চীনের হাতে স্টিলথ প্রযুক্তির নতুন যুদ্ধবিমান, ‍ধরা পড়লো ক্যামেরায়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৩৯ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
সম্প্রতি চীনের চেংডু এলাকার আকাশে দুটি ‘অত্যাধুনিক’ যুদ্ধবিমান উড়তে দেখা যায়/ ছবি: সংগৃহীত

নেট ‍দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে চীনের নতুন দুটি যুদ্ধবিমানের ছবি। আপাতদৃষ্টিতে এগুলোতে স্টিলথ অর্থাৎ রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম এমন প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্য দেখা যাচ্ছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এগুলো স্পষ্টতই অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের নকশা। তবে ছবিগুলো অস্পষ্ট হওয়ায় ও বিস্তারিত তথ্য না থাকায়, সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা।

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা এদিকে, রয়টার্সের কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ বলেছে, তারা এই প্রতিবেদন সম্পর্কে জানে। তবে চীনের সামরিক বাহিনী সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে, এর বাইরে অতিরিক্ত কোনো মন্তব্য নেই।

রয়টার্স চীনের চেংডু এলাকার আকাশে দুটি যুদ্ধবিমানের উড়ন্ত একটি ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেছে। স্যাটেলাইট ছবি ও ফাইল ছবি সঙ্গে কাছাকাছি ভবন, সাইনবোর্ড, লোগো ও গাছপালার মিল পাওয়া গেছে। তবে সেই উড্ডয়নের তারিখটি স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

অনলাইনে প্রকাশিত চীনের লেজবিহীন যুদ্ধবিমানের নকশার ছবি অবশ্য নতুন নয়। নর্থরপ গ্রুম্যানের বি-২ এবং বি-১২ স্টিলথ বোমারু বিমান উভয়েরই শুধু ফ্লাইং উইং আছে এবং বেশ কয়েকটি ক্রুবিহীন বিমান যেমন- লকহিড মার্টিনের আরকিউ-৭০ ওচীনের সিএইচ- যুদ্ধবিমানের লেজ নেই।

এই দুটি চীনা যুদ্ধবিমানের কোনো অফিশিয়াল নাম এখনো প্রকাশিত হয়নি। যদিও এই ডিজাইনগুলো চীনের অন্যান্য বিমানের তুলনায় অনন্য। তবে এগুলোর স্টিলথ সক্ষমতা, গতি বা কৌশলগত দক্ষতা সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভব নয়।

গ্রিফিথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের প্রতিরক্ষা ও বিমান বিশেষজ্ঞ পিটার লেটন বলেন, চীনের বিমানের ক্ষেত্রে পঞ্চম প্রজন্মের বলে শনাক্ত করা কঠিন। কারণ এগুলোর ডিজাইনে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা কখনো দেখা যায় না।

চীনের জে-২০ ও জে-৩৫ বিমানের স্টিলথ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তবে এগুলোর সক্ষমতা জনসাধারণের কাছে অজানা ও শুধু জে-২০ বর্তমানে চীনা বহরে রয়েছে।

রয়টার্স বলছে, দুটি বিমানেরই ডিজাইন টেইললেস, অর্থাৎ এগুলোর পেছনে উল্লম্ব কোনো স্ট্যাবিলাইজার নেই। আর এমন যুদ্ধবিমানের ভারসাম্য সাধারণত কম্পিউটারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়।

যুদ্ধবিমান দুটির মধ্যে বড় আকারের যুদ্ধবিমানটি হীরক আকৃতির মতো। এর ইঞ্জিনের জন্য তিনটি এয়ার ইনটেক রয়েছে- দুটি ফিউসলেজের পাশে ও একটি উপরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি অত্যন্ত ব্যতিক্রমধর্মী ডিজাইন। তবে ছোট বিমানটির নকশা প্রচলিত নকশার মতোই।

উভয় যুদ্ধবিমানের ডিজাইনে ৯০ ডিগ্রি কোণের অনুপস্থিতি রয়েছে, যা স্টিলথ আকৃতির বৈশিষ্ট্য। এই ডিজাইনের উদ্দেশ্য হলো- কোনো রাডার যাতে সহজে শনাক্ত করতে না পারে।

অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক ইওয়ান গ্রাহাম বলছেন, চীন বহুদিন ধরেই সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়ন অব্যাহত রেখেছে। আর এমন নতুন ডিজাইন চীনের যুদ্ধবিমান শিল্পের পরীক্ষামূলক প্রচেষ্টা ও উদ্ভাবনশক্তির স্পষ্ট প্রতিফলন।

তিনি বলেন, এর কার্যকারিতা যেমন-ই হোক না কেন, তাদের নকশা অত্যন্ত মৌলিক। এর জন্য তারা প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। সেই সঙ্গে চীনের এমন পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের অগ্রগামিতার হিসেবে বিবেচিত হয়, সেই দম্ভকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।

সূত্র: রয়টার্স

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।