আইনজীবী থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলার বর্ণিল জীবন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৪৫ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০২৪
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস/ ছবি: এএফপি

আইনজীবী থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছেন কমলা হ্যারিস। আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার তীব্র লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড় থেকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরে দাঁড়ানোর পর নতুন প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিসের নাম ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনী হাওয়া বদলে যেতে শুরু করে। খবর বিবিসির।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চলতি বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে সামিল হয়েছেন কমলা হ্যারিস। তার নির্বাচনী প্রচারণা উদারপন্থি ভোটারদের পুনরুজ্জীবিত করেছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হ্যারিসের প্রচারণা তহবিলে জমা পড়েছে ৬৭.১ কোটি ডলার অনুদান, যা তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংগ্রহের প্রায় তিনগুণ।

প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর এই দৌড়ে হ্যারিসের রয়েছে ঘটনাবহুল ও বর্ণিল সফরের গল্প। হ্যারিসের বেড়ে ওঠা, তার কর্মজীবন, রাজনীতিতে প্রবেশ, উল্লেখযোগ্য ঘটনাপ্রবাহ এবং কীভাবে তিনি প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হলেন সে বিষয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হলো এই প্রতিবেদনে-

ব্যক্তি জীবন
কমলা হ্যারিস ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ডে অভিবাসী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং বাবা জ্যামাইকান আমেরিকান। কমলার যখন পাঁচ বছর বয়স, তখন তার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তারপর মূলত মা শ্যামলা গোপালন হ্যারিসের কাছেই বড় হন তিনি।

হ্যারিস জানিয়েছেন, তাকে এবং তার ছোট বোন মায়াকে ওকল্যান্ডের কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের মাঝেই বড় করে তুলেছিলেন তার মা যিনি একজন ক্যান্সার গবেষক এবং নাগরিক অধিকার কর্মী ছিলেন।

তার আত্মজীবনী ‘দ্য ট্রুথস উই হোল্ড’-এ তিনি লিখেছেন, আমার মা খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পেরেছিলেন তিনি দুজন কৃষ্ণাঙ্গ মেয়েকে লালন পালন করছেন। তিনি জানতেন যে, তার নতুন দেশ মায়া এবং আমাকে কৃষ্ণাঙ্গ মেয়ে হিসাবে দেখবে এবং আমরা যাতে আত্মবিশ্বাসী, গর্বিত কৃষ্ণাঙ্গ নারী হয়ে উঠি তা নিশ্চিত করতে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন।

শ্যামলা গোপালন হ্যারিস ভারতীয় ছিলেন। তার আদি বাড়ি ভারতের তামিলনাড়ুতে। ১৯৫৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি। কমলা হ্যারিস হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। ছাত্রাবস্থা থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ এবং যুক্তরাষ্ট্রে জাতিগত সম্পর্কের মতো রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে তিনি সোচ্চার হতে থাকেন। তার কর্মজীবনও বেশ সফল।

কমলা হ্যারিসের স্বামী আইনজীবী ডাগ এমহফ। তার সঙ্গে একটি ব্লাইন্ড ডেটে আলাপ হয়েছিল কমলার। ২০১৪ সালে বিয়ে করেন তারা।

পারিবারিক জীবন সম্পর্কে কমলা হ্যারিস এলি ম্যাগাজিনকে বলেছিলেন, রোববারের নৈশভোজ আমাদের কাছে পারিবারিক সময়। কোল টেবিল সেট করে এবং সংগীত বাছাই করে। এলা ডেসার্ট (মিষ্টান্ন) তৈরি করে, ডাগ আমার স্যুস-শেফ হিসাবে কাজ করে এবং আমি রান্না করি।

কর্মজীবন
আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন কমলা হ্যারিস। আলামেডা কাউন্টির ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নির দফতরে কর্মরত ছিলেন তিনি। এরপর সান ফ্রান্সিসকোর ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি হিসেবে কাজ করেছেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে আমেরিকার সবচেয়ে জনবহুল রাজ্যে শীর্ষ আইনজীবীর দায়িত্বও পালন করেছেন কমলা হ্যারিস। তিনিই প্রথম নারী এবং প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি যিনি এই পদে দায়িত্ব সামলেছেন।

তার এই সাফল্য ২০১৬ সালের ক্যালিফোর্নিয়ার সিনেটর নির্বাচনের প্রচারে গতি আনে এবং তার বিজয় নিশ্চিত করে। ২০২০ সালে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হওয়ার জন্য প্রচারণা চালান তিনি। কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়েই সেই দৌড় থেকে বেরিয়ে যান।

শুরুর দিকে তার প্রচারণা সভাগুলোতে বিপুল জনসমাগম ও বিতর্ক অনুষ্ঠান সরগরম হওয়া সত্ত্বেও কমলা হ্যারিস তার মতাদর্শ ও নীতিনির্ধারণী প্ল্যাটফর্ম স্পষ্ট করতে পারেননি। অল্প সময়ের মধ্যেই তার সেই প্রচারণা গতি হারিয়ে ফেলে। তাকে স্পটলাইটে ফিরিয়ে আনেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

