পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলায় ৪ সেনা, ২ স্কুলছাত্র নিহত
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পৃথক সন্ত্রাসী হামলায় চারজন সেনা সদস্য ও দুইজন স্কুলছাত্র নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ কর্মকর্তা দিলাওয়ার খান জানান, এদিন দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়ি লক্ষ্য করে রাস্তার পাশে পুতে রাখা বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে চার সেনা সদস্য নিহত ও পাঁচজন আহত হন।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিস্ফোরণের পর নিরাপত্তা বাহিনীর পাল্টা অভিযানে পাঁচজন ‘খারেজি’ নিহত হয়েছে। সামরিক বাহিনী পাকিস্তানি তালেবানকে খারেজি হিসেবে উল্লেখ করে থাকে।
আরও পড়ুন>>
তবে এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি। যদিও ধারণা করা হচ্ছে, তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এই হামলার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে পাকিস্তানে টিটিপির হামলা বেড়েছে।
পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ সেনা সদস্যদের মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তানের যুদ্ধ চলমান থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এদিকে, একই দিনে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের তিরাহ উপত্যকায় একটি মর্টার শেল বিস্ফোরণে দুজন স্কুলছাত্র নিহত হয়েছেন। স্থানীয় পুলিশের তথ্যমতে, তারা পায়ে হেঁটে স্কুলে যাওয়ার সময় মর্টারের আঘাতে প্রাণ হারান।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানি তালেবান বহু বছর ধরে সরকারের পতন ঘটিয়ে কঠোর ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পাকিস্তান ও তার নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে। গত বছর সরকারের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফেলার পর থেকে টিটিপি হামলার মাত্রা আরও বাড়িয়েছে।
পাকিস্তান প্রায়ই অভিযোগ করে থাকে, আফগানিস্তানের সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে। কিন্তু কাবুলের শাসকরা তাদের নির্মূল করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
গত মাসে পাকিস্তানের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলায় ১০ জন পুলিশ সদস্য নিহত হন। সেই হামলার দায় স্বীকার করে টিটিপি।
পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (পিআইসিএসএস) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের প্রথম ১০ মাসে পাকিস্তানে ৭৮৫টি সশস্ত্র হামলায় ৯৫১ জন নিহত ও ৯৬৬ জন আহত হয়েছেন।
সূত্র: আল জাজিরা
কেএএ/