আর জি কর কাণ্ড

কলকাতায় ১৭ দিন পর অনশন প্রত্যাহার করলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা

পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি কলকাতা
প্রকাশিত: ০২:৪১ পিএম, ২২ অক্টোবর ২০২৪
টানা ১৭ দিন অনশন করার পর অনশন ভাঙেন জুনিয়র চিকিৎসকরা

কলতাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর খুনের বিচার ও দশ দফা দাবিতে লাগাতার অনশন প্রত্যাহার করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সোমবার (২১ অক্টোবর) পশ্চিমবঙ্গের সচিবালয় নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীরর সঙ্গে বৈঠক করেন জুনিয়র চিকিৎসকেদের একটি প্রতিনিধি দল। প্রায় ২ ঘণ্টা বৈঠক শেষে জুনিয়র চিকিৎসকেরা জানান, তারা আমরন অনশন প্রত্যাহার করলেন।

টানা ১৭ দিন অনশন করার পর ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসকের বাবা-মা’র অনুরোধে ও জনগনের ইচ্ছায় সোমবার রাতে নিজ পরিবারের সদস্যদের হাতে গ্লুকোজ মেশানো পানি পান করে অনশন প্রত্যাহার করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। যদিও তারা স্প্ষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, অনশন প্রত্যাহার করেলেও রাজপথের আন্দোলন থেকে সরছেন না।

গত ৫ অক্টোবর থেকে ধর্মতলায় আমরণ অনশনে বসেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এর পাশাপাশি সমানতালে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকেরাও অনশন করছিলেন। সোমবার রাতে তারাও সেই অনশন প্রত্যাহার করে নেন। পরে শারীরিক অবস্থা পরীক্ষার জন্য অনশনকারীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

জানা গেছে, রাজ্য সচিবালয়ে বৈঠক চলাকালে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের অপসারণের দাবি রাখেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যনার্জী তাদের ওই দাবি বৈঠকের শুরুতেই নাচক করে দেন। স্বাস্থ্য সচিবকে অভিযুক্ত বলা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিরোধ হয় চিকিৎসকদের। যুক্তি, পাল্টা যুক্তিতে সরগরম ছিল নবান্নের সভাঘর।

বৈঠকে জুনিয়র চিকিৎসকদের অন্যতম মুখ ছিলেন দেবাশীষ হালদার। তিনি বলেন, প্রশাসনের শারীরিক ভাষা আমাদের কাছে ইতিবাচক মনে হয়নি। আমাদের একটি ব্যাচকে পরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমরা জানি, তিনি (মুখ্যমন্ত্রী) সবই জানেন। আমরা মিটিংয়ে সন্তুষ্ট নই।

জুনিয়র চিকিৎসকরা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী হুমকি দিয়ে বলেছেন, তাকে না জানিয়েই কেন মনিটরিং কমিটি গঠন করা হলো? যারা সেখানে ছিলেন, এমনকি আর জি করের অধ্যক্ষকেও চুপ করিয়ে দেওয়া হয়। আমাদের রীতিমতো থ্রেট দেওয়া হয়েছে। পুরোটাই আইওয়াশ। স্বাস্থ্য সচিবকে নিয়ে আমাদের কোনো কথা শোনা হয়নি।

তারপরও কেন অনশন প্রত্যাহার করলেন- এই প্রশ্নের জবাবে দেবাশীষ হালদার, অনশনকারীদের সঙ্গে দেখা করতে ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসকের মা-বাবা এসেছিলেন। তারা বলেন, তারা চান না, আর কোনো অভিভাবক তাদের সন্তান হারাক। সাধারণ জনগণও আমাদের পাশে রয়েছে। আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। প্রতিজ্ঞা রাখছি, সম্মান রেখে আমাদের লড়াইকে আরও তীব্রতর করার।

এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বলেছেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) পুরো ঘটনার তদন্ত করছে। আর যেসব বিষয় ভারতের সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন, সেসব বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না। জুনিয়র চিকিৎসকদের ১০ দফা দাবির বিষয়ে, পশ্চিমবঙ্গ মেডিকেল কাউন্সিল ও পশ্চিমবঙ্গ হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগগুলোর তদন্ত দ্রুত শুরু করা হবে।

ডিডি/এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।