মার্কিন সমর্থনে লেবাননে ইসরায়েলের স্থল অভিযান, বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:০২ পিএম, ০১ অক্টোবর ২০২৪
দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের নির্বিচার বোমাবর্ষণ। ছবি: এএফপি

লেবাননে ইসরায়েলের স্থল অভিযানে মার্কিন সমর্থন বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ যেখানে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার অধিকার’ সমর্থন করেছে।

সোমবার (১ অক্টোবর) রাতে লেবাননে প্রবেশের দাবি করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, এই অভিযান ‘সীমিত, স্থানীয় এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক’, যা হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে পরিচালিত হচ্ছে।

আরও পড়ুন>>

তবে এই আক্রমণ হিজবুল্লাহসহ ইরান-সমর্থিত অন্যান্য গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘাতের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এতে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলো গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

কিন্তু মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সঙ্গে আলোচনায় ইসরায়েলের স্থল আক্রমণকে সমর্থন করে বলেছেন, লেবাননের দক্ষিণ সীমান্ত থেকে হিজবুল্লাহর অস্ত্র মজুত ও আক্রমণের উপকরণ সরানো দরকার।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ

লেবাননে ইসরায়েলে স্থল অভিযানে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং জাপান। আমিরাত লেবাননের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান লেবাননের জনগণের জন্য জরুরি ত্রাণ হিসেবে ১০ কোটি মার্কিন ডলার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুলাজিজ আল-খুলাইফি এক্স-এ (সাবেক টুইটার) বলেছেন, লেবাননে আক্রমণ আরও বিপর্যয় ডেকে আনবে। তিনি লেবাননের জনগণকে সমর্থন করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এটি একটি নৈতিক দায়িত্ব।

জাপানও ইসরায়েলি আক্রমণ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং সংঘাতের অবিলম্বে সমাপ্তির আহ্বান জানিয়েছে। জাপান সরকার লেবাননে তাদের ৫০ জন নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যও পদক্ষেপ নিয়েছে।

লেবাননের মানবিক সংকট

লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেছেন, তার দেশ ইতিহাসের সবচেয়ে বিপজ্জনক সময় পার করছে। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইসরায়েলি আক্রমণে প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছেন এই লেবানিজ নেতা।

জাতিসংঘ এরই মধ্যে লেবাননের জন্য ৪২ কোটি ৬০ লাখ ডলারের জরুরি সহায়তা তহবিল ঘোষণা করেছে। তবে সংস্থাটির মানবিক সমন্বয়কারী ইমরান রিজা বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধ না হলে কোনো পরিমাণ সহায়তাই যথেষ্ট হবে না।

ইসরায়েলের ‘নর্দান অ্যারোস’ অভিযান

ইসরায়েল ‘নর্দান অ্যারোস’ নামে এই স্থল অভিযান শুরু করেছে, যা ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর লেবাননে প্রথম বড় ধরনের সামরিক অভিযান। ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, এই আক্রমণের উদ্দেশ্য হিজবুল্লাহকে লিটানি নদীর উত্তরে ঠেলে দেওয়া, যা ইসরায়েল-লেবানন সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে।

ইসরায়েল জাতিসংঘের রেজুলেশন ১৭০১ মেনে চলার কথা বললেও, আক্রমণের ফলে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সূত্র: আল-জাজিরা
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।