অফিসে বসে বসে কাজ করে নিজের কী ক্ষতি করছেন দেখুন

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:১২ পিএম, ১৫ এপ্রিল ২০১৮

অফিসের প্রয়োজনেই ডেস্ক জব করতে হয়। সে ক্ষেত্রে শারীরিক পরিশ্রম নাই বললেই চলে। আর তাই তো নিজের অজান্তেই শরীর খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ কর্পোরেট জবে সারা দিন বসে বসে কাজ করতে হয় বলে জন্ম নেয় বিভিন্ন ব্যধি। এগুলো থেকে সতর্ক থাকতে হবে প্রথম থেকেই। আসুন জেনে নেই সারা দিন বসে বসে কাজ করার ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়-

ক্ষতিকর দিকগুলো
• প্রতিদিন অফিসে গড়ে প্রায় ৯-১০ ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ সঠিক নিয়মে কাজ করা বন্ধ করে দিতে থাকে।
• দিনে ছয় ঘণ্টার বেশি বসে থাকলে মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে। আর দিনে তিন ঘণ্টার কম সময় বসে কাজ করলে শতকরা ৪০ ভাগ ঝুকি রয়েছে।
• অতিরিক্ত বসে থাকলে পেট ও কোমরের কাছে মেদ বৃদ্ধি পায়।
• পায়ের স্বাভাবিক নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ব্যায়াম করেও শরীরের ফ্যাট কমানো যায় না।
• শরীরের ফ্যাট কমিয়ে আনা এনজাইমগুলো নিঃসরণের পরিমাণও শতকরা ৯০ ভাগ কমে যায়।
• হৃদরোগের ঝুঁকি অন্যদের থেকে প্রায় দ্বিগুণ।
• প্রতিদিন তিন ঘণ্টার বেশি বসে টেলিভিশন দেখলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ৬৪% বৃদ্ধি পায়।

শরীরের যে অংশের ক্ষতি হয়
কাঁধ এবং পিঠ: কোনো মানুষ তিন-চার মিনিটের বেশি সোজা হয়ে বসে থাকতে পারে না। ফলে শিরদাঁড়ার লিগামেন্টের বেশ ক্ষতি হয়। এতে পিঠের পেশিতেও বেশ চাপ পড়ে। কাঁধ এবং ঘাড়ের সমস্যাও দেখা দেয়।

কোমর এবং পা: বেশিক্ষণ বসে থাকলে কোমরের নিচের অংশ ও পায়ের পেশি ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যায়। ফলে হিপ-জয়েন্টে সমস্যা দেখা দেয়। রক্ত চলাচলেও সমস্যা হয়। পায়ের গোড়ালি ফুলে যায়।

media

হৃদযন্ত্র: দাঁড়ানো অবস্থায় হার্ট সবচেয়ে ভালো কাজ করে। আর সারাক্ষণ বসে কাজ করার ফলে হার্টের সমস্যা দেখা দেয়।

ফুসফুস এবং মস্তিষ্ক: সারা দিন একইভাবে বসে থাকার ফলে ফুসফুসে কম অক্সিজেন ঢোকে। ফলে ফুসফুসের আয়তনও ধীরে ধীরে ছোট হতে থাকে। ফুসফুসে কম অক্সিজেন ঢোকার ফলে মস্তিষ্কেও তার প্রতিফলন ঘটে। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমে যায়।

প্যানক্রিয়াস: দিনের বেশির ভাগ বসে থাকার ফলে প্যানক্রিয়াসে তৈরি ইনসুলিন হরমোন কমতে শুরু করে। ইনসুলিন তৈরি না হওয়ার ফলে ডায়াবেটিস হওয়ার হার বেড়ে যায়।

পাচনতন্ত্র: সারাক্ষণ বসে কাজ করার ফলে খাবার হজমে সমস্যা হয়। ফলে গ্যাস, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও হয়।

প্রতিরোধ-প্রতিকার
অনেকক্ষণ বসে থাকার পর ৩০ মিনিট ব্যায়াম করলেও খুব একটা উপকার হয় না। তাই যখনই সময় পাবেন চেয়ার থেকে উঠে পড়ুন। হালকা স্ট্রেচিং করুন বা হেঁটে আসুন। সামনের দিকে ঝুঁকে বসা বা সোজা হয়ে বসার চেয়ে ১৩৫ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল বা হেলান দিয়ে বসলে মেরুদণ্ডের উপর চাপ কম পড়ে। মাঝেমধ্যে সেভাবে বসার চেষ্টা করুন। কোমরে এবং ঘাড়ের ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।

ব্যায়াম
১. হাত দু’টো শরীরের দু’পাশে রিলিজ করে দিন। এরপর কাঁধ, হাত এবং আঙুল ধীরে ধীরে নাড়ান।
২. কাঁধ সার্কুলার মোশনে ঘোরান।
৩. বেশ কয়েকবার পা দু’টো ৪৫ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে তুলে ঘোরাতে থাকুন।
৪. চোখে জলের ঝাপটা দিন।
৫. কয়েক সেকেন্ডের জন্য চোখ বন্ধ করুন। তারপর চোখ খুলে দূরে কোনও কিছুর উপর ফোকাস করুন।
৬. সম্ভব হলে একটু হেঁটে নিন।
৭. এক ঘণ্টা পর পর একবার উঠে দাঁড়ান।
৮. ফোনে কথা বলার সময় চেয়ার ছেড়ে দাঁড়ান।
৯. ৩০ মিনিট পর পর নিজের জায়গাতেই মিনিট দুই-তিনের জন্য দাঁড়িয়ে থাকুন।

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।