ইরানে শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মানবাধিকার কর্মীর আত্মহত্যা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:২৫ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২০২৪
ইরানের মানবাধিকার কর্মী কিয়ানোশ সানজারি/ ছবি: সংগৃহীত

ইরানের একজন সুপরিচিত মানবাধিকার কর্মী দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আত্মহত্যা করেছেন। সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে কিয়ানোশ সানজারি জানান যে, বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার মধ্যেই চার রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি না দিলে তিনি আত্মহত্যা করবেন।

ওই পোস্টের ঘণ্টাখানেক পরেই তার সহকর্মীরা জানান যে, তিনি মারা গেছেন। মৃত্যুর আগে তিনি একটি পোস্টে লিখেছেন যে, তিনি আশা করছেন একদিন ইরানিরা জেগে উঠবে এবং দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙ্গে বেরিয়ে আসবে।

সানজারি ছিলেন ইরানি নেতাদের কড়া সমালোচক এবং প্রবলভাবে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একজন মানুষ। মৃত্যুর আগে তিনি বলে গেছেন যে, কারও মতপ্রকাশের জন্য তাকে বন্দী করা উচিত নয়। প্রতিবাদ করা প্রতিটি ইরানি নাগরিকের অধিকার।

বুধবার সকালে তিনি এক পোস্টে লিখেছিলেন, আজ (বুধবার) সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে যদি ফাতেমে সেপেহরি, নাসরিন শাকরামী, তোমাজ সালেহি এবং আরশাম রেজায়ীকে মুক্তি দেওয়া না হয় তাহলে আমি খামেনি ও তার সহযোগীদের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে আত্মহত্যা করবো।

মাশা আমিনির মৃত্যুর পর সমগ্র ইরানজুড়ে নজিরবিহীন বিক্ষোভ হয়েছিল। সেই বিক্ষোভে সমর্থন জানানো এবং বিক্ষোভের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে ওই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

মাশা আমিনি ছিলেন ২২ বছর বয়সী এক নারী, যিনি ২০২২ সালে ইরানের নৈতিকতা রক্ষার দায়িত্বে থাকা পুলিশ বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর মারা যান।

এর আগে ১৯৯৯ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সময়ের মাঝে নিজের রাজনৈতিক সক্রিয়তার জন্য সানজারি বারবার গ্রেফতার হন এবং কারাবরণ করেন। এরপর শেষ পর্যন্ত ২০০৭ সালে তিনি ইরান ছড়ে নরওয়েতে আশ্রয় গ্রহণ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভয়েস অব আমেরিকার পার্সিয়ান বিভাগে যোগ দেন।

কিন্তু ২০১৬ সালে তিনি তার বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকার জন্য ইরানে ফেরত আসলে তাকে গ্রেফতার করা হয় ও দেশটির ইভিন কারাগারে ১১ বছরের জন্য কারাবাসের আদেশ দেওয়া হয়। ইরানের তাজরিশে অবস্থিত ওই কারাগারে প্রধানত রাজনৈতিক বন্দিদের রাখা হয়।

তবে ২০১৯ সালে তিনি চিকিৎসার কারণে জামিনে মুক্তি পান এবং পরবর্তীতে একটি মনোরোগ হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি স্থানীয় গণমাধ্যমের কাছে বলেছিলেন যে, তাকে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়েছিল এবং একটি বিছানায় শিকলবন্দী করে রাখা হয়েছিল। সে সময় তার শরীরে বিভিন্ন পদার্থ ইনজেক্ট করা হয়েছিল।

এদিকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা মানবাধিকার কর্মী হোসেইন রোনাগি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলেন কিয়ানোশ সানজারি শুধু একটি নাম নয়। এটি বছরের পর বছর ধরে চলমান দুর্দশা, প্রতিরোধ ও স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রতীক।

টিটিএন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।