কমলা হ্যারিসের সাবেক কমিউনিকেশন ডিরেক্টর গিল ডুরান একে ‘ভাগ্যের বড় পরিবর্তন’ বলে অভিহিত করেছেন। তার কথায়, অনেকেই ভাবেননি যে এত তাড়াতাড়ি হোয়াইট হাউজের কোনো পদে আরোহণ করার জন্য যে শৃঙ্খলা এবং মনোযোগের প্রয়োজন, সেটা তার মধ্যে রয়েছে... যদিও তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং তারকা হয়ে ওঠার সম্ভাবনার বিষয়ে মানুষ জানতেন। তার মধ্যে যে প্রতিভা রয়েছে সেটা সবসময় স্পষ্টই ছিল।

রাজনীতিতে প্রবেশ
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হওয়ার পরই জো বাইডেন তার রানিং মেট হিসেবে কমলা হ্যারিসকে বেছে নেন। তার সম্পর্কে বাইডেন বলেছিলেন, কমলা স্মার্ট, শক্ত, অভিজ্ঞ এবং একজন প্রমাণিত যোদ্ধা। একসঙ্গে তারা ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার রানিং মেট মাইক পেন্সকে পরাজিত করেন।

কমলা হ্যারিসকে বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারের সময় পেছনের আসনে দেখা গেলেও এই সাফল্যে একজন নারী এবং কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিত্ব হিসেবে তার বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হয়। এর কারণ হলো কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের ভোটের ৯০ শতাংশ তাদের ঝুলিতে ছিল।

ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন
২০২০ সালে কমলা হ্যারিস প্রথম নারী, প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ এবং প্রথম এশিয়ান মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট হয়ে ইতিহাস তৈরি করেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছিলেন, কক্ষে কমলার কথাই শেষ কথা হবে। তিনি প্রচলিত অনুমানকে চ্যালেঞ্জ করবেন এবং কঠিন প্রশ্ন জিজ্ঞাসাও করবেন।

২০২১ সালের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিকিৎসার কারণে মেডিক্যাল পরীক্ষা করাতে হয়। সে সময় ৭৫ মিনিটের জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় ছিলেন কমলা হ্যারিস।

মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলা হ্যারিস মার্কিন সিনেটেরও প্রেসিডেন্ট। বিল পাসের ক্ষেত্রে ভোট টাই হয়ে গেলে তিনি ভোট দিতে পারেন। তার সেই ক্ষমতা ৩২ বার ব্যবহার করে নজির গড়েছেন তিনি। মার্কিন ইতিহাসে অন্য কোনো ভাইস প্রেসিডেন্ট এতবার ওই ক্ষমতা ব্যবহার করেননি।

তার বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস আইন, আমেরিকান রেসকিউ প্ল্যান পাশে সহায়তা করেছিলেন যা কোভিডের সময় আর্থিক সহায়তা এবং অন্যান্য ত্রাণ সরবরাহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। হোয়াইট হাউজে থাকাকালীন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসীর ঢলের আবহে অভিবাসন সঙ্কট মোকাবিলা করার দায়িত্ব হ্যারিসকে দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

এটা এমন একটা ইস্যু যাকে কেন্দ্র করে বিরোধীরা তাকে প্রায়ই কটাক্ষ করে থাকে। তার কারণ এই উদ্যোগে তেমন একটা অগ্রগতি দেখা যায়নি এবং ক্ষমতায় আসার পর সীমান্তে যাওয়ার পরিকল্পনা করতেই ছয় মাস সময় লেগে গিয়েছিল ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের। একে কেন্দ্র করে রিপাবলিকান তো বটেই ডেমোক্র্যাটদের অনেকেও তার সমালোচনা করতে ছাড়েননি।

গর্ভপাতের অধিকারের গ্যারান্টি দেওয়া অর্ধ শতাব্দী ধরে চলে আসা অধিকারের ওপর ২০২২ সালে নিষেধাজ্ঞার ফলে যে নেতিবাচক প্রভাব দেখা গিয়েছে সে বিষয়ে বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে তুলে ধরার দায়িত্ব পালন করছেন কমলা হ্যারিস।

আগস্টে ডেমোক্র্যাটিক কনভেনশনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল প্রজননের অধিকার সংক্রান্ত ইস্যু। এই প্রসঙ্গে কনভেশনে যে বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল তা হলো- স্বাধীনতা।

সেখানে তার ভাষণে দেশজুড়ে গর্ভপাতের সুযোগ সীমিত করার প্রচেষ্টার স্থপতি হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রিপাবলিকানদের কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন কমলা হ্যারিস।

ফাইভ থার্টিএইটের একটি জনমত জরিপের গড় অনুসারে, ভাইস প্রেসিডেন্টের ভূমিকায় কমলা হ্যারিসের পক্ষে অনুমোদন সব সময় কমই ছিল। তাদের জনমত জরিপ অনুযায়ী, ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার পারফরম্যান্সের নিরিখে ৫১ শতাংশ আমেরিকান তার বিপক্ষে ভোট দিয়েছে আর পক্ষে ভোট দিয়েছে ৩৭ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রে বিবিসির বিশেষ সংবাদদাতা ক্যাটি কে বলেছেন, এমনটা হওয়ার কারণ প্রেসিডেন্ট বাইডেন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলা হ্যারিসকে যে দায়িত্ব দিয়েছিলেন তা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্ত জুড়ে অভিবাসন হ্রাস করার। তবে তিনি এই সমস্যা সমাধান করতে মূলত ব্যর্থ হয়েছেন।

