অবশেষে বিল পাস করে শাটডাউন এড়ালো যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:১২ পিএম, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
ছবি: এএফপি

অবশেষে গুরুত্বপূর্ণ অর্থ বিল পাস করে শাটডাউন এড়াতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়ার পর ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত সিনেটেও বিলটি পাস হয়েছে। এখন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্বাক্ষর করলেই বিলটি চূড়ান্ত হবে। খবর বিবিসির।

যদিও এই বিলটিতে সংশোধনী আনতে প্রস্তাব দিয়েছিলেন মার্কিন সিনেটর র‍্যান্ড পল। নতুন এই বিলটি পাস না হলে শনিবার থেকে শাটডাউনের মুখে পড়তো মার্কিন ফেডারেল সরকার। শাটডাউনে পড়লে কিছু জরুরি সেবা বাদে অন্য সেবা খাতের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেত। এতে অনেক সরকারি কর্মীর বেতন পর্যন্ত বন্ধ হওয়ার শঙ্কা ছিল।

বড়দিন এবং ইংরেজি নববর্ষের ছুটির মুখে লাখ লাখ মার্কিনির দুর্ভোগের কারণ হয়ে উঠতে পারতো ফেডারেল গভর্নমেন্ট শাটডাউন। এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বানের পরও প্রতিনিধি পরিষদে শাটডাউন এড়াতে আনা সংশোধিত বিল পাসে ব্যর্থ হয় রিপাবলিকানরা। এমনকি দলটির কিছু প্রতিনিধিও বিলের বিপক্ষে ভোট দেন। এই বিল পাসে সংসদের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন প্রয়োজন ছিল।

বিল কীভাবে আইনে পরিণত হয়?

তৃতীয় দফা চেষ্টার পর প্রতিনিধি পরিষদে শাটডাউন রোধে অর্থ বিলটি পাস করার পরও শাটডাউন রোধে মার্কিন সিনেটরদের অনুমোদনের প্রয়োজন ছিল। একজন সিনেটর আপত্তি তুললেও শেষ পর্যন্ত অনুমোদন মিলেছে।

নিয়ম অনুযায়ী, এই বিলটি আইনে পরিণত করতে হলে কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদ এবং সিনেট উভয় জায়গা থেকেই অনুমোদন পেতে হয়। পরে সেটিতে প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষর করতে হয়।

মেয়াদ শেষে আগামী ২০ জানুয়ারি জো বাইডেন হোয়াইট হাউজ ত্যাগ করবেন। বিলটি পাসের পর রাতে হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা এই আইনটি সমর্থন করেন। এতে আরও বলা হয়, যদিও ডেমোক্র্যাটদের সিনেটে খুব অল্প সংখ্যাগরিষ্ঠতা। তবুও এই বিলকে আটকে দেওয়া বা ধীরগতির জন্য একজন সিনেটরের আপত্তিই যথেষ্ট।

মার্কিন ফেডারেল সরকারের শাটডাউন এড়াতে আনা এই বিলটির বিরোধিতা করেছিলেন রিপাবলিকান সিনেটর র‍্যান্ড পল। তবে এর পেছনে কিছু কারণ সামনে এনে তিনি তার যুক্তিও তুলে ধরেন। যুক্তরাষ্ট্রে পল স্পষ্টবাদী হিসেবে পরিচিত। তিনি এই বিলের বিরোধিতা প্রস্তাব নিয়ে মার্কিন সিনেটে যান। আপত্তি জানিয়ে বলেন, এই বিলে এমন কিছু ব্যয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যেটি পাস হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরও বেশি ঋণের ফাঁদে পড়বে।

পল যুক্তি দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত যে, এই বিল পাস হলে এটি ইউক্রেনকে অর্থায়নে সহযোগিতা করবে কি না কিংবা ভবিষ্যতে অন্য কোনো সমস্যা তৈরি হবে কি না সেটা বিবেচনা করেই নতুন তহবিল পাসের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

বিলটি নিয়ে যা যা হলো

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলেও রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও পদে বসেননি। তিনি আগামী ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন। রাষ্ট্রীয় এই অর্থ বিলটির পক্ষে ভোট দিতে ট্রাম্প প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের আহ্বানও জানিয়েছিলেন। তবে রিপাবলিকান কিছু কট্টরপন্থি সদস্য ট্রাম্পের এই আহ্বানে সাড়া দেয়নি। তারা এই বিলের পক্ষে সমর্থন দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার মধ্যরাতে সরকারি তহবিলের মেয়াদ শেষ হবে। বিলটি পাস হওয়ায় তা তহবিল জোগানোর মেয়াদ বাড়াবে। একই সঙ্গে তা ঋণের সীমা (ঋণ নেওয়ার সর্বোচ্চ পরিমাণ) স্থগিত করবে। মার্কিন আইনপ্রণেতারা যদি এই অর্থ বিলটি পাসে ব্যর্থ হতেন তবে সরকারের কার্যক্রম আংশিক শাটডাউনে চলে যেতো।

টিটিএন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।