যুক্তরাষ্ট্রে প্লেন দুর্ঘটনা
বিশাল আতশবাজির মতো স্ফুলিঙ্গ দেখেছেন প্রত্যক্ষদর্শী
![বিশাল আতশবাজির মতো স্ফুলিঙ্গ দেখেছেন প্রত্যক্ষদর্শী](https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2023March/plane-crush-20250130102159-20250130150952.jpg)
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে একটি যাত্রীবাহী প্লেন এবং সামরিক হেলিকপ্টারের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্ঘটনার সময় প্লেনটিতে ৬৪ জন এবং হেলিকপ্টারে তিনজন আরোহী ছিলেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ওই দুর্ঘটনার পর ওয়াশিংটনের বাসিন্দা অরি শুলম্যান বলেছেন, তিনি আকাশে বিশাল আতশবাজির মতো এক ধরনের স্ফুলিঙ্গ দেখতে পেয়েছেন। সেসময় তিনি বিমানবন্দরের পাশেই জর্জ ওয়াশিংটন পার্কওয়েতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। শুলম্যান বলেন, তিনি প্রায়ই সেখানে বিমান অবতরণ করতে দেখেন, তাই প্রথমে কিছু অস্বাভাবিক মনে হয়নি।
তিনি বলেন, সবকিছু স্বাভাবিক ছিল, বিমান ঠিকঠাক ভাবেই এগিয়ে আসছিল। তবে এরপর হঠাৎ করেই তিনি দেখেন যে, বিমানটি ডানদিকে প্রায় ৯০ ডিগ্রি কোণে কাত হয়ে গেছে। আমি বিমানের নিচের অংশ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম, যা এত অন্ধকারে দেখা যাওয়ার কথা নয়।
তিনি বিমানটির নিচে উজ্জ্বল হলুদ আলো এবং সামনের দিক থেকে পেছন পর্যন্ত স্ফুলিঙ্গ দেখতে পান যা অনেকটা আতশবাজির মতো। কিন্তু বিস্ফোরণের শব্দ না পাওয়ায় আর আগুনের গোলা বা দুর্ঘটনার অন্য কোনো লক্ষণ না দেখায় তিনি রাস্তার দিকে মনোযোগ দেন।
তিনি বলেন, আমি ভেবেছিলাম, আমি কি ভুল দেখলাম? এত বড় দুর্ঘটনার পর কেন কিছুই দেখতে পেলাম না? তবে কিছুক্ষণ পর যখন তিনি সামনে এগিয়ে যান, তখন দেখতে পান, চারদিকে জরুরি উদ্ধারকর্মীদের ভিড় জমে গেছে।
আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শীও তারার আলোকচ্ছটার মতো সাদা আলো দেখেছেন আকাশে। একজন যাত্রীর জন্য অপেক্ষমাণ হামাদ রাজা নামে দুর্ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, তিনি রিগ্যান ওয়াশিংটন জাতীয় বিমানবন্দরে তার স্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তার স্ত্রী আমেরিকান এয়ারলাইন্সের বিমানে ছিলেন। হামাদ রাজা বলেন, সে আমাকে টেক্সট করেছিল যে, ২০ মিনিটের মধ্যেই অবতরণ করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যের আইনপ্রণেতারা দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রার্থনা করার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একে একটি ‘ভয়ংকর দুর্ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং জরুরি সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর ‘অসাধারণ কাজের’ জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যম ট্রুথে এ দুর্ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলে লিখেছেন, বিমানটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ও সঠিক পথে বিমানবন্দরের দিকে আসছিল। হেলিকপ্টারটি দীর্ঘ সময় ধরে সরাসরি বিমানের দিকে আসছিল। রাত ছিল পরিষ্কার আর বিমানে স্পষ্টভাবে আলো জ্বলছিল।
তিনি ওই পোস্টে লিখেছেন, কেন হেলিকপ্টারটি ওপরে বা নিচে গেল না বা মোড় নিল না? কেন কন্ট্রোল টাওয়ার হেলিকপ্টারকে নির্দেশ না দিয়ে শুধু জিজ্ঞাসা করলো তারা কি বিমানটিকে দেখতে পাচ্ছে? তার মতে, এই ভয়ংকর পরিস্থিতি সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল।
- আরও পড়ুন:
- যুক্তরাষ্ট্রে প্লেন দুর্ঘটনা, নদী থেকে ১৮ মরদেহ উদ্ধার
- যুক্তরাষ্ট্রে যাত্রীবাহী প্লেনের সঙ্গে হেলিকপ্টারের সংঘর্ষ, বহু হতাহতের শঙ্কা
- দক্ষিণ কোরিয়ায় প্লেন দুর্ঘটনা: ১৮১ যাত্রীর ১৭৯ জনই নিহত
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন নিশ্চিত করেছে যে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনে সহায়তা দেবে। নতুন পরিবহণমন্ত্রী শন ডাফি বলেছেন, তিনি এফএএ-এর সদর দপ্তর থেকে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন। ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (এনটিএসবি) যৌথভাবে দুর্ঘটনার তদন্ত করবে বলে জানানো হয়েছে।
টিটিএন