে নয়। তাই হবি-র জন্য একটি সাবহেড আলাদা করে তৈরি করতেই পারেন। কে বলতে পারে, ওই শেষ পয়েন্ট-টিই হয়তো বাকি সিভি-র থেকে আপনার সিভি-টিকে আলাদা করে চোখে পড়িয়ে দেবে।

এএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।