ভারতে চীনের পরিবর্তে ক্রমেই বাড়ছে জাপানি বিনিয়োগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১০ পিএম, ০৭ জানুয়ারি ২০২৫
ভারতে ক্রমেই বাড়ছে জাপানের বিনিয়োগ

ভারত বর্তমানে জাপানি কোম্পানিগুলোর জন্য একটি সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, যা চীনের বিনিয়োগ আকর্ষণের হ্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ। জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেইটআরও) ২০২৩ সালের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ৮০ দশমিক ৩ শতাংশ জাপানি প্রতিষ্ঠান আগামী ১-২ বছরে ভারতে তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। বিপরীতে, চীনে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা ২১ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ২০০৭ সালের পর সর্বনিম্ন।

ভারতের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণি এই আকর্ষণের প্রধান কারণ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতে, ২০২৩ সালে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ২ শতাং, যা ২০২৪ ও ২০২৫ সালে যথাক্রমে ৭ দশমিক ০ শতাংশ ও ৬ দশমিক ৫ শতাংশে পৌঁছাবে। ২০২৬ সালের মধ্যে ভারতের জিডিপি জাপানকে ছাড়িয়ে যাবে ও ২০২৮ সালের মধ্যে এটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

তবে ভারতে জাপানের ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ভারতে আমদানি পণ্যের জন্য নতুন মান নিয়ন্ত্রণ (বিআইএস সার্টিফিকেশন) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলকে প্রভাবিত করছে। বিশেষ করে, জাপানি কোম্পানিগুলো, যারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে যন্ত্রাংশ আমদানি করে ভারতে পণ্য তৈরি করে, তাদের উৎপাদন পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করতে হচ্ছে।

অন্যদিকে, শ্রম ব্যয় বৃদ্ধি, উচ্চ কর্মী পরিবর্তন হার ও জটিল কর কাঠামোও বিদেশি কোম্পানিগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। তাছাড়া, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আদানি গ্রুপের দুর্নীতি অভিযোগ ব্যবসার স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

তবে, ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও ভারতে জাপানের বিনিয়োগ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত জাপানের বিনিয়োগ ২০২২ সালের পুরো বছরের চেয়ে বেশি হয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে ভারতে কার্যক্রম চালানো কোম্পানিগুলো লাভের মুখ দেখছে। বিশেষ করে, ১০ বছরের বেশি সময় ধরে কার্যকরী থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর ৯০ শতাংশ লাভজনক হয়েছে, যেখানে ১০ বছরের কম সময় ধরে থাকা কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে এটি ৬০ শতাংশ।

ছোট ও মাঝারি আকারের জাপানি কোম্পানিগুলোর অংশগ্রহণ তুলনামূলকভাবে কম (১৫ শতাংশ), কারণ তারা দীর্ঘমেয়াদি লাভের অনিশ্চয়তা এড়িয়ে চলতে চায়। সব মিলিয়ে, চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ভারত জাপানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সম্ভাবনাময় বিনিয়োগ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠছে।

সূত্র: নিক্কেই এশিয়া

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।