মণিপুরে শান্তি ফেরাতে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সংলাপে বিজেপি সরকার
মণিপুরে স্থায়ীভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার আলোচনা করছে বলে জানিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এছাড়া, অনুপ্রবেশ রোধে মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্তে বেড়া দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) তৃতীয় মেয়াদে মোদী সরকারের ১০০ দিনের সাফল্য নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে অমিত শাহ বলেন, গত সপ্তাহে তিনদিনের সহিংসতা ছাড়া মণিপুরের সামগ্রিক পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার সেখানে শান্তি ফিরিয়ে আনার কাজ করছে। শান্তি বজায় রাখতে আমরা দুই সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলছি। মণিপুরে স্থায়ী শান্তির জন্য আমরা একটি রোডম্যাপও তৈরি করছি।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে ৩০ কিলোমিটার আন্তর্জাতিক সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে ও মোট দেড় হাজার কিলোমিটারের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে।
তিনি বলেন, সরকার ইতিমধ্যেই ভারত-মিয়ানমার ফ্রি মুভমেন্ট রেজিম (এফএমআর) বাতিল করেছে। যা ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি বসবাসকারী লোকদের কোনো নথি ছাড়াই একে অপরের ভূখণ্ডে ১৬ কিলোমিটার প্রবেশের অনুমতি দেয়।
মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল প্রদেশের মধ্য দিয়ে যাওয়া ১ হাজার ৬৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ভারত-মায়ানমার সীমান্তে এফএমআর ছিল। ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির অংশ হিসাবে এটি ২০১৮ সালে কার্যকর করা হয়েছিল।
জাতিগত বৈচিত্রে ভরপুর মণিপুরে গত বছর মে মাস থেকে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে খ্রিস্টান সংখ্যালঘু কুকি জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। ওই মাসে রাজ্যের সংখ্যাগুরু মেইতেই জাতিগোষ্ঠীকে ‘তফসিলি’ জাতি হিসেবে ঘোষণা করে মণিপুর হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে ভারতের সংবিধান অনুসারে সরকারি চাকরি ও ভারতের জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মেইতেইদের জন্য কোটা ব্যবস্থা চালুর নির্দেশও দেন আদালত।
আদালতের এই আদেশে ক্ষুব্ধ হয় রাজ্যটির সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী কুকি এবং সেই দিন থেকেই প্রতিবাদ শুরু হয় রাজধানী ইম্ফলসহ বিভিন্ন এলাকায়। অল্পসময়ের মধ্যেই জাতিগত সংঘাত শুরু হয় মণিপুরে। অব্যাহত এই সহিংসতায় কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের ২২০ জনেরও বেশি মানুষ ও নিরাপত্তা কর্মী নিহত হয়েছেন ও বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ৬০ হাজার মানুষ।
বিগত কয়েক মাস খানিকটা থিতিয়ে এলেও সম্প্রতি ফের তীব্র রূপ নিয়েছে সংঘাত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গত ১০ সেপ্টেম্বর ৫ দিনের জন্য রাজ্যজুড়ে সব ধরনের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রেখেছিল সরকার। গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে অবশ্য ফের স্বাভাবিক হয়েছে ইন্টারনেট।
সূত্র: রয়টার্স
এসএএইচ