আলু-পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সরব হলেন মমতা
পশ্চিমবঙ্গের শীত একদম দোরগোড়ায়। জাঁকিয়ে শীত পড়ার আগেই রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে শাঁক-সবজির দর উর্ধ্বমুখী। বেড়েছে আলু-পেঁয়াজের দামও। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। এসব পণ্যের দামে রাশ টানতে ময়দানে নামলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বাজারদর নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সচিবালয় নবান্নে সভাঘরে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৈঠক শেষে তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের আলুর দাম বাড়িয়ে অন্য জায়গা থেকে মুনাফা লুটবে, আর আমি চাষিদের জন্য ইনস্যুরেন্সের ব্যবস্থা করবো, দুটো একসঙ্গে চলতে পারে না। এগুলো আমি বরদাশত করবো না।
আরও পড়ুন>>
- বাংলাদেশকে বাদ রেখেই শুরু হচ্ছে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা?
- বাংলাদেশে মমতা ব্যানার্জীর সরকার চলছে, দাবি ভারতের প্রতিমন্ত্রীর
- বাংলাদেশিদের অভাবে ক্ষতির মুখে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন শিল্প
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি তো পশ্চিমবঙ্গ থেকে আলু ছাড়ছিলামও। কিন্তু কী বলেছিলাম? রাজ্যের প্রয়োজন মিটিয়ে বিক্রি করুন, আমার তাতে কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু কী দেখলাম? পশ্চিমবঙ্গে আলুর দাম বাড়িয়ে ভিন রাজ্যে পাঠিয়ে বাড়তি মুনাফা লুটার চেষ্টা। এটা বরদাশত করবো না। পশ্চিমবঙ্গের আলু সীমান্ত দিয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে। দালালরা সমাজকে শেষ করে দিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে আলুর দাম বাড়িয়ে মুনাফা বাড়ানো চলবে না। অ্যান্টি-করাপশন ব্যুরোকে শক্তিশালী হতে হবে।
মমতা বলেন, আমি রাজ্যে পেঁয়াজ উৎপাদন শুরু করেছিলাম। রাজ্যে পেঁয়াজ হতো না, সব নাসিক থেকে আসতো। সেই আমার খাওয়ার পেঁয়াজ বাইরে চলে যাবে! রাজ্যে ৭৫ শতাংশ পেঁয়াজ উৎপাদন করেছিলাম।
এদিন রাজ্যের আলু ও পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে দ্রুত টাস্কফোর্সের মিটিং ডাকারও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশপাশি, অবিলম্বে সীমান্ত সিল করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এদিনের বৈঠকে রাজ্য পুলিশের একাংশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তিনি বলেন, নিচু তলার কিছু কর্মী এবং পুলিশের কিছু লোক, যারা সরকারকে ভালোবাসে না, তারা শুধু নিজেদের স্বার্থটা দেখে। পুলিশ আর সিআইএসএফ-এর কিছু লোক চুরি করছে। টাকা খেয়ে বালি-কয়লা চুরি করছে।
মমতা বলেন, এবার থেকে জায়গায় জায়গায় টেন্ডার করতে হবে। দুর্নীতি করলে আমি বাঁচাবো না। আমি সিআইডির খোলনলচে বদলে দেবো। জায়গায় জায়গায় নাকা চেকিং করা উচিত। এটা কম্পালসরি করতে হবে। সিআইএসএফ টাকা খেলে আইনত পদক্ষেপ নিতে হবে। রাজনৈতিক নেতা টাকা নিলে বরদাশত করা হবে না। আমি ভোটের সময় আঁচল পেতে ভোট চাইবো, আর কিছু লোক দুর্নীতি করবে, তা মেনে নেবো না।
এসময় জাল টাকা নিয়েও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা ব্যানার্জী বলেন, একটি জামতারা গ্রুপ আছে, যেটা নিয়ে সিনেমা হয়েছিল। চক্রটা ঝাড়খণ্ড, বিহার এই সব জায়গা নিয়ে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়া থেকে তারা আসছে। বিভিন্ন শপিং মলে এসে তারা আড্ডা মারছে। ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করছে, অপারেশন করছে। কোথাও না কোথাও গেস্টহাউসে ভাড়াও নিচ্ছে। অনেক সময় সাংবাদিকদের সঙ্গেও মিশছে। আমি এখন থেকে শপিং মলগুলোকে সাবধান হওয়ার আবেদন জানাবো। আমরা কিছু কিছু জায়গায় অভিযোগ পেয়েছি, যেখানে ফেক কারেন্সি আসছে।
ডিডি/কেএএ/