কলকাতায় চিকিৎসক ধর্ষণ-হত্যা

আর জি কর হাসপাতালের আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি

পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৫:৫৭ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০২৪

আরজি কর হাসপাতালের মধ্যেই কর্মরত অবস্থায় শিক্ষানবিশ চিকিৎসক মৌমিতা দেবনাথকে ধর্ষণের পর খুনের ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গসহ পুরো ভারত উত্তাল হয়ে উঠেছে। এই ঘটনার বিচার চেয়ে পথে নেমেছে হাজার হাজার মানুষ। এই পরিস্থিতিতে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। সেখানে বেআইনি জমায়েতে কলকাতা পুলিশ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় কোনো ধরনের মিটিং-মিছিল-ধর্নার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সংলগ্ন এলাকায় পাঁচজনের বেশি জমায়েত করা যাবে না। শ্যামবাজার ৫ মাথার মোড়, বেলগাছিয়া রোড, জেকে মিত্র রোড ক্রসিংয়ে ১৪৪ ধারা (ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুযায়ী ১৬৩ ধারা) জারি করেছে কলকাতা পুলিশ।

স্থানীয় সময় রোববার (১৮ আগস্ট) থেকে আগামী ২৪ আগস্ট পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে। অর্থাৎ আগামী সাতদিন আর জি কর হাসপাতাল চত্বরে গণজমায়েত করা যাবে না।

গত শনিবার (১৭ আগষ্ট) রাতে কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানিয়েছেন, উল্টোডাঙ্গা ও টালা পুলিশ স্টেশনের অধীনে বেলগাছিয়া রোড, জেকে মিত্র রোড ক্রসিং, শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। আরজি কর সংলগ্ন এসব এলাকায় পাঁচজনের বেশি মানুষ জমায়েত হতে পারবেন না এবং কোনো লাঠি-সোটাও হাতে নেওয়া যাবে না।

কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এই ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই একেবারে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চত্বর।

এদিকে কলকাতা পুলিশের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফুঁসছেন সেখানকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। কলকাতা পুলিশের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেছেন, কোনো আন্দোলনকে ওরা মেনে নিতে পারছে না। কলকাতা পুলিশ তার ব্যর্থতা স্বীকার করে নিচ্ছে। পুলিশ মন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত।

অভিনেতা ও নাট্যকার নীল জানিয়েছেন, পাওয়ার ডোমিনেশন চলছে। এসবেরও প্রতিবাদ করা উচিত। দরকার পড়লে আবার মিছিল করব।

কলকাতা পুলিশের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের সব ধরনের রাজনৈতিক দলগুলোও। বিজেপি নেতা তথা কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচী বলেছেন, সাধারণ মানুষের আন্দোলনকে ভয় পাচ্ছে। গণ-আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা মমতা ব্যানার্জীর পুলিশের নেই। তার রাতের ঘুম উঠে গেছে।

এর পাশাপাশি কলকাতা যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে ডার্বি ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। পর্যাপ্ত পরিমাণে কলকাতা পুলিশ না থাকায় সেই ডার্বি ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন গেটের সামনে জড়ো হয়ে দুই ক্লাবের সমর্থকরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিতে থাকেন। এদিন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই ফুটবল ক্লাবের সমর্থকরাও এক সঙ্গে মিলে আরজি করের ঘটনায় সুবিচার চেয়ে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সামনে স্লোগান দিয়ে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদে সামিল হন।

কলকাতার প্রথম সারির এই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্ম বিরতি চলছে। সুবিচার চেয়ে পথে নেমেছে রাজনৈতিক দল থেকে নাগরিক সমাজ। হাসপাতাল চত্বরে আন্দোলনে সামিল হচ্ছে একাধিক সংগঠন। এর ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে রোগীদের অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতেই কলকাতা পুলিশ আরজি কর সংলগ্ন অঞ্চলে ১৪৪ ধারা জারি করেছে বলে জানানো হয়।

ডিডি/টিটিএন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।