লেবাননে ইসরায়েলের হামলায় নিহত বেড়ে ৪৯২
ইসরায়েলের বিমান হামলায় লেবাননে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯২ জনে। তাছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১৬৪৫ জন। নিহতদের মধ্যে ২৪ জন শিশু, ৩৯ জন নারী ও দুজন প্যারামেডিক সদস্য রয়েছেন। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে হামলা পালটা হামলা চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে লেবাননের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে বেশ কয়েক দফায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর থেকে হিজবুল্লাহ লেবাননে যত অবকাঠামো তৈরি করেছিল, তা ধ্বংসের অভিযানে নেমেছে ইসরায়েল।
আরও পড়ুন:
- ইসরায়েলের হামলায় লেবাননে নিহত ১০০
- উত্তর ইসরায়েলে হিজবুল্লাহর রকেট-ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
- এবার নিজ দেশের নাগরিকদের ইসরায়েল ছাড়তে বললো চীন
দেশটির সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, এরই মধ্যে হিজবুল্লাহর ১ হাজার ৩০০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। ফলে হাজার হাজার পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
হামলায় বিনতে জবেইল, আইতারুন, মাজদাল সেলেম, হুলা, তোরা, কলাইলেহ, হারিস, নাবি চিত, তারায়া, শ্মেস্টার, হারবাতা, লিবায়া ও সোহমোরসহ কয়েক ডজন শহরকে লক্ষ্য করা হয়েছে।
বেশিরভাগ হামলাই চালানো হয়েছে দক্ষিণ ও পূর্ব লেবাননের আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করে। হামলায় নাবাতিয়েহ ও বেকা উপত্যকা অঞ্চলে বহু বাড়ি, গুদাম ও কারখানায় আগুন ধরে গেছে। লেবানিজ সিভিল ডিফেন্স সদস্যরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সশস্ত্র ইসলামি রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লার প্রধান ঘাঁটি লেবানন। দেশটির সরকারে এই গোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি নেই, তবে ক্ষমতার প্রকৃত নিয়ন্ত্রক তারাই। এই গোষ্ঠীটি ইরানের মদদপুষ্ট।
আরও পড়ুন:
- নিজ নাগরিকদের লেবানন ছাড়তে বললো যুক্তরাষ্ট্র
- মধ্যপ্রাচ্যকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন নেতানিয়াহু: ম্যাক্রোঁ
- ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটিতে হিজবুল্লাহর হামলা
১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় হিজবুল্লাহ। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাত লেগে আছে গোষ্ঠীটির। তবে এর উল্লম্ফণ ঘটেছে গত বছর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে। ওই হামলার পর হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েরের উত্তরাঞ্চলে রকেট-ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া শুরু করে হিজবুল্লাহ। জবাবে ইসরায়েলও সমান তালে হামলা অব্যাহত রাখে।
গত সপ্তাহে লেবাননের সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সদস্যদের ব্যবহার করা হাজার হাজার পেজার ও ওয়াকি-টকিতে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের এই ঘটনায় লেবাননে ৪০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে; যাদের মধ্যে হিজবুল্লাহর অন্তত ১৬ সদস্য রয়েছেন। এই বিস্ফোরণের জন্য ইসরায়েলকে ব্যাপকভাবে দায়ী করছে হিজবুল্লাহ।
সশস্ত্র গোষ্ঠীটির যোগাযোগের যন্ত্রে বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মাঝেই সোমবার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় একাধিক শহরে একযোগে বিমান হামলার ঘটনা ঘটলো।
সূত্র: আল জাজিরা
এসএএইচ