প্রস্তাবিত নতুন রাজধানীতে ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৫৬ এএম, ১৮ আগস্ট ২০২৪
ছবি: সংগৃহীত

প্রস্তাবিত নতুন রাজধানী নুসানতারায় প্রথমবারের মতো স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছে ইন্দোনেশিয়া। এর আগে নুসানতারায় প্রথমবারের মতো মন্ত্রিসভার বৈঠক করেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো। মূলত প্রায় ৩৩ বিলিয়ন ডলারের মেগা প্রজেক্টের ব্যাপারে বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করতেই সেখানে নানাবিধ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

ডাচ শাসন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানি দখলদারিত্বের পর ১৯৪৫ সালে স্বাধীনতার ঘোষণা দেয় ইন্দোনেশিয়া। পরিকল্পনা ছিল ৭৯তম স্বাধীনতা দিবসেই নতুন রাজধানী আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।

কিন্তু বোর্নিও দ্বীপের এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ এখনও শেষ না হওয়া এবং তহবিল সংক্রান্ত সমস্যার কারণে নতুন রাজধানীর উদ্বোধন করা সম্ভব হয়নি।

কয়েক বছর আগে জাকার্তা থেকে নুসানতারায় রাজধানীয় সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু এক্ষেত্রেও রয়েছে নানা ধরনের সমস্যা। বিশেষ করে প্রস্তাবিত নতুন রাজধানীতে কনস্ট্রাকশনের কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। তাছাড়া বিদেশি বিনিয়োগেরও অভাব রয়েছে।

২০২২ সালের শুরুর দিকে বোর্নিও দ্বীপের পূর্ব প্রান্তের নুসানতারা শহরকে নতুন রাজধানী হিসেবে বেছে নেয় ইন্দোনেশিয়া। এটি দেশটির ইস্ট কালিমানতান প্রদেশে অবস্থিত। সে সময় জাকার্তা থেকে বোর্নিও দ্বীপে রাজধানী স্থানান্তর করার বিষয়ে দেশটির হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে একটি বিল পাস হয়।

ইন্দোনেশিয়ার সমগ্র দ্বীপপুঞ্জের নৃ-তাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীকে বোঝাতে নুসানতারা নামকরণ করা হয়। প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো এ নামটি প্রস্তাব করেন।

জনাকীর্ণ, দূষিত এবং ধীরে ধীরে সাগরে তলিয়ে যাওয়া রাজধানী জাকার্তাবাসীকে মুক্তি দিতেই ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন জোকো উইদোদো।

ইস্ট কালিমানতান প্রদেশের নুসানতারা নামের এই নতুন রাজধানী জাকার্তা থেকে উত্তর-পূর্বে দুই হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালনা, ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি এবং বিভিন্ন সেবামূলক কাজ পরিচালনার মূল কেন্দ্র জাকার্তা। তবে ইন্দোনেশিয়ার ৩৪টি প্রদেশের সমতুল্য নুসানতারার একটি প্রাদেশিক পর্যায়ের প্রশাসনও থাকবে বলে জানা গেছে।

রাজধানী পরিবর্তনের এই উচ্চাকাঙ্খী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ইন্দোনেশিয়া সরকারকে ৪৬৬ ট্রিলিয়ন রুপিয়া (প্রায় ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) খরচ করতে হবে। যদিও জাকার্তায় এক ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণেই বছরে একশ ট্রিলিয়ন রুপিয়া খরচ হয়ে যায় দেশটির। সরকারি তহবিল থেকেই ব্যয় হয় এই অর্থ।

জানা গেছে, যানজটের কারণে বেহাল অবস্থা বর্তমান রাজধানী জাকার্তার। তবে রাজধানী সরিয়ে নেওয়ার পেছনে আরও নানাবিধ কারণ রয়েছে। প্রায় অর্ধেক জাকার্তার বর্তমান অবস্থান সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে। সেখানকার বহু মানুষ জলাভূমিতে বসবাস করছেন। জাকার্তা নগরীর বেশ কিছু এলাকা ২৫ সেন্টিমিটারের বেশি তলিয়ে যায় প্রতিবছর। মূলত জাকার্তা শহরটি জাভা সাগর পরিবেষ্টিত এবং এটির মধ্য দিয়ে ১৩টি নদী বয়ে গেছে।

এর আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে জোকো উইদোদো বলেন, নতুন রাজধানী দেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক অধ্যায়। নুসানতারা একটি ক্যানভাস, যার ওপর আমরা ভবিষ্যত খোদাই করতে পারি। প্রতিটি দেশে একদম শূন্য থেকে একটি নতুন রাজধানী নির্মাণের সুযোগ বা ক্ষমতা নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

টিটিএন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।