সিরিয়ায় একের পর এক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কসহ বিভিন্ন স্থানে শতাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মূলত দেশটির বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব বিমান হামলা চালানো হচ্ছে। এমনকি, আসাদ সরকারের পতনের পর গোলান মালভূমির সিরিয়া-নিয়ন্ত্রিত এলাকা ‘দখলে’ নিয়েছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দাবি, বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর চরমপন্থিদের নিষ্ক্রিয় ও তেল আবিবের নিরাপত্তা নিশ্চিতেই তারা এসব পদক্ষেপ নিয়েছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলের এমন হামলা ও গোলান মালভূমির সিরিয়া-নিয়ন্ত্রিত এলাকা ‘দখলে’ নেওয়ার নিন্দা জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার, সৌদি আরব ও ইরাক।
আরও পড়ুন:
- আসাদের পতন মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য বদলে দেবে?
- দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন বাশার আল-আসাদ
- সিরিয়ায় আইএসের ৭৫ ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা
- বাশার আল-আসাদের বাবার ভাস্কর্য ভেঙে ফেললো বিদ্রোহীরা
ইসরায়েলি নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বাশার আল-আসাদের পতনের পর ইসরায়েলি বাহিনী নিজেদের ইতিহাসে সিরিয়ায় সবচেয়ে বড় হামলা চালিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রটি ইসরায়েলি আর্মি রেডিওকে জানিয়েছে, গত দুইদিনে রাজধানী দামেস্কসহ সিরিয়ায় ২৫০টিরও বেশি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সিরিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় লাতাকিয়া বন্দরের কাছে একটি বিমান প্রতিরক্ষা ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায় তেল আবিব। রাজধানী দামেস্কেও শোনা যায় বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাছে একটি গ্রামে ৪টি বিমান হামলা চালানো হয়। এছাড়া, দামেস্কের কাছে অবস্থিত ৩টি সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ঘাঁটিগুলো পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, গোলান মালভূমির সিরিয়া-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ইসরায়েলি অনুপ্রবেশকে একটি ‘বিপজ্জনক পদক্ষেপ’ ও সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের ওপর নির্লজ্জ আক্রমণ, পাশাপাশি এটিকে দোহা আন্তর্জাতিক আইনের ‘স্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে মনে করে।
আরও পড়ুন:
- দামেস্কে আসাদের বাসভবন থেকে যে যা পারছেন নিয়ে যাচ্ছেন
- সিরিয়ায় এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধ যেভাবে শেষ হলো
সৌদি আরবও ইসরায়েলি পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে। দেশটি বলেছে, ইসরায়েলের এমন আচরণ আন্তর্জাতিক আইনের ক্রমাগত লঙ্ঘন ও সিরিয়ার নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনাকে দূরে ঠেলে দিতে পারে।
অন্যদিকে বাগদাদ ইসরায়েলের এসব কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বলেছে, তেল আবিব আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন করেছে।
১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েল গোলান মালভূমির একটি অংশ দখল করে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত ঘোষণা করে। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এটিকে সিরীয় ভূখণ্ডের বেআইনি দখল বলে বিবেচনা করে।
সূত্র: রয়টার্স, আল জাজিরা
এসএএইচ