মণিপুরে পুলিশের গুলিতে বিক্ষোভকারী নিহত, বিজেপি-কংগ্রেসের অফিসে আগুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৪৪ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০২৪
রোববার (১৭ নভেম্বর) মণিপুরের জিরিবাম জেলায় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায় পুলিশ/ ছবি: সংগৃহীত

ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর। রোববার (১৭ নভেম্বর) রাজ্যটির জিরিবাম জেলায় উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে চালানো পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন এক যুবক। তাছাড়া আগুন দেওয়া হয়েছে বিজেপি ও কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, রোববার জিরিবাম জেলার বাবুপাড়া এলাকায় উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায় পুলিশ। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন এক যুবক। সেই সঙ্গে আহত হন আরেকজন।

এদিকে, ওইদিন জিরিবাম থানার পাশেই অবস্থিত বিজেপি ও কংগ্রেসের দুটি দলীয় দপ্তরে আগুন লাগিয়ে দেয় আন্দোলনরত ছাত্রজনতা। এসময় দুই দলের দপ্তরে ঢুকে চেয়ার-টেবিল ও অন্যান্য আসবাবপত্রে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে রাজধানী ইম্ফলেও বিজেপির দপ্তরে ভাঙচুর চালিয়েছিল উত্তেজিত ছাত্রজনতা।

গত সপ্তাহের সোমবারে জিরিবামের আসাম সীমানা লাগোয়া অঞ্চল থেকে ছয়জনকে অপহরণ করা হয়। অভিযোগের তীর ছিল খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী কুকি গোষ্ঠীর দিকে। কয়েকদিন পর ওই ছয়জনের মরদেহ নদীতে ভেসে ওঠে। আর তা নিয়েই নতুন উত্তেজনা শুরু হয়।

নদীতে মরদেহ পাওয়ার পর থেকেই বিক্ষোভ করতে শুরু করে হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জাতিগোষ্ঠীর লোকজন। শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে রাজ্যের ছয় বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। এমনকি, ইম্ফল পূর্ব জেলার লুয়াংশাংবামে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের পৈত্রিক বাড়িতেও হামলার চেষ্টা করে তারা।

অন্যদিকে, রোববারও জিরিবাম জেলার জিরি নদীতে মরদেহ ভাসতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে একটি ছিল ষাটোর্ধ্ব নারীর মরদেহ ও অপরটি একটি শিশুর। রোববারই মেইতেই গোষ্ঠী মণিপুর সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা না হলে বিক্ষোভ আরও তীব্রতর হবে।

একপর্যায়ে রোববার রাত থেকে জিরিবাম জেলায় একের পর এক সহিংসতার ঘটনা ঘটতে থাকে। সহিংসতার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত ২৫ জনকে গ্রেফতার করেছে মণিপুর পুলিশ। তারা সবাই ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম ও বিষ্ণুপুর এলাকার বাসিন্দা। রাজধানী ইম্ফল-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় জারি করা হয়েছে কারফিউ। বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও।

কারফিউয়ের মধ্যেই রোববার রাতে জিরিবামের অন্তত পাঁচটি গির্জা, স্কুল, পেট্রল পাম্প এবং বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। কোথাও কোথাও অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগও উঠেছে।

২০২৩ সালের মে মাসে কুকি ও মেইতেই উপজাতির মধ্যে দাঙ্গা শুরু হয়। কয়েক মাস পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও রাজ্যটি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। মূলত উপজাতিদের জন্য নির্ধারিত কোটা নিয়ে এই সংঘাত শুরু হয়েছিল।

সূত্র: এনডিটিভি, ইন্ডিয়া ‍টুডে এনই

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।