বাইডেনের পরিবর্তে নির্বাচনী লড়াই
গত জুনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মুখোমুখি হওয়া একটি বিতর্ক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের পারফরম্যান্স ভালো না হওয়ার পর থেকে তার ওপর নির্বাচনী দৌড় থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য চাপ বাড়তে থাকে। ইউএস হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস বা মার্কিন প্রতিনিধি সভার পাঁচ ডেমোক্র্যাট সদস্য ৮১ বছর বয়সী জো বাইডেনকে নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড় থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা বলেন।

এই আবহে টিম রায়ান, ওহাইইয়োর একজন প্রতিনিধি বাইডেনের পরিবর্তে কমলা হ্যারিসের নাম প্রস্তাব করেন। তিনি নিউজউইক ম্যাগাজিনে লিখেছিলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে আমাদের জন্য সেরা পথ হবে কমলা হ্যারিসকে বেছে নেওয়া।

ক্যালিফোর্নিয়ার প্রতিনিধি অ্যাডাম শিফস মনে করেন, কমলা হ্যারিস একজন ‌‌‘অসাধারণ প্রেসিডেন্ট’ হবেন এবং ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্যভাবে জয় লাভ করতে পারবেন।

সাম্প্রতিক জনমত জরিপ অনুযায়ী, কমলা হ্যারিস রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জো বাইডেনের তুলনায় ভালো করতে পারেন। যদিও নির্বাচনী দৌড়ে কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হবেন তিনি।

সিএনএন-এর একটি সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, ৪৩ শতাংশ ভোটার প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার পক্ষে ছিলেন এবং ৪৯ শতাংশ ছিলেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পের পক্ষে। ওই জরিপে জানা যায়, যদি কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেন তাহলে ৪৫ শতাংশ তাকে ভোট দিতেন এবং ৪৭ শতাংশ ট্রাম্পকে সমর্থন করবেন।

নির্বাচনি প্রচারণা এবং গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তার অবস্থান
প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় তার নির্বাচনী প্রচারণা অনেক পরে শুরু করেছেন কমলা হ্যারিস। তবে প্রচারে নেমে প্রথম সমাবেশেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘আক্রমণাত্মক’ ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল কমলা হ্যারিসকে। নভেম্বরের নির্বাচনকে তিনি ‘প্রাক্তন প্রসিকিউটর এবং দোষী সাব্যস্ত অপরাধীর মধ্যে একজনকে বেছে নেওয়ার’ লড়াই হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

জুলাই মাসে তার প্রচারাভিযান শুরুর সময় উইসকনসিনে প্রায় তিন হাজার লোকের জমায়েতে নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে কমলা হ্যারিস হোয়াইট হাউজের দৌড়ে সামিল তার রিপাবলিকান প্রতিপক্ষের সঙ্গে তুলনা করেছেন প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে একসময় মামলা লড়েছিলেন তিনি (কমলা হ্যারিস)।

অন্যদিকে, ভোটারদের কাছে নিজেকে নতুন ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করতে দেখা গেছে কমলা হ্যারিসকে। ২০২০ সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি অভিবাসন, এলজিবিটি অধিকার এবং অন্যান্য ইস্যুতে বামপন্থি ঝোঁকের কথা বলেছিলেন। তবে প্রসিকিউটর হিসেবে তার ব্যাকগ্রাউন্ডের কারণে তাকে আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে।

চার বছর পর, চলতি বছরের নির্বাচনী দৌড়ে কমলা হ্যারিস নিজেকে একজন আইনের শাসক হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন যিনি দোষী সাব্যস্ত হওয়া ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবেন। তবে একইসঙ্গে প্রগতিশীল নীতি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন যা তার পরিবারের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারকে তুলে ধরবে।

কমলা হ্যারিস বলেন, আমার পুরো ক্যারিয়ারে আমি কেবল একজন ক্লায়েন্টকেই পেয়েছি, সেটা হলো- জনগণ। আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়েও কমলা হ্যারিস তার অবস্থান নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেছেন।

সিবিএস নিউজের এক সাক্ষাৎকারে কমলা হ্যারিসকে প্রশ্ন করা হয়েছিল ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের ‘শক্তিশালী মিত্র’ কি না। এর উত্তরে কমলা হ্যারিস বলেন, ইসরায়েলের নেতৃত্বের সঙ্গে আমরা কূটনৈতিকভাবে যে কাজ করছি তা আমাদের নীতি স্পষ্ট করার জন্য একটা চলমান প্রচেষ্টা।

অন্যদিকে ইউক্রেন-রাশিয়া ইস্যু নিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ইউক্রেন আলোচনার টেবিলে না বসলে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বসবেন না।

টিটিএন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।