সাংহাইয়ে ৭০ বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়ের আঘাত, বিপর্যস্ত জনজীবন
চীনের বাণিজ্যিক শহর সাংহাইয়ে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী টাইফুন বেবিনকা। এটি গত সাত দশকের মধ্যে শহরটিতে আছড়ে পড়া সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় বলে উল্লেখ করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। এই ঝড়ের কারণে বাতিল হয়েছে বহু ফ্লাইট, পিছিয়ে গেছে ট্রেনের শিডিউল।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সাংহাইয়ে আঘাত হানে টাইফুন বেবিনকা। জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার (জেটিডব্লিউসি) বলেছে, তারা এই ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার রেকর্ড করেছে।
আরও পড়ুন>>
- চীনে সুপার টাইফুনের আঘাতে নিহত ২, আহত ৯২
- চীনের পর ভিয়েতনামে সুপার টাইফুনের আঘাত, নিহত ৯
- ভিয়েতনামে টাইফুন ইয়াগির তাণ্ডবে নিহত বেড়ে ২৫৪
তবে চীনের আবহাওয়া প্রশাসন জানিয়েছে, আছড়ে পড়ার সময় টাইফুনের চোখের কাছে বাতাসের গতিবেগ ১৫১ কিমি/ঘণ্টা রেকর্ড করা হয়েছে। এটিকে ১৯৪৯ সালের পর থেকে সাংহাইতে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় হিসেবে বর্ণনা করেছে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।
এর আগে, ঝড়ো হাওয়া, ভারী বৃষ্টিপাত এবং পূর্ব চীনের বিশাল অংশে উপকূলীয় বন্যার আশঙ্কায় লাল সতর্কতা জারি করেছিল স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
চীনে ঐতিহ্যবাহী মুন ফেস্টিভাল উপলক্ষে গত রোববার থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনের জাতীয় ছুটি। এসময় সাধারণত দূরদূরান্তে ভ্রমণে যান পর্যটকেরা। কিন্তু এবার শক্তিশালী ঝড়ের কারণে সেই পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে।
বিরূপ আবহাওয়ায় রোববার রাত ৮টা থেকে সাংহাইয়ের দুটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়। সোমবার শহরটিতে ফেরি চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে বেশ কিছু ট্রেনের লাইন, বন্দর, সেতু এবং মহাসড়ক। সাংহাই ডিজনি রিসোর্টসহ শহরের অনেক পর্যটনকেন্দ্রও বন্ধ রাখা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, রোববার মধ্যরাতের মধ্যে সাংহাইয়ে চার লাখেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। বিভিন্ন প্রদর্শনী কেন্দ্র এবং স্কুল জিমগুলো অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে।
প্রতিবেশী ঝেজিয়াং এবং জিয়াংসু প্রদেশেও অনুরূপ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সিসিটিভির তথ্যমতে, এই অঞ্চলজুড়ে সোমবার পর্যন্ত ১ হাজার ৬০০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
প্রাণঘাতী সুপার টাইফুন ইয়াগির পরে চলতি মাসে চীনে আঘাত হানা দ্বিতীয় বড় ঝড় হলো বেবিনকা। গত ৬ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ ২৩০ কিমি/ঘণ্টা গতিতে আছড়ে পড়া ইয়াগি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অংশে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এতে শুধু চীনেই প্রাণ হারান চারজন।
সূত্র: সিএনএন
কেএএ/